ইংল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তার ইরফান হালিমের মৃত্যুবরণ

করোনা ইউনিটের ডাক্তার ইরফান হালিম করোনার প্রতিষেধক টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নেয়ার পর বুস্টার ডোজ গ্রহণের কয়েকদিন পূর্বে করোনায় মারা গেলেন।

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বৃটিশ সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন করোনার প্রতিষেধক টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণের পর বুস্টার টিকা গ্রহণের সময়ের অল্পকিছু পূর্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে মারা যান ডাক্তার ইরফান হালিম।ইরফান হালিম একজন বৃটিশ নাগরিক হলেও তিনি আমাদের উপমহাদেশের বংশোদ্ভূত। সংবাদ মাধ্যম অবশ্য তিনি কোন দেশের বংশোদ্ভূত সেটা বলে নি।

সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী ডা.ইরফান হালিম তার হাসপাতালে অনেক করোনা রোগীর জীবনের জন্য লড়াই করেছিলেন। অবশেষে তিনি নিজেই নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গুরুতর করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।বৃটিশ সংবাদ মাধ্যম তার মৃত্যুর পর করোনার তৃতীয় ডোজের প্রয়োজনীয়তার কথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন।

সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান যাদের করোনার প্রতিষেধক টিকার দ্বিতীয় ডোজ সর্বোচ্চ ছয় মাস হয়ে গেছে,তাদের অবশ্যই দ্রুত করোনার প্রতিষেধক টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করা উচিত। যাদের দুইবার টিকা নেওয়া হয়েছে তাদের জন্য টিকা সুরক্ষা কম হওয়ার জন্য পরিচিত – ভাইরোলজিস্ট এবং রাজনীতিবিদরা এইজন্য প্রতিদিন করোনার তৃতীয় বা বুস্টার টিকা দেওয়ার গুরুত্বের উপর জোর দেন।

এই ঘটনাটি গ্রেট ব্রিটেনের জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা আখ্যায়িত করে বৃটিশ সংবাদ মাধ্যম জানায় যে, করোনার প্রতিষেধক টিকার তৃতীয় ডোজ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।ইংল্যান্ডের সুইন্ডনে (লন্ডন থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে) একজন ডাক্তার ডাবল টিকা দেওয়ার পরেও মারা গেছেন, যেমনটি ব্রিটিশ মিডিয়া রিপোর্ট করেছে এবং তার তৃতীয় টিকা দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে। ডা. ইরফান হালিম নিজে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করেছেন এবং তার হাসপাতালে মহামারীর সাথে লড়াই করেছেন।তিনি ইংল্যান্ডের করোনা মহামারীর উত্তাল তরঙ্গের সময় মাসের পর মাস পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হাসপাতালেই কাটিয়েছিলেন।

বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানায়,ডাক্তার ইরফান হালিম গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ইংল্যান্ডের Swindon হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসা সেবা দেয়া অবস্থায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে পড়েন।পরে তিনি নিজেই তার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি দেন।

ডাক্তার ইরফান হালিম ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন।মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।ইরফান হালিমের মৃত্যুর পর তার ভাই ডাক্তার আমির, যিনি নিজেও পেশায় একজন চিকিৎসক বিবিসিকে বলেন,বর্তমানে ইউরোপে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের বিস্তার অত্যন্ত দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত বৃটেনেও পুনরায় করোনার নতুন সংক্রমণ বাড়ছে। করোনা ভাইরাসটি কাউকে পরোয়া করে না।তাই তিনি সকলকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে চলাফেরার পরামর্শ দেন।

ডাক্তার আমির বিবিসিকে আরও জানান,আমাদের বাবাও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসেই ইংল্যান্ডে মৃত্যুবরণ করেছেন।মাত্র অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে বাবা ও ছেলে তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।ডাক্তার ইরফান হালিমের বড় ভাই ডাক্তার আমির আরও বলেন,“আমরা আশা করেছিলাম যে ইরফান হালিম বয়স অল্প হওয়ায় করোনা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। ডাক্তার আমির আরও বলেন আমার ছোট ভাই ডাক্তার ইরফান একজন ফিট এবং সুস্থ যুবক ছিলেন।

তিনি তার মৃত ভাইকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: “আমি নিশ্চিত করব যে তার দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে বড় হয়ে জানবে যে তাদের বাবা কতটা মহান ব্যক্তি ছিলেন।”

কবির আহমেদ /ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »