ভিয়েনা ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত ১০,আহত ১২ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে হাদিকে নির্বাচনি অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি গঠন করল ইসি সব রাজনৈতিক দলেকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে অন্তর্বর্তী সরকার: প্রেস উইং ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর টোকিওগামী ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমানের ওয়াশিংটনে জরুরি অবতরণ টাঙ্গাইলের মাভাবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত দিনমজুরের অসুস্থ স্ত্রী ইয়ানুর বেগম বাঁচতে চান হাদীকে বিদেশে নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে : চিকিৎসক নাগরপুরে বিএনপি’র কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত  ওসমান হাদির ওপর গুলির প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০২:১৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
  • ২৩ সময় দেখুন

পিরোজপুর প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সুন্দরবন সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। চার বছর আগে ২০১৭ সালে ২৮ জুলাই মুক্তিযুদ্ধে কিংবদন্তি সেনা নায়ক ৬৮ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

বুধবার (২৮জুলাই) মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর জন্মভূমি পিরোজপুরে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

মরহুমের প্রতিষ্ঠিত আফতাব উদ্দিন কলেজের উদ্যোগে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে এ দিন সকাল ১০টায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে কলেজ প্রাঙ্গণে মরহুমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, পারিবারিক ও বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে কোরআন খতম, দোয়া ও মোনাজাতসহ বিভিন্ন সংগঠন ভার্চুয়াল দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেছে।

এছাড়া বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে সন্ধ্যায় বিশেষ প্রার্থনা। পরিবারের পক্ষ থেকে তার সহধমির্ণী কানিজ মাহমুদা আহমেদ এবং ছোট ভাই দুবলা ফিশার মেন গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

মেজর জিয়াউদ্দিন ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২০ মার্চ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটিতে পিরোজপুরে বাড়িতে আসেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ৯নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিলের সাথে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। জিয়া উদ্দিন সুন্দরবন এলাকায় কবির আহমেদ মধুসহ অন্যান্যদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলেন। মূলত তখন তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত সংঘটিত হতে থাকেন। তখন মেজর জিয়াউদ্দিন ভারত থেকে অস্ত্র নিয়ে এলে সুন্দরবন এলাকা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেকটাই মুক্তাঞ্চলে পরিনত হয়।

এরপর মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে পিরোজপুর ও বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে একাধীক অপারেশন চালিয়ে পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তবে জিয়াউদ্দিন আবার আলোচনায় আসেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ৭ নভেম্বর পরবর্তী সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করার ঘটনায়। রক্তাক্ত আগস্টে তিনি ডিজিএফআই ঢাকা ডিটাচমেন্টের প্রধান হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের পরবর্তী ৩ ও ৭ নভেম্বরের ঘটনার পর তিনি বীর উত্তম তাহেরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঠাঁই নেন নিজের হাতে মুক্তকরা সুন্দরবন অঞ্চলে। ৭ নভেম্বরের ঘটনার পর ওই সময়ের রাষ্ট্রপ্রধান জিয়াউর রহমানের কমান্ডকে তিনি সম্পূর্নরূপে অমান্য করেন। আর এ ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করে তাহেরের সাথে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

সুন্দরবন থেকে গ্রেফতারের সময় তৎকালীন সরকারের নির্দেশে তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। ১৯৭৬ সালে বিশেষ সামরিক ট্রাইবুনালে যে প্রহসনের গোপন মামলায় বীর উত্তম কর্নেল (অব:) আবু তাহেরের ফাঁসি হয়, সেই মামলায় মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তিনি সাধারন ক্ষমায় জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি পিরোজপুর পৌর সভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।

লাহেল মাহমুদ/ ইবিটাইমস/ এম আর/আরএন

জনপ্রিয়

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত ১০,আহত ১২

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আপডেটের সময় ০২:১৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১

পিরোজপুর প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সুন্দরবন সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। চার বছর আগে ২০১৭ সালে ২৮ জুলাই মুক্তিযুদ্ধে কিংবদন্তি সেনা নায়ক ৬৮ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

বুধবার (২৮জুলাই) মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর জন্মভূমি পিরোজপুরে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

মরহুমের প্রতিষ্ঠিত আফতাব উদ্দিন কলেজের উদ্যোগে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে এ দিন সকাল ১০টায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে কলেজ প্রাঙ্গণে মরহুমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, পারিবারিক ও বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে কোরআন খতম, দোয়া ও মোনাজাতসহ বিভিন্ন সংগঠন ভার্চুয়াল দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেছে।

এছাড়া বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে সন্ধ্যায় বিশেষ প্রার্থনা। পরিবারের পক্ষ থেকে তার সহধমির্ণী কানিজ মাহমুদা আহমেদ এবং ছোট ভাই দুবলা ফিশার মেন গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

মেজর জিয়াউদ্দিন ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২০ মার্চ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটিতে পিরোজপুরে বাড়িতে আসেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ৯নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিলের সাথে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। জিয়া উদ্দিন সুন্দরবন এলাকায় কবির আহমেদ মধুসহ অন্যান্যদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলেন। মূলত তখন তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত সংঘটিত হতে থাকেন। তখন মেজর জিয়াউদ্দিন ভারত থেকে অস্ত্র নিয়ে এলে সুন্দরবন এলাকা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেকটাই মুক্তাঞ্চলে পরিনত হয়।

এরপর মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে পিরোজপুর ও বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে একাধীক অপারেশন চালিয়ে পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তবে জিয়াউদ্দিন আবার আলোচনায় আসেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ৭ নভেম্বর পরবর্তী সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করার ঘটনায়। রক্তাক্ত আগস্টে তিনি ডিজিএফআই ঢাকা ডিটাচমেন্টের প্রধান হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের পরবর্তী ৩ ও ৭ নভেম্বরের ঘটনার পর তিনি বীর উত্তম তাহেরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঠাঁই নেন নিজের হাতে মুক্তকরা সুন্দরবন অঞ্চলে। ৭ নভেম্বরের ঘটনার পর ওই সময়ের রাষ্ট্রপ্রধান জিয়াউর রহমানের কমান্ডকে তিনি সম্পূর্নরূপে অমান্য করেন। আর এ ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করে তাহেরের সাথে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

সুন্দরবন থেকে গ্রেফতারের সময় তৎকালীন সরকারের নির্দেশে তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। ১৯৭৬ সালে বিশেষ সামরিক ট্রাইবুনালে যে প্রহসনের গোপন মামলায় বীর উত্তম কর্নেল (অব:) আবু তাহেরের ফাঁসি হয়, সেই মামলায় মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তিনি সাধারন ক্ষমায় জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি পিরোজপুর পৌর সভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।

লাহেল মাহমুদ/ ইবিটাইমস/ এম আর/আরএন