শিক্ষামন্ত্রী মার্টিন পোলাশেক আগামী সপ্তাহ থেকে অস্ট্রিয়ার স্কুলগুলিতে মুখোশের প্রয়োজনীয়তার সম্পূর্ণ সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছেন
ইউরোপ ডেস্কঃ আজ বুধবার (২০ এপ্রিল) মন্ত্রী পরিষদের এক বৈঠকের পর রাজধানী ভিয়েনায় এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রিয়ার শিক্ষামন্ত্রী মার্টিন পোলাশেক (ÖVP) আগামী সপ্তাহ থেকে অস্ট্রিয়ার স্কুলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়ার এই নিয়ম প্রত্যাহারের কথা জানান। এখন পর্যন্ত, মুখ ও নাকের সুরক্ষার জন্য স্কুলের করিডোরে এবং টয়লেট সহ অন্যান্য ইভেন্টে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়ার নিয়ম প্রচলন ছিল। তবে ক্লাসে মাস্ক পড়ার নিয়ম সম্প্রতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।
শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন,স্কুলগুলোতে মাস্কের প্রয়োজনীয়তার অবসান ঘটছে। অবশ্য তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি আবার খারাপ হলে পুনরায় মাস্ক পড়ার নিয়ম চালু করা যেতে পারে। আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে সমন্বয় রেখে কাজ করছি।
পোলাশেক আরও নিশ্চিত করেছেন যে সোমবার থেকে টিকাবিহীন শিক্ষকদের জন্য মুখোশের প্রয়োজনীয়তাও তুলে নেওয়া হবে। তবুও, স্কুল প্রাঙ্গনে অনিরাপদ বোধ করা সমস্ত লোক অবশ্যই স্বেচ্ছায় মুখোশ পরা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে, মন্ত্রী জোর দিয়েছিলেন। মুখোশের প্রয়োজনীয়তাটি এই বার্তাটিও যে মহামারীটি এখন “শেষ হয়ে গেছে” “পোলাশেক কিভাবে এটি ব্যাখ্যা করবেন তা নয়”।
পোলাশেকের মতে, স্কুলগুলিতে সাপ্তাহিক পিসিআর পরীক্ষাটি “পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না হওয়া পর্যন্ত,” “যতক্ষণ এটি প্রয়োজনীয় মনে হয়” ধরে রাখা উচিত। ইস্টার পর্যন্ত, স্কুলগুলি সপ্তাহে অন্তত দুবার পিসিআর দ্বারা এবং একবার অ্যান্টিজেন পরীক্ষা দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছিল, ইস্টারের পর থেকে প্রতি সপ্তাহে শুধুমাত্র একটি পিসিআর হয়েছে।
মুখোশের বা মাস্কেরষপ্রয়োজনীয়তা পিছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তবুও, এই পরিমাপটি এমন জায়গাগুলির সংখ্যা আরও হ্রাস করেছে যেখানে এখনও মাস্ক পরা হবে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, ট্যাক্সি, প্রয়োজনীয় দোকান, ব্যাঙ্ক, ওষুধের দোকান, ফার্মেসি, অফিসের পাশাপাশি যত্ন এবং স্বাস্থ্য সুবিধাগুলিতে এখনও মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক।
স্কুলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়ার নিয়ম প্রত্যাহার করায় অস্ট্রিয়ার জাতীয় সংসদের বিরোধী দল FPÖ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। এই দলটি দীর্ঘদিন যাবত স্কুলে মাস্ক পড়ার নিয়ম বাতিলের জন্য মিটিং, মিছিল ও সমাবেশ করে আসছিল দলটির শিক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র হারম্যান ব্রুকল আজ স্থানীয় একটি বেসরকারি সম্প্রচার কেন্দ্রে সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, যাইহোক, এটি শুধুমাত্র একটি প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে, কারণ: “বড় আকারের এবং ব্যয়বহুল পিসিআর পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত আসতে হবে।” অন্য দল NEOS এর শিক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র মার্টিনা কুন্সবার্গ-সারেও বলেন, “অবশ্যই দীর্ঘ সময়ের পর অপেক্ষাকৃত ভাল পদক্ষেপ” নিতে পারায় শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৭,৫৭১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৩১ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ২,০৬৪ জন।
অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে NÖ রাজ্যে ১,৭৫৬ জন, OÖ রাজ্যে ৯৭৭ জন, Steiermark রাজ্যে ৮১৪ জন,Tirol রাজ্যে ৬২৪ জন, Salzburg রাজ্যে ৪২৮ জন, Kärnten রাজ্যে ৩৫০ জন, Vorarlberg রাজ্যে ৩০৭ জন এবং Burgenland রাজ্যে ২৫১ জন নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন।
অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ সমগ্র অস্ট্রিয়ায় করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৪৪ জন এবং করোনার প্রতিষেধক টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২,৫২৭ জন।
বর্তমানে ৬১,৪৯,৪২৪ জন অস্ট্রিয়ায় বৈধ করোনার গ্রিণ পাশের অধিকারী, যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬৮,৫ শতাংশ।
অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪০,৭২,৪১০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬,৪৭০ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন ৩৯,৪৫,১৩৪ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১,১০,৮০৬ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ১৩৮ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১,৮৭৬ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস