অপরিপক্ক লিচুতে সয়লাব লালমোহনের বাজার! দামও চড়া

জাহিদ দুলাল, ভোলা দক্ষিণ : ভোলার লালমোহনে সময়ের আগেই বাজার ভরে গেছে অপরিপক্ক লিচুতে। লিচুগুলোতে চোখ পরতেই বুঝা যায় এখনো অপরিপক্ক। তবুও অতি মুনাফার আশায় আগেভাগেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব লিচু আনা হয় লালমোহনে। সুস্বাদু ও রসালো এই লিচু পরিপক্ক হয়ে বাজারে আসতে এখনো সময় লাগবে অন্তত ৭ থেকে ১০ দিন। যার মধ্যে থাকবে আগাম জাতের মাদ্রাজি ও বোম্বাই লিচু। এর ঠিক কিছুদিন পরই বাজারে মিলবে চায়না থ্রি ও বেদেনা জাতের লিচু।
সরেজমিনে লালমোহন পৌরশহরের বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ফল বিক্রেতারা অস্থায়ী দোকানে আঁটি জাতের লিচু বিক্রি করছেন। পৌরশহরের সর্বত্রই এখন কমবেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু। বিক্রেতারা রাজশাহী, দিনাজপুর ও যশোর থেকে এসব লিচু আনেন। পুরোপুরি না পাকলেও এসব লিচুর দাম বেশ চড়া। বাজারে প্রতি পিস লিচু বর্তমানে সাড়ে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এই লিচু কেনার জন্যও অনেকের স্বাদ থাকলেও সাধ্য নেই। তাই অধিকাংশ মানুষই ৫০ পিসের বেশি লিচু কিনতে পারছেন না।
এমনই এক ক্রেতা অটোরিকশা চালক মো. নূর হোসেন বলেন, অটোরিকশা চালিয়ে কোনোভাবে সংসার চালাই।  বাচ্চারা বলেছে লিচু খাবে। মৌসুমের প্রথমদিকের লিচু, দেখতেই বুঝা যাচ্ছে এখনো ঠিকমতো পাকেনি। তবুও বাচ্চাদের আবদার মেটাতে ৫০ পিস লিচু কিনেছি। অধিকাংশ লিচুই খুব ছোট, এর প্রতি পিসের দাম পড়েছে ৩ টাকা করে।
এদিকে, পৌরশহরের ভ্রাম্যমাণ মৌসুমি ফল বিক্রেতা মো. জুয়েল জানান, বিগত ৫ বছর ধরে আম, লিচু এবং পেয়ারাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রি করছি। এবার একটু আগেভাগেই বিভিন্ন জেলা থেকে লিচু আসতে শুরু করেছে। তাই আমিও আগেই আড়ৎ থেকে লিচু এনে বিক্রি করছি। প্রতিদিন ভ্যানগাড়িতে করে পৌরশহরের বিভিন্নস্থানে ঘুরে ঘুরে লিচু বিক্রি করছি। বর্তমানে অধিকাংশ লিচুই আঁটি জাতের। এই লিচুই প্রতি পিস আড়ৎ থেকে আমাদের কেনা পড়ে ২৭০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা। আর ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি প্রতি পিস ৩ টাকা থেকে সাড়ে ৩ টাকায়। কিছুটা আগেভাগে বাজারে লিচু আসায় চাহিদাও অনেকটা বেশি। যার ফলে প্রতিদিন আমিই ৫ হাজার পিসের মতো লিচু বিক্রি করতে পারি। তবে আরও ভালো জাতে লিচু বাজারে আসতে এখনো ১০ দিনের মতো সময় লাগবে। ওই লিচু বাজারে আসলে দাম আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু হাসনাইন বলেন, বাজারে বর্তমানে যেসব লিচু দেখা যাচ্ছে তার অধিকাংশই অপরিপক্ক। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় আগেভাগেই এসব লিচু বিক্রি শুরু করেছেন। এসব লিচুতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা অনেক। কারণ বিক্রির জন্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এই লিচুতে প্রায় সময় ক্ষতিকর বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। তাই ক্রেতারা একটু ধৈর্য ধরে আগামী ১০ দিন পরে লিচু কিনলে ভালো হবে।
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »