অস্ট্রিয়ায় বাধ্যতামূলক FFP2 মাস্ক পড়তে হবে কমপক্ষে জুলাই পর্যন্ত !

অস্ট্রিয়ায় করোনার বিশেষ টাস্ক ফোর্স গেকো (GECKO) সম্প্রতি শনাক্ত ওমিক্রনের নতুন ভেরিয়েন্টগুলিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে !

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছে,গেকো অস্ট্রিয়ায় সম্প্রতি নতুন শনাক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ওমিক্রনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট BA.4 এবং BA.5 এর সংক্রমণের বিস্তার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

অস্ট্রিয়ার জাতীয় কোভিড ক্রাইসিস সমন্বয় কমিটি গেকো (GEKO) প্রধান ক্যাথেরিনা রাইখ আজ রাজধানী ভিয়েনায় এক বিবৃতিতে বলেন,অস্ট্রিয়ায়
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। তবে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত কোভিড-১৯ এর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন ধরণ BA.4 এবং BA.5 অস্ট্রিয়ায় শনাক্ত হয়েছেন হওয়ায় পুনরায় নতুন করে উদ্বেগ বেড়েছে। তিনি জানান, এই দুই নতুন পরিবর্তিত ভাইরাসের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে পুনরায় করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন,তাই আমরা অস্ট্রিয়ায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি। তিনি অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোহানেস রাউখকে ধন্যবাদ জানান দেশের সুপারমার্কেট ও গণপরিবহনে FFP2 মাস্ক পড়ার বাধ্যতামূলক নিয়ম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের জন্য।

উল্লেখ্য যে,গতকাল অস্ট্রিয়ার রাস্ট্রায়ত্ব টেলিভিশন চ্যানেল ORF এর সংবাদ বিষয়ক বিভাগ ZIB এর স্টুডিও তে উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোহানেস রাউখ
(Greens) এক সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেন যে, অস্ট্রিয়ার সুপারমার্কেট ও গণপরিবহনে বাধ্যতামূলক FFP2 মাস্ক কমপক্ষে জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত পড়তে হবে।

অস্ট্রিয়ার শ্রমিক ইউনিয়ন ও সুপারমার্কেট সমূহ Rewe গ্রুপ(Billa, Penny, Bipa ও ADEG),Spar, Hofer ও Lidl অস্ট্রিয়া গত সপ্তাহে সরকারের নিকট
আগামীকাল রবিবার বিশ্ব “মা” দিবস থেকেই বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়ার নিয়ম প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছিলেন।

অস্ট্রিয়ার করোনার টাস্ক ফোর্স গেকোর প্রধান ক্যাথারিনা রাইখ আরও বলেন,জাতীয় কোভিড ক্রাইসিস সমন্বয় (GEKO) দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারনে সংক্রমণের বিস্তারের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নতুন প্রতিবেদন অনুসারে আরও মূল্যায়ন শীঘ্রই সম্ভব হবে। আমরা
অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বর্তমানে আগামী শরতের জন্য করণীয় বিষয়াদির প্রস্তুতি নিচ্ছি।

করোনার নতুন ওমিক্রন ভেরিয়েন্টস BA.4 এবং BA.5 এর জন্য বর্তমানে ক্রমবর্ধমান ফোকাসে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে – যেখানে তারা এপ্রিল থেকে করোনার ইভেন্টগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে – নতুন সংক্রমণ এবং কিছু ক্ষেত্রে, হাসপাতালের দখল দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে। এটি এখনও অস্পষ্ট যে, সংক্রমণ প্রক্রিয়া এবং হাসপাতালের দখলের ডিকোপলিং ওমিক্রন BA.1এর মতো নতুন রূপগুলির সাথে ততটা শক্তিশালী কিনা। বর্তমান তথ্য থেকে জানা যায় যে পূর্ববর্তী BA.1 এর সংক্রমণ BA.4/BA.5 এর সংক্রমণের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরবরাহ করে না, গেকো বিশেষজ্ঞ এ সম্পর্কে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

যারা এখনও করোনার প্রতিষেধক টিকা নেয় নি, তাদের ব্যাপারে গেকোর আশা নেই যে অস্ট্রিয়ায় টিকা প্রত্যাখ্যানকারীরা এখনও করোনার টিকা নিতে রাজি হতে পারেন। যাইহোক, এখনও এমন লোকদের গোষ্ঠী যারা এখনও অবিচ্ছিন্ন যেগুলি সম্বোধন করা যেতে পারে তারা ছোট, আংশিকভাবে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হয় এবং বর্তমানে টিকা দেওয়ার খুব কম কারণ দেখেন। ওমিক্রন সংক্রমণের উচ্চ সংখ্যার সাথে, প্রায় ছয় শতাংশ সম্প্রতি টিকা দেওয়া হয়নি বা পুনরুদ্ধার করা হয়নি – এবং ওমিক্রনের সাথে অপ্রকাশিতদের মধ্যে “স্বাস্থ্য ঝুঁকি উপলব্ধি” হ্রাস পেয়েছে।

গেকোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “সুতরাং এটি সুপারিশ করা হয় যে ভ্যাকসিনেশন যোগাযোগ ক্রমবর্ধমান যারা ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে তাদের টিকা সুরক্ষা বজায় রাখার দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে উত্সাহিত করা উচিত,” গেকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৬,১৬৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ১,৫৬১ জন।

অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে NÖ রাজ্যে ১,২৩৩ জন,OÖ রাজ্যে ৭২৯ জন,Steiermark রাজ্যে ৫৫৩ জন,Salzburg রাজ্যে ২৭৬ জন,Tirol রাজ্যে ২৬৯ জন,Kärnten রাজ্যে ২৫১ জন,Burgenland রাজ্যে ১৯৩ জন এবং Vorarlberg রাজ্যে ১০৩ জন নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ সমগ্র অস্ট্রিয়ায় করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২১০ জন এবং করোনার প্রতিষেধক টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৫,৬৬৩ জন।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১,৭৭,৯২৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮,২৪২ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ৪০,৯০,১৪৪ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬৯,৫৪২ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৭৮ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৯৮৩ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »