পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন – প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর

ইউরোপ ডেস্কঃ সোমবার (২১ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

এছাড়াও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ছিলেন ৭৪১ সালের পর প্রথম নন-ইউরোপিয়ান পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরির মৃত্যুর পর রোমে আর কোনো নন-ইউরোপিয় পোপ আসেননি। তিনি ক্যাথলিক গির্জায় সংস্কার কখনো বন্ধ করেননি। তারপরও তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।

প্রায় ৬০০ বছরের মধ্যে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়া প্রথম পোপ ছিলেন ফ্রান্সিসের পূর্বসূরি ষোড়শ বেঞ্জামিন। প্রায় এক দশক তারা একসঙ্গে ভ্যাটিকান গার্ডেনে ছিলেন। ষোড়শ বেঞ্জামিনের পর যখন ২০১৩ সালে পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস, তখন তার বয়স ছিল সত্তরের কোটায়।

ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল এক বিবৃতিতে জানান, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে রোমের বিশপ ফ্রান্সিস ঈশ্বরের কাছে ফিরে গেছেন। তাঁর পুরো জীবন ছিল প্রভু ও চার্চের সেবায় উৎসর্গিত। পোপ ফ্রান্সিস দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন। তরুণ বয়সে তাঁর একটি ফুসফুস আংশিক অপসারণ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য যে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁকে রোমের গেমেলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু হয়ে পরে তা ডাবল নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। হাসপাতালটিতে তিনি ৩৮ দিন ছিলেন- যা তাঁর ১২ বছরের পোপজীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ চিকিৎসা ছিল।

প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ,আর্জেন্টিনার বংশোদ্ভূত হোর্হে মারিও বারগোলিও পোপ হিসেবে নির্বাচিত হন। তার প্রথম বক্তব্য ছিল সাধারণ এক বুয়োনাসেরা (ইতালিয়ান ভাষায় শুভ সন্ধ্যা)- যা তার নম্র ও মানবিক রূপের ইঙ্গিত দিয়েছিল।

তিনি গরিবদের পাশে দাঁড়ানো, শরণার্থীদের আলিঙ্গন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমে ভিন্নধর্মী এক পোপ হিসেবে পরিচিত হন। তবে তাঁর খোলামেলা বক্তব্য, এলজিবিটিকিউ+ক্যাথলিকদের প্রতি সহানুভূতি, পুঁজিবাদের সমালোচনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের কারণে অনেক রক্ষণশীল অসন্তুষ্ট ছিলেন।

২০১৮ সালে চিলির এক পুরোহিতের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন, যা তার পোপজীবনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। করোনাভাইরাস মহামারির সময় পুরো বিশ্ব যখন লকডাউনে, তখন ফাঁকা সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই একই নৌকায় আছি- দুর্বল ও বিভ্রান্ত। আমাদের একে অপরকে সহানুভূতি দিয়ে পাশে থাকতে হবে।

পোপ ফ্রান্সিস তাঁর সরলতা, সহানুভূতি এবং গঠনমূলক চিন্তাভাবনার জন্য বিশ্বজুড়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ক্যাথলিক চার্চসহ বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূস পোপ ফ্রান্সিস এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুর সংবাদ সাথে সাথেই প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে বলেণজানান। তিনি আরও বলেন,পোপ ফ্রান্সিস এর মৃত্যুর সংবাদে প্রধান উপদেষ্টা শোকাহত হয়েছেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »