অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা ও কয়েকটি প্রধান শহরের আজকের ইফতার ও আগামীকালের সেহরির শেষ সময়

ইউরোপ ডেস্কঃ আজ বৃহস্পতিবার ২৮ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ২৭ তম রোজার ইফতারের সময় : ২০:০৩ মিনিট। (Ifter in Vienna at 20:03 p.m)

আগামীকাল শুক্রবার ২৯ এপ্রিল ভিয়েনায় ২৮ তম রোজার সেহরির শেষ সময় : রাত ৩:৫৮ মিনিট।

ভিয়েনার সাথে অস্ট্রিয়ার অন্যান্য কয়েকটি ফেডারেল রাজ্যের প্রধান শহরের সময়ের পার্থক্য নিম্নে উল্লেখ করা হল,
* Innsbruck (Tirol) + 20 Min.
* Salzburg + 13 Min.
* Villach (Kärnten) + 10 Min.
* Linz (OÖ) + 08 Min.
*Klagenfurt (Kärnten) + 08 Min.
* Graz (Steiermark) + 4 Min.
* St. Pölten (NÖ) + 3 Min.

ইসলাম ধর্মে শিরক সবচেয়ে বড় বা মহাপাপ !

ইসলাম ধর্মে, শির্ক বা শিরক হল পৌত্তলিকতা বা বহু ঈশ্বরবাদ চর্চা করার পাপকে বুঝায় অর্থাৎ শিরক হল আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে উপাস্য হিসেবে সাব্যস্ত করা বা তার উপাসনা করা।

শাব্দিকভাবে এর দ্বারা এক বা একাধিক কোন কিছুকে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব ও কর্তৃত্বের অংশীদার সাব্যস্ত করাকে বুঝায়। এটি তাওহীদের পরিপন্থী একটি বিষয়। ইসলামে শির্ক হল একটি অমার্জনীয় অপরাধ যদি না মৃত্যু নিকটবর্তী হবার পূর্বে আল্লাহর নিকট এই অপরাধের জন্যে ক্ষমা চেয়ে না নেয়া হয়। ইসলামের নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুসারে, আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা না চাইলেও মৃত্যুর পর নিজের বিচার অনুসারে তার ইবাদতকারীদের যে কোন ভুল ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু শিরকের অপরাধী দুনিয়াতে ক্ষমা না চাইলে কখনোই ক্ষমা করবেন না।

আল্লাহ তা’আলা শির্কের বিপরীত তাওহীদের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন সূরা আল ইখলাসে, বলঃ তিনিই আল্লাহ। একক/অদ্বিতীয়।
আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন। তাঁর কোন সন্তান নেই এবং তিনিও কারও সন্তান নন, এবং তাঁর সমতুল্য কেহই নেই। [সূরা ইখলাস]

তাওহীদ যেমন প্রধানত তিন প্রকার, একইভাবে এর বিপরীতে শিরকও প্রধানত তিন প্রকার, যথা:

(এক): আল্লাহর সত্তার সাথে শিরক করা (তাওহিদে রুবুবিয়াহর বিপরীত)। যেমন: আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা আছে বলে বিশ্বাস করা।

(দুই): আল্লাহর ইবাদতে শিরক করা (তাওহীদে উলুহিয়াহর বিপরীত)। উপাসনার নিয়তে কাউকে সিজদা করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

(তিন): আল্লাহর গুণাবলিতে শিরক করা (তাওহীদে আসমা ওয়াস সিফাতের বিপরীত)। যেমন: নবী, রাসূল ও আওলিয়াগণ নিজে থেকে গায়েব জানেন বলে মনে করা ,কারণ গায়েবের জ্ঞান শুধু আল্লাহ জানেন।

রাসূল মুহাম্মদ সাঃ এর সময় তৎকালীন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ্-র অস্তিত্ব ও প্রতিপালকত্বে বিশ্বাস করত। একইসাথে তারা বিভিন্ন মূর্তি, পাথর, গাছ, নক্ষত্র, ফেরেশতা, জ্বিন, মৃতব্যক্তি ইত্যাদি বস্তু ও জীবের ইবাদত বা উপাসনা করত। আল্লাহ্ ছাড়াও ঐসব দেবদেবীকে ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খার সাথে ডাকা, বিপদে তাদের কাছে সাহায্য, আশ্রয়, উদ্ধার প্রার্থনা করা এবং তাদের নামে যবাই ও মানত করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শির্ক করত। কোরআনে বলা হয়েছে, “আর তুমি যদি জিজ্ঞাসা কর, আসমানসমূহ ও যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? তারা (মুশরিকরা) অবশ্যই বলবে, মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞই কেবল এগুলো সৃষ্টি করেছেন।” [“কোরআন ৪৩:৯]

তাছাড়াও আমরা মুসলমানরা আমাদের প্রতিদিনের কাজকর্মে নিজেদের অজ্ঞতার জন্য নানা ধরনের শিরক এর মত মহাপাপ করে যাচ্ছি।

আসুন ছোট ছোট শিরক সম্পর্কে জানি ও এগুলো থেকে বিরত থাকি।

🔘আল্লাহ্ ব্যতিত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক।
__(আবু দাউদ:৩২৩৬(ইফা)

🔘কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষন বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক।
__(বুখারি :৫৩৪৬, আবু দাউদ:৩৯১০)

🔘মাজারে ও কোন পির-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদা দেয়া শিরক।
__(সুর জীন: ২০, মুসলিম:১০৭৭,আবু দাউদ, মুত্তাফাকুন আলাই)

🔘আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পির আওলিয়া কিংবা মাজারের নামে মানত করা শিরক।
__(সহিহ বুখারি: অধ্যায় : তাকদির)

🔘কেউ পেছন দিক থেকে ডাক দিলে কিংবা নিজে যাত্রার সময় পিছন ফিরে তাকালে যাত্রা অশুভ হয় এই ধারনা বিশ্বাস করা শিরক।
__(বুখারি, আবু দাউদ:৩৯১০)

🔘কোন বিপদে পড়ে আল্লাহকে বাদ দিয়ে “ও মা, ও বাবা” ইত্যাদি বলে এইরকম গায়েবি ডাকা শিরক।
বিপদে পড়লে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন” বলতে হয়।
__(সুরা বাকারাহঃ ১৫৬)

🔘তোর ভবিষ্যত অন্ধকার’, ‘তর কপালে বহুত কষ্ট আছে’,এই ধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শিরক।
__(সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৫-২৬, আনাম:৫৯)

🔘হোচট খেলে কিংবা পেচা ডাকলে সামনে বিপদ আছে এই ধারনা শিরক
__(সুরা আনাম:১৭, ইউনুস:১০৭)

🔘রোগ ব্যাধি বা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে শরীরে পিতলের বালা, শামুক, ঝিনুকের মালা, সুতা, কিংবা যেকোন প্রকারের বস্তু লটকানো শিরক।
__(তির্মিযি, আবু দাউদ ও হাকেম)

🔘সকালে বেচাকেনা না করে কোন কাষ্টমারকে বাকি দিলে কিংবা সন্ধ্যার সময় কাউকে বাকি দিলে ব্যাবসায় অমঙ্গল হয় এই ধারনা করা শিরক!।
__(আবু দাউদঃ৩৯১০)

🔘সফলতা কিংবা মঙ্গল লাভের জন্য এবং অমঙ্গল থেকে রক্ষা পেতে যেকোন প্রকার আংটি ব্যবহার করা শিরক।
__(সুরা আনাম:১৭, ইউনুস :১০৭)

🔘যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক
যেমন: পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি।
__(সুরা বাকারাহ:২৩৮, আহকাফ:৫, ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮, আবু দাউদ:৪০৩৩)

🔘আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদাত করা শিরক।
__(সুরা আনাম:১৬২, বাইয়িনাহঃ ৫, কাহফ:১১০,ইমরান:৬৪, ইবনে মাজাহ হা নং৫২০৪)

🔘আল্লাহ্ ব্যাতিত কোন গণক বা অন্য কেউ গায়েব জানে এই কথা বিশ্বাস করা শিরক
__(সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৬, আনাম:৫৯)

🔘পায়রা/ কবুতর উড়িয়ে শান্তি কামনা করা শিরক,
কারণ শান্তিদাতা একমাত্র আল্লাহ্
__(সুরা হাশরঃ ২৩)

🔘আল্লাহর ছাড়া কোন পির-আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দুয়া করা বা কোন কিছু চাওয়া শিরক।
__(সুরা ফাতিহা:৪, আশ শোআরা:২১৩, গাফির:৬০, তির্মিযি)

🔘শরিরে যে কোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শিরক।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »