মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিনঃ সংসদীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনীতির মাছ গরম হচ্ছে ঠিক তখনই এক শ্রেনীর সুবিধাভুগী ব্যবসায়ীরা তাদের মুনাফা মজবুত করার লক্ষে কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করেই চলছে। মনে হচ্ছে ব্যবসায়ীরা দেশে এখন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিটি মানুষের অন্য, বস্ত্র ও বাসস্থান নৈতিক অধিকার। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষ তাদের চহিদা ও সামর্থ অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন উৎপাদনকারী বা আমদানীকারক তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী যখন তখন কোন প্রকার কারন ছাড়াই পন্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।
ভারত কোন কারন ছাড়া তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশে আমদানীকৃত পণ্য রপ্তানী বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশে কোন প্রকার সংকট না থাকা সত্বেও আমদানী কারক ও এক শ্রেনীর মওজুদ উক্ত পণ্যের দাম তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বাড়িয়ে দেয়। কেজিতে ২৫-৩০ বা ৯০-১০০টাকা পর্যন্তও দাম বৃদ্ধি করে। এই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সরকার সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির তোয়াক্কা করেন না। বড় বড় কিছু ব্যবসায়ীরা সিন্টিকেট করে তাদেরে ইচ্ছামত পন্যের মুল্য বৃদ্ধি করে বাজারে ছেড়ে দেয়। যেহেতু বাঙ্গালীরা অযৌতিকভাবে পন্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পুলিশের লাঠি পেটার ভয়ে কোন প্রকার আন্দোলন করেনা। তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বর্তমানে সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা তেল, পেয়াজ, কাঁচামরিচ, আলু, চিনি, মুরগী, ডিম এর দাম তাদের উচ্ছা অনুযায়ী হ্রাস বৃদ্ধি করে।
বিগত ২/৩ মাস পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যসহ অনেক ব্যবহার্য পণ্যের দাম প্রতিদিন বিরামহীনভাবে বেড়েই চলছে। ফলে সাধারন মানুষ পন্য ক্রয় করতে গিয়ে বিপাকে পরতে হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে পন্যে মূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজন হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে সাথে যৌক্তিক কারন দেখিয়ে গনশুনানী করে প্রচার মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করেন। ফলে ক্রেতা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে অবহিত হয় এবং তার আয়ের সাথে সামঞ্জশ্য করে বাজেট করে পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন আমাদের এই বাংলাদেশে সম্প্রতি গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে গনশুনানী হয়। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কোন যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি এবং সাধারন জনগনের সমর্থন পায়নি। তাই তারা গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেননি।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ভোক্তা অধিকার সংস্থা কি জানেন কেন এই দাম বাড়িয়েছেন ? হয়তবা জানেন হয়তবা জানেন না। প্রায় ঔষধ কিনতে গেলে জানা যায় ঔষধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কসমেটিক কিনতে গেলে জানা যায় কসমেটিক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানীকৃত তেল ডাল সহ অনেক ভোগ্য পন্য এভাবে কখন, কেন, কি কারনে বৃদ্ধি পায় এবং দেশীয় বিভিন্ন কোম্পানী তাদের উৎপাদিত পণ্য কোন কারণ ছাড়াই তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি করে জনগনকে বৃভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়? যেমন রমজান মাস আসলে সোলা, বুট খেজুর সহ কিছু নিত্যপ্রয়াজনীয় পণ্যের দাম কোন প্রকার কারণ ছাড়াই বৃদ্ধি পায়। আমাদানী কারক ও উৎপাদনকারী ব্যক্তিরা এতই প্রভাবশালী যে সরকারে নির্দেশনা ও তারা মানতে চাননা। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শতর্ক করে দিয়েছেন যে আসন্ন রমজান মাসে কোন পন্যের দাম যেন বৃদ্ধি না করে।
সৌদি আরবের মত বাংলাদেশে যেখানে পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারের সুবিধার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পন্যের দাম যেখানে কামনো উচিৎ, সেখানে আমাদের এই বাংলাদেশে কিছু স্বার্থানেশী মহল অতি লাভের আসায় অন্যায়ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পন্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।
গনশুনানী না করে প্রচার মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে যৌক্তিক কারণ ছাড়া ভোগ্য পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করা যায় কি ? যদি তা অন্যায় হয় তাহলে এ ব্যাপারে কোন কোম্পানী তার ইচ্ছা অনুযায়ী পন্যের মূল্য হঠাৎ করে বৃদ্ধি করলে কেন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এভাবে হঠাৎ করে কোন পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করলে উক্ত কোম্পানীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিলে হয়তবা কোন কোম্পানী তার ইচ্ছা অনুযায়ী পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করবে না।
মিডিয়া কর্মী/ইবিটাইমস