মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী সৈন্য আহত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গতকাল শনিবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।তারা আরও জানিয়েছে, আহত তিনজনের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত কয়েকমাসের মধ্যে “মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে” (Central African Republic) নিয়োজিত জাতিসংঘের বহুমাত্রিক সমন্বিত স্থিতিশীলতা মিশনের (MINUSCA) শান্তিরক্ষীরা এ নিয়ে পরপর চার বার গাড়ির নীচে রাস্তায় পুতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন।

গত পড়শু শুক্রবার সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের (সিএআর) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বোহং-এই ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে গতকাল শনিবার দেশটিতে অবস্থিত জাতিসংঘ মিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একই ধরনের ঘটনায় তিন তানজানিয়ার শান্তিরক্ষী সৈন্য আহত হয়েছেন।জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেলের বিশেষ প্রতিনিধি এবং MINUSCA-এর প্রধান মানকেউর এনদিয়ায়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বাংলাদেশ ও তানজানিয়ার ছয় শান্তিরক্ষীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

MINUSCA মিশন প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির দ্বারা অজ্ঞাত ডিভাইস বিস্ফোরক ব্যবহারের তীব্র নিন্দা করেছেন।

তাছাড়াও গত নভেম্বরে, মিশনের একটি গাড়ির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির গার্ডের উপাদানগুলির দ্বারা একটি দুর্বৃত্ত হামলায় বাঙ্গুইতে ১০ জন নিরস্ত্র মিশরীয় নীল হেলমেট সৈন্য আহত হয়েছিল৷

এএফপির খবরে আরও বলা হয়েছে, রাজধানী বাঙ্গুই থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের গোলযোগপূর্ণ ওহাম-পেন্ডে প্রদেশের থেকে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী সৈন্যকে হেলিকপ্টারে করে বোয়ার শহরে অবস্থিত শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের শান্তি মিশনের সদর দফতরও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। হামলার জন্য দেশটির সশ্রস্ত্র বিদ্রোহী দলগুলো দায়ী বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও কোনো গোষ্ঠী এখনও দায় স্বীকার করেনি।

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত মাইন বিস্ফোরণে দুই নারী ও পাঁচ বছরের এক শিশুসহ অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। ৫০ লাখ জনসংখ্যার এ দেশটি পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ। বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনী লড়াই করছে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকে ১৪,০০০ হাজারেরও বেশী বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সৈন্যরা এই শান্তিরক্ষী বাহিনীর মিশনে কর্মরত আছেন।২০১৪ সাল থেকে এখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানত দেশটির খ্রিষ্টান এবং মুসলিম মিলিশিয়াদের মধ্যে মারাত্মক আন্তঃ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের এই গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশে কয়েক শতাধিক বাংলাদেশী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত আছেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »