নির্যাতনের শিকার কিশোর মুন্না’র সাত দিনেও সন্ধান মেলেনি

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপায় চুরির অপবাদ দিয়ে ১৪ বছরের এক কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনার পর নিখোঁজ হওয়ায় কিশোর মুন্নাকে সাত দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আর এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি হজরত আলী এখনও পলাতক রয়েছেন।

ঘটনার পর পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করলেও তাদের মধ্যে দুই জনকে জামিন দিয়েছে আদালত। তবে নির্যাতিত ওই কিশোর এখনও উদ্ধার না হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন।

গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের কিশোর মুন্না (১৪)। পরিবারের অন্য সদস্যরা ঢাকায় যাওয়ায় সাময়িক ভাবে সে মামার বাড়িতে থাকতো। তবে গত ৯ মে টাকা চুরির অপবাদ এনে মামা বাড়ির লোকজন মুন্নাকে গাছের সাথে বেঁধে তিন দিন যাবত নির্যাতন করে। আর ১১ মে মধ্যরাত থেকে মুন্নাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মুন্নাকে নির্যাতনের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে, এনিয়ে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়।

গত ১৩ মে মুন্নার মা হাসিনা বেগম বাদী হয়ে গলচিপা থানায় ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই দিনই নির্যাতিত মুন্নার মামি মমতাজ বেগম (৪৫), মামাতো বোন তানিয়া (৩০) ও প্রতিবেশী শামীম (৪০) কে গ্রেফতার করে। তবে আদালত মানবিক দিক বিবেচনা করে মমতাজ ও তানিয়াকে জামিন প্রদান করে। তবে এখন মামলার প্রধান অভিযুক্ত হজরত আলীতে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাইতো ছেলের সন্ধানে আদালত আর থানার বারান্দায় ঘুরছে নিখোঁজ মুন্নার বাবা মা।

মুন্নার বাবা শাহজাহান কমান্ডার বলেন, ‘আমার পোলাডারে গাছের লগে বাইন্দা দুই তিন জনে মিল্লা মারছে, আমি মোবাইলে দেখছি সজ্য করতে পারিনাই। এহন পোলাডার মুকটাও দেখতে পারিনা। কই আছে কি করছে আল্লায় জানে। আমার পোলাডারে আমমেরা ফেরত দেন। পুলিশের কাছে গেছি হেরাও কিছু কইতে পারে না। ’

নিখোঁজ কিশোরের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে বাইচ্চা আছে না মইরা গেছে কিছুই কইতে পারি না। আমার পোলাডার অন্তত লাশটা ফেরত দেন।’

এদিকে আলোচিত এ ঘটনায় প্রধান আসামী ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় এবং দুই আসামী জামিন পাওয়ায় স্থানীয় মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের আরও বেশি তৎপরতা প্রত্যাশা করেন তারা।

গলচিপা আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এড. শামীম আহম্মেদ বলেন, এটি একটি অমানবিক কাজ হয়েছে। এভাবে কোন মানুষ কোন মানুষকে মারতে পারে না। আমরা চাই দ্রত আসামীদের গ্রেফতার করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গলচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি ভিকটিমকেও উদ্ধারেও চেষ্টা চলছে।’

আব্দুস সালাম আরিফ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »