পটুয়াখালী সদর প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীতে একটি সমবায় সমিতির ম্যানেজার কর্তৃক বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কমিটির নেতৃবৃন্দ। রবিবার রাতে পটুয়াখালী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মোঃ আল-আমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওই সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাধারন সম্পাদক মোঃ আব্বাস মিয়াসহ ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যরা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সমিতির সভাপতি মোঃ আল-আমিন তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সমিতির ডিলারসীপ ব্যবসা দেখভাল করা জন্য নিয়োজিত মার্কেটিং ম্যানেজার মো. কাওসার বিভিন্ন সময় হিসাবে গড়মিল করে অন্তত ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। যা গত মার্চ মাসে সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়।
এরপর সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিষদের একটি বৈঠক করা হয়। যেখানে সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিষদ, সমিতির অন্যান্য কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং আত্মসাৎকারী মোঃ কাওসারও উপস্থিত ছিলেন। সভায় কাওসার সমিতির টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। সভায় উক্ত টাকা ৩ কিস্তিতে ফেরৎ দিবেন বলে কথা দিয়ে সমিতির কাছে ৩ টি চেক দেন। চলতি বছরের ৩ মে প্রথম কিস্তির টাকা দেয়ার কথা থাকলেও সে টাকা না দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন।
আত্মসাতের টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন কাওসার। এর ধারাবাহিকতায় সমবায় অফিস, থানা ও আদালতে সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দায়ের করা শুরু করেন কাওসার। যা সমবায় অফিস, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়।
এ ঘটনায় সভাপতি উক্ত সমিতির তিন হাজার সদস্যেদের গচ্ছিত টাকা আদায়ের লক্ষ্যে গত ১৯ জুলাই কাওসারের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। পরে ২৯ আগষ্ট করা হয় চেক ডিজঅনারের মামলা। সমবায় অফিস, থানা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে সুবিধা করতে না পারায় কাওসারের বিরুদ্ধে সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে তার ব্যবহৃত ০১৯৩৮৫৪৫৩৮৪ থেকে সভাপতির ব্যবহৃত ০১৭১২২৩৫৫৯৩ নাম্বার মোবাইলে একটি ম্যাসেজ পাঠায়। যাতে উল্লেখ করা হয় যে, ভাই টাকার চাইয়া জীবনের মূল্য অনেক বেশি কতাটা মাথায় রাইখেন, আপনি না বাচলে টাকা দিয়ে কি হবে? এত দৌরাদৌরি কইরেন না। টাকা পাইতে পারেন কিন্তু ঘর, বাড়ি, ছেলে, বৌ পুড়ে ছাই হবে। এর প্রতিকার চাইতেই সাংবাদিক সম্মেলণ করেন মোঃ আল আমিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, সমিতির পক্ষ থেকে ০৪ জুন চেক ৩ টি ডিজঅনার করতে ব্যাংকে গেলে কর্তৃপক্ষ জানায় যে, কাওসার ০১ জুন মির্জাগঞ্জ থানায় চেকের অনুকূলে একটি জিডি করেছেন। যার নং ২৯। জিডিতে তিনি চেক বই হারানোর কথা উল্লেখ করেন। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করতে বেড়িয়ে আসে সমিতির টাকা আত্মসাতের টাকা না দিতে এ জিডির আশ্রয় নেন কাওসার। জিডি করে সুবিধা করতে না পেরে ১৮ জুন পটুয়াখালী ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সমিতির সভাপতির নামে একটি ৭ ধারা মামলা করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, তার বাবার ঋণের জামিন হিসেবে কাওসার সমিতির কাছে চেক জমা রাখেন।
এদিকে কাওসারের বাবা মোঃ নাসির সিকদার মির্জাগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, জনৈক ফিরোজ বেপারীর ঋণের জামিন হিসেবে তার ছেলের চেক জমা রাখেন সমিতির কাছে। এখানে দুটি মামলায় দুই ধরনের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। এর পর কাওসার পটুয়াখালী জেলা সমবায় কর্মকর্তার নিকট আরও একটি অভিযোগ করেন। সমবায় কর্মকর্তার তদন্তেও উঠে আসে কাওসারের ভ‚য়া আবেদনের বিষয় বস্তু।
এর প্রতিকার চাইতেই সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলণ করেন মোঃ আল আমিন।
মো:ইউসুফ/ইবিটাইমস