ভোলার লালমোহনে জমে উঠেছে শীতের পুরাতন পোশাকের দোকান

জাহিদুল ইসলাম দুলাল, লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার   লালমোহনের বিভিন্ন  গ্রামের হাট বাজার গুলোতে বসছে পুরানো শীতের পোশাকের দোকান।নিম্ন আয়ের  মানুষের এক মাত্র ভরসা এই সব দোকানে।ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আর ছয় ঋতুর মধ্যে পৌষ ও মাঘ মাসকে শীতকাল বলা হয়। তবে অগ্রহায়ণ মাস থেকেই ধীরে ধীরে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি হতে থাকে। আর শীতের সময়ে হিমশীতলতা ও ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচতে উষ্ণ পোশাকের প্রতি জনসাধারণের কদর বেড়ে যায়।
অগ্রহায়ণের শেষ সপ্তাহে দেশে শীতের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তাই বেড়েছে উষ্ণ পোশাকের কদর। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নতুন পোশাক ক্রয়ের সামর্থ্য থাকলেও সে সাধ্য নেই নিন্মবিত্তের ভাগ্যে। তাই তারা ভীড় করছেন ফুটপাতে বসা পুরোনো পোশাকের দোকানে। গজারিয়া বাজারে বসছে পুরানো শীতের দুইটি পোশাকের দোকান। পৌরসভার বাজারের স্বর্ণকার পট্টিতে বসেছে পুরোনো পোশাকের তিনটি দোকান। ওইসব দোকান ঘুরে দেখা গেছে শীতে উষ্ণতা খোঁজা ক্রেতাদের ভীড়।এই ছাড়াও আবু গন্জ্ঞ, কর্তার হাট, লর্ড হার্ডিঞ্জ, মঙ্গলসিকদার,বদরপুর, বাংলাবাজার,রায় চাঁদ বাজার,চৌমুহনী এই সব বাজারে ঘুরে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের ভীড়।
মাইনুদ্দিন নামের এক ক্রেতা পোশাক ঘেঁটে ঘেঁটে জেকেট দেখছিলেন।আলাপকালে মাইনুদ্দিন জানান, তিনি পেশায় রিক্সাচালক।গত তিন চার দিনের হিমশীতল বাতাস আর শীতের কারণে রাতে যাত্রী বহন করতে পারছেন না।আর শীত থেকে রক্ষা পেতে নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য ও তার নেই। তাই অল্প দামে পুরোনো পোশাকের দোকানে এসেছেন জেকেট ক্রয় করতে।
এখান থেকে যে শুধু নিন্ম আয়ের মানুরাই পোশাক ক্রয় করেন, তাও নয়। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাও আসেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন ক্রেতা বলেন, ভাই কথায় আছে “রসিক ভাতেও মরে, শীতেও মরে”।নতুন পোশাকের দোকানে বেশী দামে শীতের পোশাক কিনলেও তা দিয়ে শীত রক্ষা হয়না।তাই নতুন পোশাকের ভিতরে উষ্ণ কাপড় পরতে এ দোকানে আসা। পাতলা সোয়েটার নিয়েছি, দামও সাধ্যের মধ্যে।
আমেনা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে উষ্ণ পোশাক কিনতে এসেছেন। তিনি জানান, মেয়েকে নতুন পোশাক কিনে দিয়েছি। দাম বেশী, মান ভালো।তবে শীত রক্ষা হয়না।তাই পাতলা দেখে গরম কাপড় খঁছছি। যাতে নতুন পোশাকের ভিতরে পরা যায়।পুরোনো পোশাকের দোকানী কাজী হিরণ বলেন,  জেকেট, সোয়েটার, হুডি, মাফলার, কানটুপি, ট্রাউজারসহ নানা রকমের গরম কাপড় রয়েছে তার দোকানে।
তবে এখনো ক্রেতা সমাগম বাড়েনি। ধীরে ধীরে শীত বাড়বে, ক্রেতাও বাড়বে।একই দোকান মালিক কাজী জাফর জানান, এবারের শীতে বিক্রির জন্য ১৮টি গাইড এনেছেন তিনি। যার প্রতিটি গাইডের দাম প্রায় ১৫হাজার টাকা করে। তবে পোশাকের মান অনুযায়ী গাইডের দাম ২২ থেকে ২৫হাজার টাকাও রয়েছে।
পুরাতন পোশাকের দোকানী সিদ্দিক জানান, দোকান বসেয়েছি প্রায় মাসখানেক আগে। প্রতিদিন ইজারাদারকে ৫০টাকা খাজনা পরিশোধ করতে হয়। পুরোপুরি শীত না নামায় আশানুরূপ বেচা না হওয়ায় সেটাও পকেট থেকে দিতে হয়েছে। তবে গত তিন চারদিন শীত বেড়েছে। তাই ক্রেতাও আসতে শুরু করেছে।
পুরোনো এসব কাপড়ের ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তাও রয়েছে। কারণ বেশী দামে গাইড কিনে যাতায়াত খরচ দিয়ে আশানুরূপ বেচা বিক্রি না হলে লোকসানে পড়তে হয়।দোকান খরচ, নিজেদের পারিশ্রমিকও জোটে না।যেমন গত বছর শীতের প্রকোপ বেশীদিন না থাকায় সেসব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান দোকানীরা।
ভোলা/ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »