৩য় পর্ব
ড. মোঃ ফজলুর রহমান: ২১। উপরোল্লিখিত যুগান্তকারী ঘোষণার মাধ্যমে তিনি বলেন-“এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ যে যেখানে আছেন, আপনাদের যা কিছু আছে, তা দিয়ে সেনাবাহিনীর দখলদারির মোকাবিলা করার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। জয় বাংলা।” [দ্রঃ বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশনা- বঙ্গবন্ধু স্পিকস্, (মূলঃ ইংরেজী) ১৯৭২]। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাস যুগ যুগ ধরেই সাক্ষ্য দিবে যে, পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনী ২৫শে মার্চের কাল রাতে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়ে মারাত্মক সব অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সর্বশক্তি নিয়ে বাঙালি জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাদের এহেন বর্বরোচিত এবং কাপুরুষোচিত আক্রমণের পাশাপাশি তারা ঐ রাতে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। এহেন গ্রেফতারের অব্যবহিত পূর্বে বঙ্গবন্ধু নিজে স্বয়ং উপরোক্ত স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। উক্ত ঘোষণাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ করলে যে কেউ সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন যে, এই ঘোষণা পূর্বেই রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রমণ শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু তা প্রকাশ করেননি এবং প্রচার ও করেননি। আবার বিপরীত দিক থেকে এ কথাও সত্য যে, আমরা বাঙালিরা আক্রান্ত হওয়ার পর কালবিলম্ব না করে বাঙালি জাতির ম্যান্ডেট প্রাপ্ত অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু নিজেই আমাদের স্বাধীনতার মহান ঘোষণা প্রদান করেন।
২২। ইতিহাসের অতুলনীয় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রদত্ত উপরোক্ত স্বাধীনতার ঘোষণার ব্যাপারে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান সামরিক কর্মকর্তা লেঃ জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান (এ এ খান) নিয়াজীর জনসংযোগ কর্মকর্তা তৎকালীন মেজর সিদ্দিক সালিক তার Witness to Surrender বইয়ে সুস্পষ্ঠভাবে উল্লেখ করেছেন- “When first shot has been fired, the voice of Sheikh Mujibur Rahman came faintly through a wave length close to that of official Pakistan Radio. In what must have been and sounded like, a pre-recorded message, the Sheikh proclaimed East Pakistan to be the People’s Republic of Bangladesh. [Witness to Surrender, Oxford University Press, Karachi, 1977, Page- 75].”
২৩। ইতিহাসের আলোকে দেখা যায় যে, আন্দোলন ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একটি রক্তক্ষয়ী এবং দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু প্রথমে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। পরে তিনি ধাপে ধাপে অত্যন্ত নিপুণ এবং নির্ভুল পরিকল্পনার মাধ্যমে তাঁর দল এবং নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং সংগঠিত করেছেন। তারও পরে দেশবাসীকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে উদ্দীপ্ত এবং উজ্জীবিত করেছেন। পরবর্তীকালে ইতিহাসের সুদক্ষ সমর নায়কের মতো বঙ্গবন্ধু অপেক্ষা করেছেন এবং বেছে নিয়েছেন দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার প্রকৃষ্ট এবং উপযুক্ত সময়। এমতাবস্থায় তাঁর নামে এবং তাঁরই সুদক্ষ পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার আলোকে পরিচালিত হয় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যার ফলশ্রুতিতে ৯ (নয়) মাসের মরণপণ মুক্তিযুদ্ধে অগণিত বীরের রক্তস্রোত এবং অযুত মা-বোনের অপরিমেয় অশ্রুধারা সহ পুরো জাতির অপরিসীম ত্যাগ ও তিতিক্ষার বিনিময়ে বিজাতীয় শত্রুর কবল থেকে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে তাদের কাঙ্ক্ষিত এবং বাঞ্ছিত স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির রক্তরঞ্জিত লাল সবুজ পতাকা।
