স্পোর্টস ডেস্ক: ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই সফরকারী পাকিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে গেছে বাংলাাদেশ।
শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে পরাজিত হয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম ম্যাচ ৪ উইকেটে হেরেছিলো টাইগাররা।
এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জবাবে ১১ বল বাকী রেখে ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় পাকিস্তান।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচের মত আজও ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও সাইফ হাসান। ২ ওভারের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন নাইম-সাইফ। নাইম ৮ বলে ২ ও সাইফ ১ বল খেলে শুন্য রান ফিরেন। ৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন। দ্রুত রান তুলেছেন দু’জনে। পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রান পায় বাংলাদেশ।
খেলার নবম ওভারের প্রথম বলে শান্ত-আফিফের জুটি ভাঙ্গেন পাকিস্তানের স্পিনার শাদাব খান। ১টি করে চার-ছক্কায় ২১ বলে ২০ রান করেন আফিফ। তৃতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৪৬ রান তুলেন শান্ত ও আফিফ। আফিফের বিদায়ের পর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সাথে আরও একটি জুটি গড়ার চেষ্টা করেন শান্ত। ভালো শুরুর পরও বড় জুটি গড়তে পারেননি তারা। ১৩তম ওভারে মাহমুদুল্লাহর বিদায় ঘটে। পেসার হারিস রউফের বলে আউট হবার আগে ১টি চারে ১৫ বলে ১২ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। পরের ওভারেই দারুন খেলতে থাকা শান্তকে আউট করেন শাদাব। ৫টি চারে ৩৪ বলে ৪০ রান করেন শান্ত।
শান্তর ফিরে যাওয়ায় উইকেটে আসেন মাহেদি হাসান। ৮ বলে ৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি নুরুল হাসান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৮ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ৮ ও তাসকিন আহমেদ ২ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের আফ্রিদি ১৫ রানে ও শাদাব ২২ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে ১০৯ রানের সহজ টার্গেট পায় পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যে স্পিনার মাহেদির করা ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন পাকিস্তানের ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। পরের ওভারে পেসার তাসকিনকেও বাউন্ডারি হাকান রিজওয়ান। তবে তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশকে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতান পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমকে বোল্ড করেন ফিজ।
শুরুতেই অধিনায়ককে হারানোর পর সতর্ক হয়ে পড়েন রিজওয়ান ও তিন নম্বরে নামা ফখর জামান। তাদের সতর্কতায় পাওয়ার প্লেতে ২৭ রান পায় পাকিস্তান। ১০ ওভার শেষে রান ৫০। এরপর রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন রিজওয়ান ও জামান। তবে ১২তম ওভারে জীবন পান জামান। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন জামান। ডিপ উইকেটে ক্যাচ নেয়ার সুযোগ পেয়েও সেটি হাতছাড়া করেন সাইফ। জীবন পেয়ে আর পেছনে ফিরে তাকাননি জামান। ৪০তম বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন জামান।
হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া জামানের সাথে ম্যাচ শেষ করার পথেই ছিলেন রিজওয়ান। কিন্তু দলীয় ৯৭ রানে রিজওয়ানকে শিকার করেন বিপ্লব। এবার ক্যাচ মিস করেননি সাইফ। ৪টি চারে ৪৫ বলে ৩৯ রান করে আউট হন রিজওয়ান। দ্বিতীয় উইকেটে রিজওয়ান-জামান ৭৮ বলে ৮৫ রান তুলেন।
রিজওয়ানের বিদায়ে উইকেটে আসেন হায়দার আলি। তখন জয়ের জন্য ২৭ বলে ১২ রান প্রয়োজন ছিলো পাকিস্তানের। সেই কাজটুকু নিরাপদেই সাড়েন জামান ও হায়দার। ৫১ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৫৭ রান করেন জামান। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন হায়দার।
আগামী ২২ নভেম্বর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
ডেস্ক/ইবিটাইমস/এমএইচ