ইউরোপ ডেস্কঃ আজ শুক্রবার ২২ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ২১ তম রোজার ইফতারের সময় : ১৯:৫৫ মিনিট। (Ifter in Vienna at 19:55 p.m)
আগামীকাল শনিবার ২৩ এপ্রিল ভিয়েনায় ২২ তম রোজার সেহরির শেষ সময় : রাত ৪:১২ মিনিট।
ভিয়েনার সাথে অস্ট্রিয়ার অন্যান্য কয়েকটি ফেডারেল রাজ্যের প্রধান শহরের সময়ের পার্থক্য নিম্নে উল্লেখ করা হল,
* Innsbruck (Tirol) + 20 Min.
* Salzburg + 13 Min.
* Villach (Kärnten) + 10 Min.
* Linz (OÖ) + 08 Min.
*Klagenfurt (Kärnten) + 08 Min.
* Graz (Steiermark) + 4 Min.
* St. Pölten (NÖ) + 3 Min.
মানব জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে ইসলাম প্রযোজ্য কেন ? বর্তমানে ‘আধুনিক মনস্ক’ কিছু মানুষের মুখে এ প্রশ্নটি প্রায়ই শোনা যায় যে ‘সব জায়গায় ইসলাম
টেনে আনেন কেন?’ কয়েক ধরনের মানুষ এ ধরনের প্রশ্ন তোলেন। যেমন,
* এক. অমুসলিম (ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মে বিশ্বাসী)।
* দুই. নাস্তিক।
* তিন. বংশগতভাবে মুসলিম (ধর্ম-কর্মের ধার ধারে না)।
* চার. ছদ্মবেশী মুসলিম (সুবিধা বুঝে ইসলাম পালন, নয়তো গোপনে বিরোধিতা)।
* পাঁচ. ইসলামবিদ্বেষী।
কোনো তর্কে জড়ানোর আগে নিজের পরিচয় এবং অনুসরণীয় মূলনীতি নির্ণয় করা জরুরী। আপনি কে এবং আপনি কি চান—এটি শুরুতে নির্ধারণ করা গেলে যুক্তির আলোকে কথা বলা সহজ।
সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন—এ প্রশ্নের সহজ-সরল জবাব হলো, প্রথমে ‘সব জায়গা’ কথাটির পরিধি নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কি ‘সব জায়গা’র ভেতরে আছেন? যদি না থাকেন, তাহলে এ প্রশ্ন করার অধিকার আপনার নেই।
আর হ্যাঁ, একজন মুসলমান, যিনি আমৃত্যু আল্লাহর আনুগত্য পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ, তার ‘সব জায়গা’য় ইসলাম থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। ইসলামের বিধান কোনো অমুসলিমের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো নাস্তিকের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো নামধারী মুসলিমের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো ছদ্মবেশী কিংবা ইসলামবিদ্বেষীর জন্য নয়। যে ইসলাম মানে না, তার জন্য ইসলাম নয়।
ইসলামের বিধান শুধু সেই ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নিয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)-কে নবী ও রাসুল হিসেবে মেনে নিয়েছে। আমৃত্যু আল্লাহর ইবাদত করার অঙ্গীকার করেছে। শয়নে-স্বপনে, গোপনে -প্রকাশ্যে, আলোকে-আঁধারে, ছোট থেকে বৃহৎ—সব কাজে যে আল্লাহকে স্মরণ করে, ইসলাম তার জন্য। যে নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছে, ইসলাম তার জন্য। যে দুনিয়ার জীবন থেকে পরকালের জীবনকে প্রাধান্য দেয়, ইসলাম তার জন্য। ইসলাম সেই ব্যক্তির জন্য, যে দ্ব্যর্থহীনভাবে এই ঘোষণা দেয়, “বলে দাও, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর জন্য।” [সুরা: আনআম, আয়াত: ১৬২]
তাই প্রত্যেক মুসলমানের করণীয় হলো, যে কাজই সে করুক না কেন, তা কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। সুতরাং ‘সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন—এ প্রশ্ন সঠিক নয়।
আসলে ইসলামকে ‘টেনে আনার’ কিছু নেই, বরং ইসলাম সব ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উপস্থিত। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। সব কিছুতে ইসলাম—এ কথার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসলামে ‘সব কিছু’ আছে। কোরআন বলছে, ‘ “আমি মুসলমানদের জন্য সব বিষয়ে ব্যাখ্যাদানকারী, পথনির্দেশক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদস্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি।” [সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯]
ইসলাম আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা, আত্মসমর্পণ করা। আল্লাহর কাছে সর্বতোভাবে আত্মসমর্পণকারীকে মুসলিম বা মুসলমান বলা হয়। ইসলামের বাণী সবার জন্য অবারিত হলেও ইসলামের বিধান মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য। একজন মুসলমানকে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলাম মোতাবেক জীবন যাপন করতে হয়।
কেননা মুসলমান মাত্রই এ কথা বিশ্বাস করে, “নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে একমাত্র (গ্রহণযোগ্য) দ্বীন (জীবনব্যবস্থা) ইসলাম।” [সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৯]
ইসলাম একমাত্র ও সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা। একজন মুসলমান ঘুম থেকে উঠা নিয়ে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক—সব কিছুর উপর ইসলামের বিধান আরোপিত। ইসলামের আংশিক ধারণ করে, বিশেষ ক্ষেত্রে ইসলাম বর্জন করার সুযোগ ইসলামে নেই। ইরশাদ হয়েছে, “হে ঈমানদাররা! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সুরা: বাকারা, আয়াত: ২০৮]
মুসলমান হতে হলে এই কথায় বিশ্বাসী হতে হয় আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা, মালিক, প্রতিপালক ও একচ্ছত্র কর্তৃত্বের অধিকারী। সুতরাং তাঁর বান্দাদের জীবনযাত্রার নিয়ম-কানুন নির্ধারণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাও তাঁর। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, “তুমি কি জানো না, আসমান ও জমিনের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই?” [সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০৭]
কোনো মুসলমানের জন্য ইসলামকে কাটছাঁট করা কিংবা সহজায়ন করা সম্ভব নয়। কোরআন বলছে, “তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কি প্রতিফল হতে পারে? আর কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন আজাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।” [সুরা: বাকারা, আয়াত: ৮৫]
ইসলামে কোনো রিজার্ভেশন বা সংরক্ষণ নেই। এতটুকু আমার, এতটুকু আপনার—এ বিভাজন ইসলামে নেই। এতটুকু দেশের, এতটুকু প্রদেশের—এই পার্থক্য ইসলাম করে না। এতটুকু রাষ্ট্রের, এতটুকু ধর্মের—এই দূরত্ব ইসলাম মেনে নেয় না। এতটুকু রাজনৈতিক সুবিধার, এতটুকু অসুবিধার—এই আপসকামিতা ইসলাম সমর্থন করে না।
মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনকে এমনভাবে বিন্যাস করেছেন যে,তা বিশ্বের যে কোন স্থানে, যুগে এবং শতাব্দীতে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে
পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে আজ পর্যন্ত একমাত্র ইসলাম ব্যতীত আর কোন মতবাদ এতোটা সাফল্য লাভ করতে পারে নি।
ইসলাম ধর্মের প্রবর্তনের সময় সেখানকার লোকজন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বর্বর এক জাতি যেমন নিজের মেয়ে সন্তানদের জ্যান্ত মাটি চাপা দিয়ে মেরে ফেলতো। সেখানেই যখন ইসলাম জীবন ব্যবস্থা আসলো তখন সেই মানুষগুলিই পরশ পাথরের ছোঁয়ার মত মুহুর্তের মধ্যেই এমন এক সত্যিকারের মানুষে পরিণত হল যাদের গুণ কীর্তন ও অনুসরণ আজ প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর পরেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্ম ব্যবস্থার এই অটুট অবস্থান এটাই প্রমাণ করে যে, এই সর্ব শতাব্দীর সার্বজনীন ব্যবস্থা একমাত্র স্রষ্টার পক্ষেই সম্ভব।
কবির আহমেদ /ইবিটাইমস