২৪। আমরা সবাই জানি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত সাহসী, গতিশীল এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে এই ভূখণ্ডের মানুষ হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিঁড়ে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার লাল সূর্য। বঙ্গবন্ধুর নির্ভুল এবং সুদূরপ্রসারী দিক নির্দেশনার আলোকেই পরিচালিত হয়েছে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। তাই এই যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু নিজে শারীরিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও তাঁর অনুপস্থিতিতে এবং নিতান্তই অনিবার্য কারণে তাঁকেই প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি করা হয়েছে। এই সরকারের সুদক্ষ পরিচালনায় মরণপণ যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয়ী জাতি হিসেবে অধিকার হারা বাঙালি পেয়েছে তাদের নিজস্ব জাতি রাষ্ট্র এবং গর্বিত আত্ম পরিচয়। তাই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রধান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। এহেন অবস্থায় নিতান্ত অবধারিতভাবেই স্বাধীনতার মানচিত্রে আমরা দেখি তাঁরই প্রতিচ্ছবি। বাঙালির স্বাধিকার এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর সমতুল্য কিংবা সমকক্ষ আর কেউই নেই। এমনকি কোনদিন ছিলেন ও না।
২৫। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীর সেনানী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু “আজাদ হিন্দ ফৌজ” প্রতিষ্ঠার পর বলেছিলেন- “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদেরকে স্বাধীনতা দিব।” কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, নেতাজী সফল হননি। ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী এবং পাকিস্তানের জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ ব্রিটিশ সরকারের সাথে সুদীর্ঘ দিন ধরে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কোন প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ ব্যতিরেকে বিনা রক্তপাতে এবং আপোষ ফর্মুলার আলোকে তাদের নিজ নিজ দেশের পক্ষে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। ফলে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পাকিস্তান ও ভারতের জনগণকে কোন রণাঙ্গনে যেতে হয়নি, কোন যুদ্ধ ও করতে হয়নি। এমনকি কোন চড়া মূল্য ও দিতে হয়নি। সুতরাং স্বীকৃত মতেই রক্তপাতহীন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পাকিস্তান এবং ভারত স্বাধীন হয়েছে। তাই পাকিস্তান ও ভারত এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্র ও প্রেক্ষাপট এবং তৎসহ আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে আলাদা এবং ভিন্ন প্রকৃতির।
২৬। পক্ষান্তরে একথা ঐতিহাসিকভাবেই সত্য যে, সুদীর্ঘ ৯ (নয়) মাস ধরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রায় এক কোটি নরনারীকে নিজ দেশ ছেড়ে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এরই পাশাপাশি জীবন বাজি রেখে উপরোক্ত নয় মাস ধরে যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদের অপরিমেয় রক্ত এবং দু’ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাকিস্তানী বর্বর সেনাবাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত এবং পর্যদুস্ত করে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আর এই যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে বাঙালি জাতির পিতা মহান মুজিবের ডাকে এবং তাঁরই সুচিন্তিত দিক নির্দেশনার আলোকে। তাই উপরোক্ত প্রাতঃস্মরণীয় নেতৃবৃন্দের সাথে এখানেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। আর তাই সামগ্রিক ইতিহাসের আলোকে একথা অকপটে, অসংকোচে এবং অবলীলাক্রমে বলা যায় যে, ১৯৭১ এর ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু যে জ্বালাময়ী এবং তেজোদীপ্ত ভাষণ দিয়েছেন তাঁর সেই ভাষণ তথা বক্তব্য সমূহের সফল বাস্তবায়ন তিনি তাঁর জীবদ্দশাতেই করে গিয়েছেন।
২৭। পৃথিবীতে অনেক দেশেরই স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক প্রাণপুরুষ তথা প্রথিতযশা নায়কগণ অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা এবং নির্যাতন-নিপীড়ন ভোগ করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন কারান্তরীণ থাকা সত্ত্বেও তাদের জীবদ্দশায় তাদের সংগ্রামের ফসল তথা বিজয় তারা দেখে যেতে পারেননি। এদিক থেকে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সফল ও স্বার্থক বটেন। তাঁর প্রখর দূরদৃষ্টি, অসাধারণ প্রজ্ঞা, অফুরন্ত নৈতিক মনোবল এবং সঠিক সময়ে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদানের মতো প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের মাধ্যমে তিনি বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে। এরই পাশাপাশি অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধু বরাবরই থেকেছেন পাথরের মতো স্থির এবং বজ্রের ন্যায় কঠিন। কোন প্রকার লোভ লালসা কিংবা প্রলোভন অথবা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাঁর লক্ষ্য থেকে একটিবারের জন্যও তাঁকে একটু ও বিচ্যুত করা যায়নি কিংবা সরানো যায়নি।
২৮। বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তাঁর অসামান্য অবদান সম্পর্কে বলতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মারকগ্রন্থের মুখবন্ধে বর্ণনা করেছেন- “… সুচিন্তিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় অধিকার প্রতিষ্ঠা যে সম্ভব শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রমাণ সমগ্র পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির বন্ধু ও অধিনায়কই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানবজাতির পথ প্রদর্শক ও মহানেতা। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর উৎসাহ শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সভ্যতা, সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সব মানুষের মানবাধিকারের স্বীকৃতি। তাঁর সাবলীল চিন্তাধারার সঠিক মূল্য শুধু বাংলাদেশ নয়, সমস্ত পৃথিবী ও স্বীকার করবে – এ আশা আমাদের আছে এবং থাকবে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তির আন্দোলনের নেতৃত্বের মধ্যে শেখ মুজিবের বিশাল মহিমার একটি প্রকাশ যেমন আমরা দেখতে পাই, তাঁর মহামানবতার আরেকটি পরিচয় আমরা পাই তাঁর চিন্তাধারার অসাধারণতায়…।”
২৯। শিক্ষিত এবং সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৭২ এর ২৬শে মার্চ তৎকালীন দৈনিক বাংলা এবং সাপ্তাহিক বিচিত্রা (বর্তমানে দু’টি পত্রিকাই বিলুপ্ত) পত্রিকায় তার নিজের নামে “একটি জাতির জন্ম” শিরোনামে একটি আর্টিকেল লিখেছেন। উক্ত প্রবন্ধে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মোট ৪ (চার) বার জাতির পিতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এরই পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আমাদের স্বাধীনতার জন্য “গ্রিন সিগন্যাল” ছিল বলেও তিনি তার উপরোক্ত একই আর্টিকেলে অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন (Conspicuously and unequivocally) ভাবে স্বীকার করেছেন। দেশবাসী নিশ্চয়ই জানেন বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান নিয়োগ করেন। তারও পরে বিচারপতি এ, এস, এম, সায়েমকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করে জিয়াউর রহমান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ দখল করেন। পরবর্তীকালে দেশের রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচিত হন।
৩০। দেশের সেনাবাহিনী প্রধান এবং তৎসহ সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকাবস্থায় সংবিধান লংঘন করে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে নজিরবিহীন কারচুপির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা (Inter Service Intelligence- ISI) -এর পরামর্শে বাঙালি জাতির ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম ঠিকানা মুছে ফেলার জন্য জিয়াউর রহমান নেপথ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টা এবং অপতৎপরতা চালান। বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃত করার নিমিত্তে তিনি (জিয়াউর রহমান) সম্পূর্ণভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে এহেন অপকর্ম সমূহ সম্পাদন করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি প্রকাশ্যভাবে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে কখনো অস্বীকার করেননি কিংবা করার মতো সাহস অথবা ধৃষ্টতা দেখাননি। এছাড়া ৭ই মার্চের ভাষণের বিরুদ্ধেও প্রকাশ্যভাবে তিনি কোন মন্তব্য করেননি কিংবা কোন বক্তব্য প্রদান করেননি। কিন্তু তার অবর্তমানে তারই প্রতিষ্ঠিত দলের কোন কোন অর্বাচীন নেতা সুযোগ পেলে বাঙালি জাতির আন্দোলন ও সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, অবদান এবং কৃতিত্বসমূহকে অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা করে থাকেন। যা শুধুমাত্র অশোভন, নিন্দনীয় এবং শ্রুতিকটুই নহে বরং ইতিহাস বিকৃতির শামিল বলে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন যে কেউ সহজেই অনুধাবন করতে পারেন।
ড. মোঃ ফজলুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ (অবঃ), লেখক ও কলামিস্ট
(চলবে)
বি রি/ ইবিটাইমস/এম আর