হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন করে প্লাবিত শতাধিক গ্রাম

দূর্ভোগে লাখো মানুষ, বন্যাকবলিতদের পাশে জেলা প্রশাসক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কালনী-কুশিয়ারা ও খোয়াইসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। আর এতে করে হবিগঞ্জে প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এরই মধ্যে হবিগঞ্জের চার উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। চরম দূর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মধ্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার সকালে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর-মারকুলি সড়কের নিখলির ঢালা এবং ফিরোজপুর-বদলপুর সড়কের কৈয়ারঢালায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রবল বেগে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। প্লাবিত হতে থাকে একের পর এক গ্রাম। রোববারও নতুন করে ওই এলাকায় আরো ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এর মধ্যে আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার আদর্শনগর, জয়নগর, শরীফনগর, নতুন বাড়ি, ফিরোজপুর, পাহাড়পুর, কাকাইলছেও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও মারকুলি এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার।

এছাড়াও নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলায় রোববার নতুন করে আরো অন্তত ৭০টিরও অধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নতুন করে প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলো থেকে সাধারণ মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। অনেকে আবার নিজ নিজ উদ্যোগে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যে ভাবে পানি দ্রæত গতিতে বাড়ছে এমন অবস্থায় বাড়তে থাকে আর মাত্র দুইয়েক দিনের মধ্যে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যাবে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহি উদ্দিন জানান, উপজেলার চার ইউনিয়নের অন্তত ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে উপজেলার এক হাজার মানুষ ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, গতকাল রোববার দুপুরে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। এসময় তিনি আজমিরীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে আশ্রয় গ্রহণ করা বন্যা দুর্গতদের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তিনি কাকাইলছেও বাজার পরিদর্শন করেন এবং কাকাইলছেও খাদ্য গুদামে আশ্রিত দুর্গত পরিবারগুলোর সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও পরিদর্শন কালে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোতাব্বির হোসেন কাজল/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »