নতুন আদম শুমারিতে দেশে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী

বাংলাদেশের নতুন জনসংখ্যা গণনার তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)

বাংলাদেশ ডেস্কঃ দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে,মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারি শেষ হওয়ার মাত্র এক মাসের মাথায় প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করল বিবিএস। দেশের নতুন আদম বা জনশুমারি অনুযায়ী, এই প্রথমবার পুরুষের চেয়ে বেড়েছে নারী।

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।

প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন জানান, এবারের জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ অনুযায়ী দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। যা ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১১ সালে ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন। অর্থাৎ গত ১০ বছরে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন।

দেশে মোট পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন, নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনসংখ্যা ১২ হাজার ৬২৯ জন। জনশুমারি অনুযায়ী দেশে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি।

শুমারির তথ্যানুযায়ী, দেশে জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার কমছে। এবারের শুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.২২ শতাংশ। যা ২০১১ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ১.৪৬ শতাংশ, ২০০১ সালে ছিল ১.৫৮ শতাংশ, ১৯৯১ সালে ছিল ২.০১ শতাংশ, ১৯৮১ সালে ছিল ২.৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ শুমারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে।

২০০১ সালে ছিল দেশে জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩ জন। ১৯৯১ সালে ছিল ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ জন। ১৯৮১ সালে ছিল ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন এবং ১৯৭৪ সালের প্রথম শুমারিতে দেশে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭১ জন।

উল্লেখ্য, সারাদেশে গত ১৫ জুন একযোগে শুরু হয় জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম। গত ২১ জুন জনশুমারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলায় বন্যা শুরু হওয়ায় এসব জেলায় শুমারি কার্যক্রম ২৮ জুন পর্যন্ত চলে।

এদিকে দেশের নতুন জনশুমারি অনুযায়ী দেশে বেড়েছে মুসলমানের সংখ্যা এবং কমেছে অন্যান্য ধর্মের মানুষের সংখ্যা। দেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার। আর এর মধ্যে ৯১ দশমিক ০৪ শতাংশ মানুষ মুসলমান। যা ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ৯০.৩৯ শতাংশ মানুষ মুসলমান ছিল।

বিবিএস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের সব বিভাগেই মুসলমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে প্রায় সব বিভাগেই কমছে হিন্দু, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মের জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। বর্তমান শুমারিতে হিন্দু জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ২০১১ সালে যা ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

২০২২ সালের শুমারি অনুযায়ী দেশের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০ দশমিক ৬১ শতাংশ, ২০১১ সালের যা ছিল ০ দশমিক ৬২ শতাংশ।

বর্তমান শুমারিতে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০.৩০ শতাংশ; ২০১১ সালে যা ছিল ০.৩১ শতাংশ। এ ছাড়া অন্যান্য জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০.১২ শতাংশ; যা ২০১১ সালে ছিল ০.১৪ শতাংশ।

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »