যাত্রী সংকটে পিছু হটলো লঞ্চ কর্তৃপক্ষ

সরকার নির্ধারিত আগের ভাড়ার থেকেও কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ জালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে লঞ্চের ভাড়া বাড়ালেও যাত্রী সংকটের কারনে সরকার নির্ধারিত আগের ভাড়ার থেকেও কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছেন লঞ্চ মালিকরা। এ কারনে লঞ্চের যাত্রীরা স্বস্থি প্রকাশ করেছে। তবে ঈদ কোরবানী কিংবা যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চ মালিকরা যখন সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করবে তখন যাত্রীরা লঞ্চ মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পরবে বলে মনে করেন তারা। এ কারনে ঢাকা পটুয়াখালী নৌ রুটে ভাড়া পূর্ন নির্ধারনের দাবী এই রুটের যাত্রীদের।

ঢাকা-পটুয়াখালী নৌ রুটে দূরত্ব ২৫২ কিলোমিটার। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌ- চলাচল (যাপ) সংস্থা নৌ পথে ভাড়া পূর্ন নির্ধারণ করে তালিকা প্রকাশ করে। এতে ডেকের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৬৯৫ টাকা। সেই হিসেবে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া হয় ২৭৮০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ৫৫৬০ টাকা। মঙ্গলবার থেকে এই ভাড়া কার্যকর করার কথা থাকলেও যাত্রী সংকটে সেই পরিকল্পনা থেকে আপাতত পিছু হটেছে লঞ্চ মালিকরা।

বুধবার পটুয়াখালী নদী বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যে দুটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এসব লঞ্চ গুলোতে যাত্রীদের তেমন কোন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। ফলে যাত্রীদের ডেকে ডেকে লঞ্চে তোলা হয়। আর ডেক যাত্রী প্রতি ভাড়া নেয়া হয় ৫শ টাকা করে। এমন পরিস্তিতিতে লঞ্চের ভাড়া পূনঃনির্ধারনের পাশপাশি লঞ্চের সেবার মান বাড়ানোর তাগিদ দিলো যাত্রীরা।

পটুয়াখালী শহরের শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্ধা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘লঞ্চ যাত্রা একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। তবে সেটি সাধ আর সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে। বর্তমানে সরকার যে ভাড়া নির্ধারন করেছে তা দিয়ে কোন দিন কেউ লঞ্চে যাবে না। তবে যতটুক জানতে পারলাম লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ভাড়া বাড়াচ্ছে না, তারা আগের ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করবে।’

এদিকে লঞ্চে কৃর্তপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই লঞ্চে যাত্রীদের চাপ কমতে থাকে। বর্তমানে প্রতিটি লঞ্চের ২৫ শতাংস সেবন এবং ২০ শতাংশ ডেক খালি থাকছে। এর পরও টিকে থাকতে তারা সরকার নির্ধারতি পুরনো ভাড়ার থেকে কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছেন। আগে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছিল ডেকে ৪২০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিনে ১৬৮০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ছিল ৩৩৬০ টাকা। তবে বুধবার সিঙ্গেল কেবিন ১৩শ টাকা এবং ডাবল কেবিনে ২৫শ টাকা করে ভাড়া নেয়া হয়েছে।

এমভি পূবালী ১২ লঞ্চের সুপারভাইজার ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘ভাড়া বাড়ানো হলেও আমরা যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে ভাড়া কম নিচ্ছি, এর পরও আমাদের প্রতি টিপে লস হচ্ছে। যাত্রীদের চাপ এখনও অনেকটা কম, যাত্রী না বড়ালে হয়তো টিকে থাকাটা মুসকিল হয়ে যাবে। তবে আপাতত এই ভাড়ায় আমরা চলাচল করছি।’

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের টিএ শাখা কর্তৃক গত ১৬ আগষ্ট বর্ধিত ভাড়ার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে প্রতি ১শ কিলোমিটারের জন্য সর্বোচ্চ যাত্রী ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা এবং ১শ কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ২টাকা ৬০ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া জন প্রতি ভাড়া সর্বনিন্ম ৩৩ টাকা করা হয়।

আব্দুস সালাম আরিফ /ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »