অস্ট্রিয়ায় আজ একদিনেই ওমিক্রোনে আক্রান্ত প্রায় ১০ হাজার

শীঘ্রই সর্বত্র FFP2 মাস্ক পড়ার নিয়ম আসতে পারে বলে এক টুইট বার্তায় ঈন্গিত দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে অস্ট্রিয়ায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রোনের সংক্রমণের বিস্তার নাটকীয় আকার ধারন করেছে। অস্ট্রিয়ান সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা আগামী সপ্তাহ থেকে দেশে দৈনিক সংক্রমণ ১৭,০০০ হাজারের উপরে উঠতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছেন।

এদিকে আগামীকাল অস্ট্রিয়ার নবগঠিত করোনার টাস্ক ফোর্স GECKO সরকার ও বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের সাথে এক জরুরী বৈঠকে বসছেন। অনেকেই ধারণা করছেন পরিস্থিতির নাটকীয়তায় টাস্ক ফোর্স সরকারকে আবারও পঞ্চম বারের মত লকডাউনে যাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।

গতকাল ভিয়েনার রাজ্য গভর্নর ও মেয়র মিখাইল লুডভিগ (SPÖ) এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে, লকডাউন ঠেকানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে কিন্ত সাথে সাথে তিনি একথাও বলেছেন যে,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে অস্ট্রিয়া পঞ্চম বারের মত লকডাউনে যেতে পারে। অস্ট্রিয়ায় লকডাউনে সপ্তাহে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক বিলিয়ন ইউরো।

অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় দৈনিক OE24 জানিয়েছে মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে অস্ট্রিয়ায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রোনের সংক্রমণ ৫ হাজার থেকে ১০ হাজারের পৌঁছায় নড়েচড়ে বসেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়।অস্ট্রিয়ার কোভিড পূর্বাভাস কনসোর্টিয়ামের বিশেষজ্ঞদের মতে,দেশে করোনার পঞ্চম করোনা তরঙ্গ পুরোদমে শুরু হয়েছে।

পত্রিকাটি আরও জানায়,অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা.ভল্ফগ্যাং মুকস্টাইন(Greens) ওমিক্রোনের এই নাটকীয় বিস্তারের ফলে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সর্বত্রই FFP2 মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছেন বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন।

আগামীকাল দেশের করোনা টাস্ক ফোর্সের সাথে বৈঠকের সময় সম্ভবত তিনি এই প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ।এক টুইট বার্তায় জানান, দেশের সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা আগামী সপ্তাহ থেকে অস্ট্রিয়ায় ওমিক্রোনের দৈনিক সংক্রমণ ১৭,০০০ হাজারের উপরে উঠার সতর্কতা দিয়েছেন।

ক্রিসমাস ও নববর্ষের ছুটির পর অস্ট্রিয়ায় আগামী সোমবার ১০ জানুয়ারি থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে।অর্থাৎ স্কুলে মুখোমুখি পাঠদান কার্যক্রম।তবে করোনার সংক্রমণের বিস্তারের এই ঊর্ধ্বগতি সরকার এবং অভিভাবকদের চিন্তিত করে তুলেছে।সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে অস্ট্রিয়ার নবগঠিত করোনার টাস্ক ফোর্স GECKO ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের বৈঠকের পর কি সিদ্ধান্ত আসে তা জানার জন্য।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিদিনের যৌথ নিয়মিত করোনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৯,৭৬১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন।আক্রান্তদের শতকরা ৭০ শতাংশই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রোনে আক্রান্ত।

আজ রাজধানী ভিয়েনায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩,১৯১ জন। যা করোনা মহামারী শুরুর পর সর্বোচ্চ সংখ্যক। অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে Salzburg রাজ্যে ১,৫৮৭ জন,Tirol রাজ্যে ১,৪১৩ জন, NÖ রাজ্যে ১,২৬৩ জন, OÖ রাজ্যে ১,০২৯ জন, Steiermark রাজ্যে ৬৭৫ জন, Vorarlberg রাজ্যে ৩২৭ জন, Kärnten রাজ্যে ১৫৫ জন এবং Burgenland রাজ্যে ১২১ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ সমগ্র অস্ট্রিয়াতে করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৫,১২৭ জনকে এবং তৃতীয় বা করোনার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৬,০৮০ জন। অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকার দুই ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৬২,৭৯,৯১৩ জন,যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭০,৩ শতাংশ।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩,০৪,০৮৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৩,৮০২ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ১২,৪৫,২৯৪ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪৪,৯৯০ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৩০৯ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১,০১০ জন।বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »