অস্ট্রিয়ার সুপারমার্কেট আগামীকাল থেকে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক

অস্ট্রিয়ার সুপারমার্কেট স্পার,হোফার ও লিডলের ক্যাশে ফ্রি এফএফপি২ মাস্ক পাওয়া যাবে

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ার সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে করোনার চতুর্থ প্রাদুর্ভাবে সরকার প্রাথমিকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল সমগ্র অস্ট্রিয়ায় আগামীকাল থেকে বিভিন্ন দোকানপাট ও সুপারমার্কেটে কেনাকাটায় বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়তে হবে এবং যারা এখনও করোনার প্রতিষেধক টিকা নেয় নি তাদের জন্য কেনা-কাটা,গণপরিবহন সহ সর্বত্র এফএফপি২ মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক।এখানে উল্লেখ্য যে,রাজধানী ভিয়েনা ছাড়া অস্ট্রিয়ার বাকী ৮ টি রাজ্যে গত জুন মাস থেকেই মাস্ক পড়া উঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।

তবে জার্মানির মালিকানাধীন REWE গ্রুপ(Billa, Bipa, Billa Plus, Penny ও ADEG ফ্রি মাস্ক সরবরাহ করবে না। অবশ্য Rewe গ্রুপের এই সমস্ত সুপারমার্কেটে মাত্র ৫৯ সেন্ট দিয়ে FFP2 মাস্ক কিনতে পাওয়া যাবে।তবে Rewe গ্রুপের জনৈক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এপিএ-কে জানিয়েছে বিশেষ প্রয়োজনে অনুরোধে তারাই প্রথমদিকে কিছুদিন ফ্রি এফএফপি২ মাস্ক সরবরাহ করবে।

গত সপ্তাহের সরকারের ঘোষিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী আগামীকাল থেকে রাতের গ্যাস্ট্রোনমি,ডিস্কো,বার, লোকাল ও ফাস্ট ফুডের দোকানে শুধুমাত্র তারাই প্রবেশ করতে পারবে যাদের করোনার প্রতিষেধক টিকা দেয়া আছে।গত সপ্তাহে অস্ট্রিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ফুটবল লীগের সকল ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে করোনার প্রতিষেধক টিকার সনদ ছাড়া কাউকে খেলার মাঠে ও স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এখানে উল্লেখ্য যে,অস্ট্রিয়ার প্রতিটি ক্লাবের নিজস্ব স্টেডিয়াম আছে এবং এর নিয়ন্ত্রণ করেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

এপিএ এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে সুপারমার্কেট স্পারের (SPAR) একজন মুখপাত্র জানান, তারা করোনা মহামারীর শুরু থেকেই গ্রাহকদের বিনামূল্যে মাস্ক দিয়ে আসছে এবং এই ফ্রি মাস্ক সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকবে। “তবে গ্রাহকদের চাহিদা এখন আর বেশি নয়, তাদের বেশিরভাগেরই ইতিমধ্যে মাস্ক রয়েছে বলে জানান তিনি”।

প্রাথমিক বিবৃতির বিপরীতে, REWE (আডেগ, বিল্লা, বিপা, বিল্লা প্লাস, পেনি) লিডল -এর মতো বিনামূল্যেও মাস্ক অফার করবে।

শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে সমালোচনা : সুপারমার্কেটের কর্মচারীদের FFP2 মাস্ক পড়ার সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন অস্ট্রিয়ার জিপিএ ট্রেড ইউনিয়নের অর্থনৈতিক সেক্টর সচিব অনিতা পালকোভিচ।

তিনি স্থানীয় একটি সম্প্রচার কেন্দ্রে এক সাক্ষাৎকারে বলেন,”খাদ্য খুচরা বাণিজ্যে নির্ধারিত করোনা সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে কর্মীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে।” যেহেতু একটি উচ্চ-গড় সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছিল, তাই অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন ত্রাণ করোনার প্রণোধনা। পালকোভিচ আরও বলেন,”এর পরিবর্তে, প্রত্যেককে আবার একটি এফএফপি২ পরতে হবে, যা শারীরিকভাবে কঠোর পরিশ্রমী মানুষের জন্য অত্যন্ত চাপযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে।”

পলকোভিচ এই সত্যেরও সমালোচনা করেছেন যে গ্রাহকদের সংখ্যা সীমাবদ্ধ করা, স্বাস্থ্যবিধি প্রবিধান বা প্লেক্সিগ্লাস প্যানের মতো অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা বর্তমান কোভিড রেগুলেশনে সরবরাহ করা হয়নি।  পলকোভিচ বলেন, “আপনি এই ধারণা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন না যে কর্মীদের একটি বিশেষ চাপে থাকা গোষ্ঠীর ব্যয়ে বিশুদ্ধ প্রতীকী রাজনীতি করা হচ্ছে, যখন মালিক এবং শপিং সেন্টার পরিচালকদের তাদের দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।”

এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ১,৬৯৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৪৫৮ জন। অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে OÖ রাজ্যে ৩৪০ জন, NÖ রাজ্যে ২৪২ জন, Steirmark রাজ্যে ১৮৭ জন, Tirol রাজ্যে ১৫৭ জন, Salzburg ও Vorarlberg রাজ্যে ১০১ জন করে, Kärnten রাজ্যে ৭১ জন এবং Burgenland রাজ্যে ৩৯ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ সমগ্র দেশে করোনার প্রতিষেধক টিকাদান করা হয়েছে মাত্র ৯,০২৯ ডোজ এবং এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকাদানের মোট ডোজের পরিমাণ ১,০৬,৩৪,৫৬৬ ডোজ। অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন ৫৩,০৪,৯৩২ জন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৯,৪ শতাংশ।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭,১৩,২৬৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১০,৮৪৯ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন ৬,৮১,০১৪ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২১,৪০৬ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২০০ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮০৫ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস /এম আর

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »