২০০ সেনা সদস্য জ্বালানি পরিবহনে ট্রাক বা লরি চালক হিসাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছে বৃটেনের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম
ইউরোপ ডেস্কঃ বৃটেনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেলের মজুদ থাকলেও লরি চালকের অভাবে তা পেট্রোল পাম্পে সরবরাহ করা না যাওয়ায় অনেক পেট্রোল পাম্প স্টেশন বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বর্তমান বৃটেনে প্রায় ১,০০,০০০ এক লাখ লরি ড্রাইভারের ঘাটতি রয়েছে।সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন এই স্বল্প সংখ্যক সেনা মোতায়েনে সমস্যার অতি দ্রুত সমাধান সম্ভব নয়।লরি চালকের অভাবে জ্বালানি তেলের সাথে সাথে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর সরবরাহে ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এএফপি আরও জানিয়েছে, বৃটেন জরুরী ভিত্তিতে ৫,০০০ হাজার ট্রাক ও লরি ড্রাইভার খুঁজছে।ব্রিটেনের জরুরী নিয়োগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইইউ থেকে সে পরিমাণে সাড়া পাওয়া যায় নি।
জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় ট্যাঙ্কার ট্রাক ড্রাইভার নিয়োগে বড় সমস্যা রয়েছে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ম্যানচেস্টারে কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলনে গতকাল মঙ্গলবার বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত বিশেষ পারমিটের বিশেষ কোটার জন্য ইইউ থেকে মাত্র ১২৭ টি আবেদন পেয়েছে। যা পরিকল্পিত বিশেষ ভিসার অর্ধেকেরও কম।
তীব্র ট্রাক ও লরি চালকের ঘাটতির বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা হিসেবে সরকার বিদেশি চালকদের জন্য ৫ হাজার স্বল্পমেয়াদী ভিসা প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।যার মধ্যে ট্যাঙ্কার চালকদের জন্য ৩০০ শত নির্ধারিত করা হয়েছে।তবে এই ভিসার সময় মেয়াদ খুবই সীমিত যা শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বৈধ বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রিটিশ সংবাদপত্র “দ্য টাইমস” এর সমালোচনা করে বলেন পত্রিকাটি আবেদন ১২৭ টির জায়গায় মাত্র ২৭ টি উল্লেখ করেছে। তিনি আরও জানান সম্প্রতি বৃটিশ পরিবহন মন্ত্রণালয় ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫ হাজার অস্থায়ী কাজের ভিসা প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে।
জনসন বলেন, কম সংখ্যক আবেদনের ফলে ব্রিটেনে জ্বালানি সংকটের অন্তর্গত একটি “সমস্যার চমৎকার চিত্র”। সরকার মালবাহী ফরোয়ার্ডদের বলেছিল: “আপনি যে ড্রাইভারদের এখানে আনতে চান তাদের নাম দিন এবং আমরা ভিসার যত্ন নেব।” তবে তারা কোটা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত প্রার্থীর নাম জানায়নি।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে বৃটেনের পেট্রোল স্টেশনে সরবরাহ সমস্যা দূর করতে সোমবার থেকে লন্ডন এবং দক্ষিণ ইংল্যান্ডে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে সারা দেশে গ্যাস পাম্পগুলিতে দীর্ঘ সারি তৈরি হচ্ছে কারণ পেট্রলটি শোধনাগার থেকে দ্রুত ডেলিভারি পয়েন্টে পৌঁছায় না। এর কারণ ট্রাক চালকদের অভাব। তাছাড়াও ট্রাক চালকের অভাবে অসংখ্য সুপার মার্কেটে তাকও খালি রয়েছে।
তাছাড়াও বৃটিশ সংবাদ মাধ্যম আরও জানান শ্রমিক সঙ্কটের কারনে ব্রিটেনে কসাইদের তীব্র ঘাটতি এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে।কৃষকেররা এখন নিজেরাই পশু কাটা শুরু করেছে। বৃটিশ পশু সমিতি বা অ্যাসোসিয়েশন সরকারকে সতর্ক করেছেন যে শীঘ্রই আরও কর্মী নিয়োগ না করা হলে বৃটেনের কসাইখানা থেকে মাংস আসা অস্বাভাবিক হ্রাস পেতে পারে।সমিতির একজন মুখপাত্র বলেন,গ্রেট ব্রিটেনে মাংস প্রক্রিয়াকরণ সহ অনেক শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে।
এটি ব্রেক্সিটের পরিণতির কারণেও, কারণ বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপ থেকে অনেক শ্রমিক করোনা মহামারীর সময় দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল। এখন নতুন কঠোর অভিবাসন নিয়ম চাকরিপ্রার্থীদের জন্য প্রবেশকে আরও কঠিন করে তুলছে।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর