ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠিতে প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় টিসিবির পণ্য ট্রাক সেলে বিক্রি হচ্ছে। গত ১ সপ্তাহ যাবৎ লকডাউনের মধ্যে মানুষের চাহিদা পুরণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিদিন ট্রাক সেলে ১শ টাকা লিটার দরে সোয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ২টি করে ট্রাক সেলে বিভিন্ন এলাকায় বসে এই পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে, এখানে সরকারে স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না, ক্রেতারা গাদাগাদি করে পণ্য ক্রয় করছে। পরিস্থিতি বিবেচনা না করেই এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ক্রেতারা তারাহুড়ো করে পণ্য কিনছে। একারণে ক্রেতারা করোনা আক্রান্ত হতে পারে সেই হুস জ্ঞান নেই। ক্রেতাদের অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না।
অন্যদিকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের আধুনিক মেশিনে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি, ডিজিটাল এক্স-রে ও জিন এক্সপার্ট মেশিন চালু করা হয়েছে। ফলে রোগীদের এখন থেকে আর পরীক্ষার জন্য ক্লিনিকে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অল্প খরচেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হবে আলট্রাসনোগ্রাফি, ডিজিটাল এক্স-রে ও যক্ষার জীবানু শনাক্তকরণ।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে আলট্রাসনোগ্রাফি ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন ছিল না। এতে প্রসুতি মায়ের পরীক্ষা করতে বাইরের ক্লিনিক অথবা বিভাগীয় শহর বরিশালে যেতে হতো। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন না থাকায় রোগীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। অবশেষে এ মাসের শুরুতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে তিনটি আধুনিক মেশিন যুক্ত করায় সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে ১১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল এক্স-রে করাতে খরচ হবে ৫৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা। কফ পরীক্ষা করা হচ্ছে বিনামূল্যে। স্থানীয় ক্লিনিকে এ ধরনের পরীক্ষার জন্য ফি নেওয়া হচ্ছে কয়েকগুন বেশি। অল্প খরচে সেবা পেয়ে খুশি উপজেলার বাসিন্দারাও। এছাড়াও এখানে রক্তের যেকোন পরীক্ষা, কফ পরীক্ষা, করোনার নমুনা সংগ্রহ ও করোনার চিকিৎসা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। গরিব মানুষের জন্য করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হচ্ছে।
নলছিটি শহরের মল্লিকপুর এলাকার রুবিনা আক্তার বলেন, আমি সন্তান সম্ভবা একজন রোগী। চিকিৎসকের পরামর্শে ক্লিনিক থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি করিয়েছি। এতে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত লেগেছে। এখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করালাম মাত্র ১১০ টাকায়। এ জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুনীবুর রহমান জুয়েল বলেন, নতুন করে তিনটি মেশিন যুক্ত হওয়ায় সরকার নির্ধারিত অল্প খরচে পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা করাতে রোগীও আসছেন নিয়মিত।
নলছিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শিউলী পারভীন বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবার মান অনেক হাসপাতালের চেয়ে উন্নত। দক্ষ চিকিৎসকরা আলট্রাসনোগ্রাম করছেন। ডিজিটাল এক্স-রে হচ্ছে, জিন এক্সপার্ট মেশিন দিয়ে যক্ষা পরীক্ষা করা হয়, রয়েছে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা। সবধরনের রোগী এখানে চিকিৎসা পাচ্ছেন। আমরা করোনার চিকিৎসা করে যাচ্ছি শুরু থেকেই। গরিব রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রসুতি মায়েদের সেবাও দেওয়া এখানে। ক্লিনিকে না গিয়ে এ ধরনের পরীক্ষার জন্য তিনি রোগীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাধন রায়/ ইবিটাইমস /এম আর