ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ লাভ জনক হওয়ায় ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। অক্টোবর মাস থেকে মাল্টার কৃষকরা উত্তোলন করে বাজারজাত করেন। এখানকার মাঠ ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ব্যাপক ফলনের পাশাপাশি চাহিদা এবং বাজারমূল্য ভাল হওয়ায় অনেক উদ্যোক্তা মাল্টা চাষে এগিয়ে আসছেন। এই ফসল কৃষি অর্থর্নীতি সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখাসহ কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি করছে। মাল্টা চাষ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
২০১৫ সালে ঝালকাঠি জেলায় মাল্টা চাষ ছিটেফোটা আকারে শুরু হয় এবং ২০১৭ সাল থেকে বানিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ সম্প্রসারণ হতে শুরু করে। ২০১৮ সালের পর থেকে মাল্টা জেলার ৪টি উপজেলার উচু জায়গায় ব্যাপক হারে সম্প্রসারিত হয়েছে। একবার বাগান করার পরে ৫ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত পূর্ণমাত্রায় ফলন পাওয়া যায় এবং পরবতীতে এই গাছগুলিতে ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটে ও ফল ছোট হয়। কৃষকরা এই গাছ তুলে ফেলে সেখানে ধারবাহিকতা বজায় রেখে নতুন করে গাছের চারা রোপন করে। রাসায়নিক সারের ব্যাবহার এবং কিটনাশক ছিটাতে হয় পরিমিত মাত্রায় যে কারনে উৎপাদনের খরচও কম ।
অন্যদিকে ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাজারজাতে ঝামেলা কম এবং দামও ভাল। অল্প পুজিতে অধিক লাভজনক হওয়ায় মাল্টা চাষে ঝুকছে এলাকার যুবসমাজ। বর্তমানে জেলার চার উপজেলায় জেলায় বর্তর্মানে ১০৭ হেক্টর জমিতে ছোট বড় ১২’শ মাল্টা বাগান রয়েছে। জেলায় মাল্টার উৎপাদন ৬৫০ মেট্রিক টন এবং উৎপাদন গড় হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টন। ঝালকাঠি জেলায় প্রধানত বারি মাল্টা-১ জাতের চাষ হয়। বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টার চাষে ভাগ্য বদলেছে জেলার অনেক কৃষকের। বর্তমানে বাগান থেকে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থকে ৭০ টাকা কেজি দরে।
কোন কোন কৃষক ফলন পরিপুষ্ট না হওয়ার পূর্বেই প্রথম দিকে বাজার ধরার জন্য কাচা মাল্টা উত্তোলন করে বিক্রি করে যেকারনে সেই মাল্টার স্বাধ টক হয় এবং পুরিপুষ্ট হওয়া এই জাতের মাল্টা অত্যান্ত সুস্বাধু ও মিষ্টি হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। মাল্টা বাগানকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক’শ মানুষের। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নিয়মিত বাগান পরিদর্শন এবং নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় বর্তর্মানে ১০৭ হেক্টর জমিতে মাল্টা আবাদ হচ্ছে। তারা উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনিয়ে প্রশিক্ষন ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এ থেকে মোট ৬’শ ৫০ মেট্রিক টন মাল্টার উৎপাদনের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই চাষ এখন আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
বাধন রায়/ইবিটাইমস