স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান।
বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ সরকারও করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজের কথা চিন্তা-ভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার পরে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সৌদি আরবের ১৫ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ডোজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের বুস্টার ডোজ টিকা দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘যদি বুস্টার ডোজের কখনও প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা অবশ্যই দেব। এটা শুধু প্রবাসী নয়, বাংলাদেশেও যখন আমরা সবাইকে টিকা দিয়ে ফেলতে পারব তখন।
মোটামুটি একটা পর্যায় গেলে তখন আমাদের যে টেকনিক্যাল কমিটি আছে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী করা হবে। এক্ষেত্রে যারা বয়স্ক এবং ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপের তাদের আমরা আগে দেওয়ার কথা চিন্তা করব। যেভাবে অন্যান্য দেশে শুরু হয়েছে আমরাও সেটা চিন্তা-ভাবনা করব।’
ইতিমধ্যে ২১ কোটি ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ১১ কোটি টিকা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৫ লাখ ভ্যাকসিন প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সবাই ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে। ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান থাকবে। ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ায় সংক্রমণের হার কমেছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও চীনের সিনোফার্মের দুই ডোজ টিকা নিয়েও সৌদি গিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সৌদি সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘সৌদি আরবে আমাদের যে রাষ্ট্রদূত আজকেও তার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমাদের যারা এখান থেকে যায় সিনোফার্মের টিকা নিয়ে গেলে তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। অন্য টিকা নিলে থাকতে হচ্ছে না।
আমরা তাদের বললাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব টিকার অনুমোদন দিয়েছে সেগুলো যেন সৌদি অনুমতি দেয়। এটার বিষয়ে তারা আলাপ করছে, এটা তারা দেবে। কিন্তু না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের সৌদি সরকারের নিয়ম মেনেই সেখানে যেতে হবে। এই ব্যাপারে আমাদের অব্যাহত চেষ্টা চলছে।’
করোনার প্রতিষেধক টিকা গ্রহণের এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন,পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও সৌদির কিং সালমান হিউম্যানেটারিয়ান অ্যান্ড রিলিফ সেন্টারের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ওয়াদি।
অনুষ্ঠান সিনোফার্মের টিকার সমস্যা সম্পর্কে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের দূতাবাস থেকেও সহযোগিতা করা হবে এবং আমরা চেষ্টা করছি।
টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘সুখের বিষয় হচ্ছে সৌদি সরকার আমাদের ১.৫ মিলিয়ন টিকা কোনো খরচ ছাড়াই উপহার দিয়েছে। তাছাড়া ১ মিলিয়ন ডলারের অন্যান্য যন্ত্রপাতি দিয়েছে। সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের রক সলিড সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে আমাদের অনেক দিক থেকে সম্পর্ক বেড়েছে। তারা আমাদের ডেভলমপেন্ট পার্টনার।’
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও সৌদির কিং সালমান হিউম্যানেটারিয়ান অ্যান্ড রিলিফ সেন্টারের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ওয়াদি উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আজ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৭ হাজার ৯২৮ জন। এ সময় ২১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৪৮ জন।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস