অস্ট্রিয়ায় করোনার দৈনিক সংক্রমণ ৭০ হাজারের সতর্কতা

অস্ট্রিয়ায় করোনার পূর্বাভাস, রাজ্য সংকট এবং দুর্যোগ সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে
দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ায় করোনার নতুন সংক্রমণের বিস্তার প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক আকারে বিস্তার লাভ করছে। অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত সাত দিনের দেশে প্রতি ১,০০,০০০ (এক লাখ) জনপদে করোনার নতুন
সংক্রমণ গড়ে ৪,১০০ জন। ফলে করোনার ট্র্যাফিক লাইট কমিশন সমগ্র অস্ট্রিয়াকেই করোনা ভাইরাসের অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘন লাল জোনেই অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সপ্তাহান্তে তাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে।

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ফ্রি মেট্রো পত্রিকা ‘Heute’ তাদের অনলাইন প্রকাশনায় জানিয়েছে, অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের রাজ্য সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দেশে করোনা ভাইরাসের পূর্বাভাসে জানিয়েছে অস্ট্রিয়ায় করোনার ওমিক্রন সাব ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাবে শীঘ্রই দেশে দৈনিক নতুন সংক্রমণ প্রায় ৪২,০০০ হাজার থেকে ৭০,০০০ হাজারের মধ্যে উঠানামা করতে পারে।

পত্রিকাটি আরও জানায় করোনার এই রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণ শনাক্তের মধ্যেই সরকার গতকাল সোমবার থেকে দেশে যোগাযোগের জন্য কোয়ারেন্টাইন বাতিল করেছে। অর্থাৎ এখন থেকে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের আর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। সরকার সম্পূর্ণ অনাক্রম্য সুরক্ষা ব্যতীত সমস্ত লোকের জন্য পূর্ববর্তী প্রবিধানটিও শিথিল করেছে, তাই টিকাবিহীনদের জন্য দশ দিনের ঘরোয়া বিচ্ছিন্নতাও বাতিল করা হয়েছে।

নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোহানেস রাউখ (Greens) তথাকথিত “ট্রাফিক বিধিনিষেধ” জারি করেছেন। আক্রান্তদের এখন বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে অবশ্যই একটি FFP2 মাস্ক পরতে হবে – এমনকি তাজা বাতাসেও। ব্যক্তিগত বসবাসের এলাকার জন্য একটি অভিন্ন সুপারিশ আছে. মুখ এবং নাক সুরক্ষা ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য যথেষ্ট, ছোট শিশুদের প্রবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি।

ট্রাফিক বিধিনিষেধ:
গ্যাস্ট্রোনমি বা ফিটনেস ক্লাব, যেখানে মুখোশ স্থায়ীভাবে পরা যায় না, তা নিষিদ্ধ। যোগাযোগের ব্যক্তিরা, এমনকি তাদের মুখে FFP2 সুরক্ষা রয়েছে, তাদের বড় ইভেন্টে যোগ দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি বা “ঝুঁকিপূর্ণ সেটিংস” সহ সুবিধাগুলিতে প্রবেশ করাও নিষিদ্ধ। সংবাদ সংস্থা এপিএ-এর মতে, এটি অবসর গ্রহণ এবং নার্সিং হোম, স্বাস্থ্য সুবিধা, গৃহহীন বাড়ি, কারাগার বা শরণার্থী হোমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

অন্যদিকে যা অনুমোদিত, তা হল আপনার নিজের বাড়ি ছেড়ে, কেনাকাটা করা এবং কাজ করা। তবে কোনো অবস্থাতেই মাস্ক খুলে ফেলা যাবে না।

এদিকে গতকাল সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে অস্ট্রিয়ায় করোনায় নতুন করে সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৩১,৮৭২ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন। রাজধানী ভিয়েনায় নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৬,৫৭৬ জন।

অস্ট্রিয়ার অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে NÖ রাজ্যে ৭,৯২৯ জন, OÖ রাজ্যে ৬,০০৭ জন, Steiermark রাজ্যে ৩,৮৪৪ জন, Kärnten রাজ্যে ১,৮৮৪ জন, Tirol রাজ্যে ১,৬৪৫ জন, Salzburg রাজ্যে ১,৫৬৭ জন, Burgenland রাজ্যে ১,৩১৫ জন এবং Vorarlberg রাজ্যে ১,১০৫ জন নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গতকাল সোমবার সমগ্র অস্ট্রিয়ায় করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৫৩ জন এবং করোনার প্রতিষেধক টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৪৮৪
জন।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪,৯৮,০৭৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫,৪৩২ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ৩০,৪৪,৮০৮ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২১৭ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩,০৭৭ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »