ইউরো কাপের ফাইনালে রাতে মাঠে নামছে ইতালি-ইংল্যান্ড

ইউরোপ ডেস্কঃ আজ রবিবার ১১ জুলাই মধ্য ইউরোপীয় সময় রাত ৯ টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলার বাঁশি বাজবে তৈরী হয়ে রয়েছে ইউরো-২০২০ ফুটবর ফাইনাল খেলার মঞ্চ। উত্তেজনার ডালি সাজিয়ে অপেক্ষায় ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম।

লন্ডনের ঐতিহাসিক এই মাঠেই আজ রাত ৯ টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১ টা) ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটের লড়াইয়ে নামবে ইতালি ও ইংল্যান্ড। পাঁচ বছরের (করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর বেশি লেগেছে) অপেক্ষা শেষে ২৪ দলের টুর্নামেন্টের সেরা কে হচ্ছে- আজ রাতেই তা জানা যাবে। ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ড জয়লাভ করলে ঐতিহাসিক এই জয়কে উপভোগ করার জন্য বৃটিশ সরকার আগামীকাল দেশে সাধারণ সরকারী ছুটি ঘোষণার  প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। অন্যদিকে ইতালিও অপরাজিত অবস্থায় শিরোপা লাভ করতে পারলে দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।

 আজ রবিবার ওয়েম্বলির ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইতালি-ইংল্যান্ড। এবারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ যেহেতু লন্ডনে, তাই ইংলিশরা স্বাগতিক দল হিসেবে বাড়তি সুবিধা পাবে। নিজেদের দর্শকে উত্তাল গ্যালারির সমর্থন সেমিফাইনালে তারা পেয়েছে, ফাইনালে যে উন্মাদনা আরও বাড়ছে, বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই বলে ইতালি পিছিয়ে নেই। দর্শক সমর্থনে অবস্থা যাই হোক, পারফরম্যান্সের বিচারে সেরা ইউরো কাটাচ্ছে আজ্জুরিরা।

 যদিও সেমিফাইনালে দুই দলকেই দিতে হয়েছে কঠিন পরীক্ষা। গ্রুপ পর্ব ছিল আর অন্যরকম। ইতালি ও ইংল্যান্ড সব বাধা পেরিয়ে কীভাবে ফাইনালে জায়গা করে নিলো সেই পথটা দেখে নেওয়া যাক- ইতালির ফাইনাল পথ গোল উৎসব করে ইউরো ২০২০ শুরু ইতালির। তুরস্ককে ৩-০ গোলে হারিয়ে দাপুটে জয়ে আগমনী বার্তা দেয় তারা। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও সমান দাপট, এবারও আজ্জুরিদের জয়টা ৩-০ ব্যবধানে। ওয়েলসের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচটা ১-০ গোলে জিতে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে নকআউট পর্বে উঠে যায় রবের্তো মানচিনির দল।

 গ্রুপ পর্বে দাপট দেখালেও নকআউট পর্বের শুরুতেই কিন্তু কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় ইতালিকে। শেষ ষোলোয় অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জয় পেতে অতিরিক্ত সময়ে যেতে হয়েছিল তাদের। নির্ধারিত সময় গোলশূন্যভবে শেষ হওয়ার পর ২-১ গোলে জিতে শেষ ষোলোর বাধা পার হয় ইতালি।

 কোয়ার্টার ফাইনালে পড়তে হয় তাদের অন্যতম ফেভারিট বেলজিয়ামের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় জর্জিও কিয়েল্লিনিদের। এরপর সেমিফাইনালে টাইব্রেকার নাটক। আরেক ফেভারিট স্পেনের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও স্কোরলাইন থাকে ১-১। ফল নিষ্পত্তির জন্য গড়ানো পেনাল্টি শুটআউটে স্প্যানিশদের ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় ইতালি।

 

গ্রুপ পর্ব: প্রতিপক্ষ তুরস্ক, ৩-০ গোলে জয়ী প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড, ৩-০ গোলে জয়ী প্রতিপক্ষ ওয়েলস, ১-০ গোলে জয়ী

 শেষ ষোলো: প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়া, ২-১ গোলে জয়ী (অতিরিক্ত সময়ে)

 কোয়ার্টার ফাইনাল: প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম, ২-১ গোলে জয়ী

 সেমিফাইনাল: প্রতিপক্ষ স্পেন, ১-১ (অতিরিক্ত সময়ে) ৪-২ গোলে জয়ী (টাইব্রেকারে) ইংল্যান্ডের ফাইনাল পথ এবারের ইউরো স্বপ্নের মতো কাটছে ইংল্যান্ডের। দাপুটে পারফরম্যান্সে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত কোনও গোল হজম করেনি তারা। যদিও গ্রুপ পর্বে মাত্র ২ গোল পেয়েছে ইংলিশরা। ডিগ্রুপে ক্রোয়েশিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুরু, এরপর স্কটল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র ও চেক প্রজাতন্ত্রকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে থ্রি লায়নদের নকআউট পর্বে ওঠা।

শেষ ষোলো থেকে আরও ধারালো ইংল্যান্ড। জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করা এবং কোয়ার্টার ফাইনালে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে নিজেদের অবস্থানের জানান দেওয়া। তবে সেমিফাইনালে পরীক্ষা দিতে হয়েছে বেশ। দারুণ ফুটবলে গোলের সুযোগ তৈরি করেও অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে জিততে হয়েছে ডেনমার্কের বিপক্ষে। ডেনিশরাই শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল, ঘুরে দাঁড়িয়ে ১-১ গোলে শেষ করে নির্ধারিত সময়। এরপর অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের পেনাল্টিতে ২-১ ব্যবধানে জিতে প্রথমবার ইউরোর ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »