ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে পড়ে আছে সারি সারি অন্তত ছোট-বড় ২৫টির মতো গাছ। দুইমাসের মতো উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে গাছ পড়ে থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় তরুণ-যুবকদের খেলাধুলায় বেঘাত ঘটছে। মাঠে খেলতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থীসহ তরুণ-যুবকরা স্মার্টফোনের অপব্যবহারে ও মাদকে আসক্ত হচ্ছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
জানা গেছে, লালমোহন উপজেলার রায়চাঁদ বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজের কারণে লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের অংশে থাকা সড়কের পাশের গাছগুলো উপড়ে ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। প্রায় দুই মাস আগে ওই স্থানের ছোট-বড় অন্তত ২৫টি চাম্বল গাছ উপড়ে মাঠের মধ্যে ফেলে রাখলেও তা সরাতে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বুড়িরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ঠেলাঠেলিতে গাছগুলো পড়ে রয়েছে মাঠের মধ্যেই।
মাঠের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে গাছ থাকায় খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে উল্লেখ করে স্থানীয় যুবক মো. সোহায়েব বলেন, লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকার শিক্ষার্থীসহ তরুণ-যুবকদের খেলাধুলার একমাত্র ভরসাস্থল এই মাঠটি। তবে কয়েক মাস হয়েছে মাঠের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে বেশ কিছু গাছ পড়ে রয়েছে। যার জন্য খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই এলাকার ক্রীড়াপ্রেমি শিক্ষার্থীসহ তরুণ-যুবকরা। মাঠে খেলতে না পেরে অনেকে স্মার্টফোনের অপব্যবহারে ও মাদকে আসক্ত হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠ থেকে গাছগুলো সরিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ তরুণ-যুবকদের খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়া দাবি জানাচ্ছি।
গাছ সরানোর ব্যাপারে লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. রেখা ফেরদাউস জানান, গাছগুলো অনেক আগে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রোপণ করা হয়েছে। মূলত ওই জমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এখন সড়ক উন্নয়নের কাজ চলায় গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে গাছ হওয়ায় আমরা তা সরাতে পারছি না। দ্রুত সময়ের মধ্যে গাছগুলো মাঠ থেকে সরাতে আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি।
এ ব্যাপারে বুড়িরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি কিছুদিন হলো এই বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি গাছগুলো আমাদেরই। কিভাবে এই গাছগুলো সরানো যায় তার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি বলেছেন একটি রেজুলেশন করে গাছগুলো মাঠ থেকে সরিয়ে নিতে। ওই নির্দেশনা পেয়ে আমরা ইতোমধ্যে রেজুলেশন তৈরির কাজ শুরু করেছি। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মূলত একটু দেরি হচ্ছে। তবে বিদ্যালয় খোলার কিছুদিনের মধ্যেই আমরা মাঠ থেকে গাছগুলো সরিয়ে নেবো।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, খোঁজ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের মাঠ থেকে গাছগুলো সরানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলবো। যাতে করে শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় তরুণ-যুবকরা ওই মাঠে নির্বিঘ্নে খেলাধুলা করতে পারে।
জাহিদুল ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস