আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সচরাচর মে দিবস নামে অভিহিত। প্রতি বছর পয়লা মে তারিখে বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালিত হয়।
এই দিনটি শ্রমিক দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদযাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আবার অনেক দেশে এই দিনটি বেসরকারিভাবেও পালিত হয়। তবে করোনার জন্য
বিগত দুই বছর অনেক দেশেই এই মহান শ্রমিক দিবসের বিভিন্ন কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন। তবে এই বছর বিভিন্ন দেশে তা যথাযথ ভাবেই পালিত হচ্ছে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার জন্য বিগত দুই বছর অনেক দেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণ করলেও,
এই বছর বেশ জাঁকজঁমকভাবেই উদযাপন করছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম,পত্রিকা ও সম্প্রচার কেন্দ্র দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার ও প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই দিনে ১৮৮৬ সালের ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা দৈনিক ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। সেই দিন অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকজন শ্রমিককে জীবন বিসর্জন দিতে হয়। উত্তাল সেই আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। এরই পথ ধরে বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের সময় প্রচলন করা হয়। এরপর ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সমাবেশে ১লা মে’ কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের চরম আত্মত্যাগে ন্যায্য অধিকার আদায়ের এক অবিস্মরণীয় দিন। দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়াতেও এই দিবসটি নানান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে দিনটি পালিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। অস্ট্রিয়া ও বাংলাদেশে ১লা মে সরকারি ছুটির দিন।
অস্ট্রিয়াতে ১৯৯৬ সালের পূর্বে মে দিবসে বেলা ২ টা পর্যন্ত সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকতো। এই দিন অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বিভিন্ন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও পথ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন সরকারী ও বিরোধী দলের ও তাদের সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন দিনটিতে পথ শোভাযাত্রা সহ বিভিন্ন সভা ও সমাবেশ করে থাকে।
বাংলাদেশেও ১লা মে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠন বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে দিনটি উদযাপন করে থাকেন। বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় উদ্যোগে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পন্ন হয়ে থাকে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দেশের সকল জাতীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
কবির আহমেদ /ইবিটাইমস