অস্ট্রিয়ার প্রথম রাজ্য হিসাবে Salzburg রাজ্য পুনরায় করোনার “লাল জোন”এর সন্নিকটে

ইউরোপ ডেস্কঃ ভিয়েনায় আজ বৃহস্পতিবার করোনার টাস্ক ফোর্সের সাথে সরকারের বৈঠকের পর আপাতত কোন নতুন কোন বিধিনিষেধ আরোপ না করার সিদ্ধান্ত।

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা থেকে প্রকাশিত ফ্রি মেট্রো পত্রিকা Heute তাদের বিকালের অনলাইন প্রকাশনায় অস্ট্রিয়ার করোনার লাইট কমিশনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে,অস্ট্রিয়ার পশ্চিমের রাজ্য Salzburg এখন প্রথম রাজ্য হিসাবে পুনরায় করোনার “লাল জোন “এর কাছাকাছি অবস্থানে চলে এসেছে। সংবাদে বলা হয়েছে সাম্প্রতিককালে এই রাজ্যে করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের বিস্তার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।

অস্ট্রিয়ার করোনা লাইট কমিশনের সূত্র জানিয়েছেন বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় প্রতি ১,০০,০০০ লাখ জনপদে করোনার সংক্রমণ ২৬,৮ জন। অস্ট্রিয়ার রাজ্য সমূহের মধ্যে Salzburg রাজ্যে সংক্রমণের বিস্তার অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত ৮ জুলাই Salzburg রাজ্যে প্রতি ১,০০,০০০ লাখ জনপদে করোনার সংক্রমণ ছিল ৪,৮ জন। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ জুলাই তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২,৮ জনে। আজ বৃহস্পতিবার ২২ জুলাই নাটকীয়ভাবে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১,৪ জনে।

পত্রিকাটি আরও জানায় এই রাজ্যের পিনজগাউ এবং পঙ্গাও (সেন্ট জোহান) জেলায় নতুন করে করোনার এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই দুই জেলায় প্রতি ১,০০,০০০ লাখ জনপদে বর্তমানে সংক্রমণ যথাক্রমে ১৮০,৩ ও ৯৩,৪।

করোনার লাইট কমিশনের সূত্র জানিয়েছেন এই সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ট্রিয়ায় পর্যবেক্ষণের জন্য লাইট সিস্টেম ঘোষণা এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে বেসরকারীভাবে অস্ট্রিয়ার Salzburg রাজ্য করোনার লাল জোনের একেবারেই দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। রাজধানী ভিয়েনা বর্তমানে করোনার হলুদ জোনেই অবস্থান করছে।

অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যকে এই সপ্তাহে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যেমন Tirol,Vorarlberg ও Steiermark এ এখন প্রতি এক লাখ জনপদে সংক্রমণ ২৫ জনের বেশী। তাই এই তিন রাজ্যও ইইউর নির্দেশনা মোতাবেক করোনার হলুদ জোন। তাছাড়াও Kärnten ও OÖ রাজ্য হলুদ জোনের প্রায় কাছাকাছি অবস্থান করছে। অস্ট্রিয়ার রাজ্য সমূহের মধ্যে শুধুমাত্র Burgenland ও Niederösterreich (NÖ) রাজ্য এখনও হলুদ-সবুজ জোন মিলে অবস্থান করছে।

এদিকে অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছেন, আজ সরকারের নীতি নির্ধারকদের সাথে দেশের করোনা টাস্কফোর্সের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের পর সরকার করোনার সংক্রমণ গত মে মাসের পর পুনরায় সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছালেও আপাতত কোন বিধিনিষেধ আরোপ করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অস্ট্রিয়ান সরকারের একটি সূত্র সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, দেশের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্স বর্তমান পরিস্থিতিটি “পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন” করার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন। সূত্র আরও জানিয়েছেন আজ ২২ জুলাই থেকে অস্ট্রিয়ায় করোনার বিধিনিষেধে আরও শিথিলতা থাকবে।

সূত্র আরও জানায়, শুধুমাত্র ভিয়েনা রাজ্য ব্যতীত অন্যান্য রাজ্যে দোকানপাটে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক প্রত্যাহার করা হয়েছে। যা অস্ট্রিয়ান সরকার এই মাসের প্রথমেই ঘোষণা করেছিল। তবে ভিয়েনায় দোকানপাটে মাস্ক পড়া এখনও অব্যাহত বাধ্যতামূলক থাকবে বলে গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন রাজ্যের গভর্নর ও ভিয়েনা সিটি মেয়র মিখাইল লুডভিগ।

আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৪৫২ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ১২৩ জন। অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে Salzburg রাজ্যে ৯৫ জন, Steiermark রাজ্যে ৬০ জন,NÖ রাজ্যে ৫৬ জন, OÖ রাজ্যে ৪৭ জন, Tirol রাজ্যে ৩২ জন, Kärnten রাজ্যে ২১ জন, Vorarlberg রাজ্যে ১৬ জন এবং Burgenland রাজ্যে ২ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ দেশে করোনার প্রতিষেধক টিকা প্রদান করা হয়েছে ৬৪ হাজার ২১৭ ডোজ এবং এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকা দেয়া হয়েছে ৯১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৮ ডোজ। এই পর্যন্ত ৪১ লাখ ৮০ হাজার ২৬ জন করোনার প্রতিষেধক টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন। যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৬,৯ শতাংশ।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৫৫,১৯৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১০,৭৩০ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ৬,৪০,২০২ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪,২৬৫ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২৬ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১০২ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »