স্লোভেনিয়া সীমান্তে ইতালির ‘অভিবাসী বিরোধী’ ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি।

ইবিটাইমস ডেস্ক: অস্ট্রিয়ার প্রতিবেশী স্লোভেনিয়া সীমান্তে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ নামে পরিচিত একটি নজরদারি সরঞ্জাম স্থাপন করতে চলেছে ইতালি। ইউরোপের অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বৈধ কোন কাগজ পত্র নেই এমন অভিবাসীদের সীমান্তেই আটকে দিতে চায় ইতালি৷ ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ নামে পরিচিত একটি নজরদারি সরঞ্জাম স্লোভেনিয়া সীমান্তে স্থাপন করতে চলেছে ইতালি। এই ডিভাইসগুলো তথাকথিত বলকান রুটের এই অংশে অনিয়মিত, অনথিভুক্ত অভিবাসী এবং চোরাচালানকারীদের চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ইতালি কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালে ফ্রিউলি ভেনেৎসিয়া জুলিয়ার আঞ্চলিক সরকার মোট ৬৫টি ক্যামেরা কিনেছিল৷ এগুলো ত্রিয়েস্তের স্থানীয় পুলিশকে দেয়া হবে৷ পরে সেগুলি অন্যান্য সুরক্ষা বাহিনীতে বিতরণ করা হবে৷

৫৯টি আঞ্চলিক রাজধানীতে (২০টি পুলিশ সদর দফতরে, ১০টি ক্যারাবিনিয়ারির প্রাদেশিক কমান্ডে, ১০টি ফিনানশিয়াল পুলিশে এবং বাকিগুলি স্থানীয় পুলিশের কাছে) দেয়া হবে। বাকি ১৫টির কয়েকটি গোরিৎসিয়া পুলিশের সদর দপ্তরকে দেয়া হবে।

এই ক্যামেরা শুধুমাত্র অনিয়মিত অভিবাসীদের আটকানো নয় বরঞ্চ এই সরঞ্জামগুলি অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধ করতে এবং অনথিভুক্ত অভিবাসীদের পুনরায় স্লোভেনিয়ায় ফেরত পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হবে৷ সীমান্তবর্তী দেশ থেকে কাগজপত্র ছাড়া ইতালিতে অভিবাসীরা প্রবেশ করেছেন, এমন প্রমাণ পেলেই স্লোভেনিয়ায় পাঠানো হবে। ডিভাইসগুলি সম্ভবত সীমান্তের বনাঞ্চলে ব্যবহার করা হবে না, কারণ সেগুলি সহজে নানাদিকে সরানো যেতে পারে এবং এগুলির ব্যাটারি সৌর-চালিত৷ তবে অন্যান্য পুলিশি কাজের জন্য এগুলি ব্যবহার করা হবে।.ত্রিয়েস্তের পুলিশ কমিশনার পিয়েত্রো ওস্তুনি বলেছেন, ক্যামেরাগুলি নির্দিষ্ট ফ্লাইং স্কোয়াডে দেয়া হতে পারে৷ অফিস বা থানায় চুরি, মাদকপাচার সহ সীমান্তের একাধিক অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যেও এগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। বেআইনিভাবে আবর্জনা ফেলা এবং ভাঙচুরের মতো অপরাধ আটকাতেও এই ক্যামেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফ্রুলি ভেনেৎসিয়া জুলিয়ার আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট মাসিমিলিয়ানো ফেদরিগা ক্যামেরার বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, “অনথিভুক্ত অভিবাসন এবং চোরাকারবারীদের রুটগুলিকে আটকানো গুরুত্বপূর্ণ৷ মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং তার থেকে অর্থ উপার্জনকারীদের বিরুদ্ধে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ এটি।” গোরিৎসিয়ার পুলিশ কমিশনার পাওলো গ্রুপৎজো ক্যামেরা বসানোয় সম্মত হলেও উল্লেখ করেছেন যে এই সরঞ্জামের মাধ্যমে অভিবাসীদের পারাপার নথিভুক্ত করা গেলেও তারা যদি আইনিভাবে আশ্রয় চান, তবে বর্তমান অবস্থা থেকে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন আদৌ হবে না। আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাউন্সিলর পিয়েরপাওলো রবার্তি, এই উদ্যোগের একজন কট্টর সমর্থক৷ তিনি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন৷

শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের সমর্থনকারী একটি এনজিও, ইটালিয়ান কনসোর্টিয়াম অফ সলিডারিটি (আইসিএস) বলছে, ক্যামেরার বিষয়টি সন্দেহজনক৷ একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘অভিবাসীরা প্রায়ই গাড়ি বা ভ্যানে সীমান্ত এলাকায় আসেন৷ তারা মোটেও জঙ্গলের পথে পাড়ি দেন না৷ তাই শুধু পাচারকারীদের আটকানো হবে এমন কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷’’

তথ্যসূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস ইউরোপ

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/আরএস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »