বজ্রপাতে মৃত্যু হার কমাতে সহায়ক তালগাছ

সাকিব হাসান, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কুমার নদে ১০০০ তাল গাছ রোপন উৎসব।অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশন  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিঃ তারিখ বিকাল ৫ টার সময় আলমডাঙ্গা থানাধীন ওসমানপুর কুমার নদ সংলগ্ন ১০০০ তালগাছ চারা রোপণ উৎসবের আয়োজন করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুযোগ্য পুলিশ সুপার  মোঃ জাহিদুল ইসলাম মহোদয়। পুলিশ সুপার  তাঁর বক্তব্যে বলেন, হাত পাখার শীতল বাতাস থেকে শুরু করে বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ। থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও ৬৪ জেলায় তাল গাছ রোপন করে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।দুই দশক আগে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের আনাচে কানাচে শোভা পেত অসংখ্য তালগাছ। জনশ্রুতি আছে তালগাছে বজ্রপাত হয় বলে নিধন হতে হতে এখন বিলুপ্তপ্রায়।

তিনি আরোও বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তালগাছের উপকারিতা উপলব্ধি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চৈত্রের প্রচন্ড খরতাপে তালের কচিশাস, তালগাছের পাতায় ঝুলে থাকা কারিগর পাখি বাবুইয়ের বাসা, তালপাতার হাত পাকার শীতল বাতাস, ভাদ্রমাসের তালের পিঠা এখন প্রায় অতীত। তালের শাঁসের টুপি প্রচুর পরিমানে তাপ শোষণ করে ও মাথা ঠান্ডা রাখে। শুধু তাই নয় তাল গাছের কোন কিছুই ফেলনা নয়। তালগাছ অনেক দিন বাঁচে, অন্য ফসলের কোন ক্ষতি করে না, মাটির ক্ষয়রোধ করে, তালগাছ ঘর তৈরির উত্তম কাঠ, গাছের ডালের গোড়ার অংশ সেদ্ধ করে যে আঁশ পাওয়া যায় তা অত্যন্ত উন্নতমানের তন্তু, জ্বালানি হিসাবে এর চাহিদা অনেক, স্ত্রী ও পুরুষ জাতীয় তালগাছ একটানা ৯০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১২থেকে ১৫কেজি রস দেয়, যার পাঁচ কেজি রস থেকে এক কেজি উন্নতমানের গুড় তৈরি হয়।তালের রসের কাথ উচ্চমানের মাছ ও গরুর খাবার। তালের আটির উপরি অংশে সুতা খোসা মোজাইক পাথরের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তা ছাড়া তালের রস উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ সু-স্বাদু খাবার।বসতভিটা থেকে নিরাপদ দুরত্বে প্রতি বিঘা জমিতে ৪টি করে তালগাছ রোপন করলে বজ্রপাতসহ নানা দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব। যেহেতু তালগাছ লবনাক্ত পানিতে মরেনা, তাই সমুদ্র তীরবর্তী ভুমিতে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস ও মাটিক্ষয় রোধে সহায়ক ভুমিকা রাখতে পারে। পরিশেষে উক্ত অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে বাড়ির আঙ্গিনায় ও আশেপাশে ধানের চারা রোপণের জন্য আহবান জানান।

উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), মোঃ মুন্না বিশ্বাস, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল), আলমগীর কবির, অফিসার ইনচার্জ, আলমডাঙ্গা থানা, মনিরুজ্জামান, কৃষিবিদ, উপজেলা কৃষি অফিসার, দামুড়হুদা সহ রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন রাজু আহমেদ, সভাপতি অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশন এবং সঞ্চালনা করেন সাহারিয়ার নাফিজ, সাধারণ সম্পাদক, অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা।

চুয়াডাঙ্গা/ইবিটাইমস/এম আর

 

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »