ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠোর আশ্রয় বিষয়ক নীতি ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস (হল্যান্ড)
ইউরোপ ডেস্কঃ সম্প্রতি দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকার ঘোষণা করেছে যে,তারা অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে কঠোর সীমান্ত চেক, দেশে সমস্যা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তি হিসেবে ‘টিট ফর ট্যাট’ নীতি, পারিবারিক পুনর্মিলনের উপর বিধিনিষেধ এবং অনিয়মিতদের জোরপূর্বক প্রত্যাবর্তনের উপর গুরুত্ব দিয়ে একটি জরুরি আইন ও অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন করবে৷
তাছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ বলেছেন, দেশটি ইইউর আশ্রয় পদ্ধতি এবং অভিবাসন নীতি নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনকে প্রশ্ন করবে৷.ডাচ সরকার এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশটির কট্টর ডান নেতা গির্ট ওয়াইল্ডার্সের অভিবাসন বিরোধী ফ্রিডম পার্টির কর্মসূচিকে যুক্ত করেছে৷ এই দলটি গত নির্বাচনে অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বরে ডাচ পার্লামেন্টের প্রায় এক চতুর্থাংশ আসন জিতেছে৷
ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অভিবাসন বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়,নেদারল্যান্ডসের অতি ডান দলটি থেকে বর্তমান সরকারের অভিবাসন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী মার্জোলিন ফ্যাবারকে নিযুক্ত করা হয়েছে৷
মার্জোলিন ফ্যাবার এক ভিডিও বার্তায় বলছেন, ‘‘আমি এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে কঠোর আশ্রয় নীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি৷’’
বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃষ্ট বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সমাধানের লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘পরিকল্পনাটি হচ্ছে ‘আইনগতভাবে একটি আশ্রয় সংকট ঘোষণা করা৷ যা আমাকে সংকট মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে অনুমতি দেবে৷ এটির মাধ্যমে পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষা না করেই জরুরি ক্ষেত্রে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে৷’’
ডাচ সরকারের ঘোষিত নীতিতে বলা হয়েছে, “নেদারল্যান্ডসকে ইইউর কঠোরতম আশ্রয় আইন থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সদস্য রাষ্ট্রে হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত৷’’ ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ বলেছেন, সরকার ইউরোপীয় কমিশনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় ও অভিবাসন নীতিগুলো সংশোধনের জন্য বলবে৷ এই অনুরোধটি এই সপ্তাহে ব্রাসেলসে পাঠানো হবে৷
তিনি সরকারের ঘোষিত জরুরি পদক্ষেপের পক্ষে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দেশে অভিবাসীদের বৃহৎ প্রবাহ সহ্য করতে পারি না৷ সাধারণ মানুষ একটি আশ্রয় সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে৷’’ অভিবাসন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, তিনি অনির্দিষ্ট সংখ্যক অভিবাসন বন্ধ করতে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করা, পারিবারিক পুনর্মিলন সীমিত করতে চান৷ এছাড়া অপরাধী আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ডিপোর্ট ত্বরান্বিত করা হবে৷
ডাচ বিরোধী দলগুলো থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ইতিমধ্যে মার্জোলিন ফ্যাবারের এই অভিবাসন পরিকল্পনাকে ‘গণতন্ত্র বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেছে৷ শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত ডাচ কাউন্সিল বৃহস্পতিবার বলেছে, তারা ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ কারণ ঘোষিত জরুরি আইনের ফলে ‘শরণার্থীদের উচ্চমূল্য দিতে হবে’৷
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস