এই আক্রমণ ইরানের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত, ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী বললো চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ শুক্রবার (১৩ জুন) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান ইসরায়েল ইরানের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন। এই আঘাতের ফলাফল গভীর ও সুদূরপ্রসারী হবে বলে উদ্বেগও জানিয়েছেন তিনি।
লিন জিয়ান আরও বলেন, “ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর আঘাত হানা হয়েছে এবং চীন এই হামলার বিরোধী। কারণ
এ ধরনের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে এবং কেউই চায়না যে ওই অঞ্চলে আকস্মিকাবে সংঘাতের উল্লম্ফন ঘটুক।”
তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে সচেষ্ট হওয়র আহ্বান জানাচ্ছে চীন। উত্তেজনা হ্রাসে যে কোনো গঠনমূলক ভূমিকা পালনের জন্য চীন প্রস্তুত আছে।”
উল্লেখ্য যে,শুক্রবার ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে ইরানের আট শহরে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। হামলায় নিহত হয়েছেন দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান জেনারেল হোসাইন সালামি, খতম আল আনবিয়া হেডকোয়ার্টার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল গোলাম আলী রশীদ, আইআরজিএসের বিমানবাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার আমির আলী হাজিজাদেহসহ বেশ কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কমান্ডার ও সামরিক কর্মকর্তা।
এছাড়াও প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের দুই পরমাণু বিজ্ঞানীয় ফেরেয়দুন আব্বাসি এবং মোহাম্মদ মাহদি তেহরাঞ্চি। ফেরেয়দুন আব্বাসি ইরানের পরমাণু প্রকল্পের প্রধান ছিলেন।
এদের পাশপাশি নিহত হয়েছেন ৭৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং আহত হয়েছেন আরও ৩২৯ জন। বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, ইরানের ৮ শহরের অন্তত ১০০টি স্থাপনায় আঘাত করেছে আইএএফ। এসব স্থাপনার সবগুলোই ইরানের পরমাণু প্রকল্প এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
এখানে আরও উল্লেখ্য যে, চীন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক মিত্রদের মধ্যে অন্যতম। ইরানের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জারি করা নিষেধজ্ঞাগুলোর সমালোচনা বহুবার করেছে বেইজিং।
প্রসঙ্গত মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল ইরানের। মূলত চীনের আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক শীতলতার বরফ গলে।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর