আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় কয়েকদিন ধরে বহমান প্রচণ্ড দাবদাহ। চলতি সপ্তাহে পর পর তিন দিন দেশটিতে সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে।
কর্মকর্তাদের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানানয়, কানাডায় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যার অধিকাংশই দাবদাহের সঙ্গে সম্পর্কিত। গত পাঁচ দিনে কেবল ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় প্রায় ৪৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এই সময়ের স্বাভাবিক মৃত্যুর হারের তুলনায় ১৯৫ শতাংশ বেশি। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের চিফ করোনার লিসা লাপয়েন্তে বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে দাবদাহের প্রভাব আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি আমাদের প্রদেশের অনেক অংশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
এমন ভয়ঙ্কর তাপমাত্রা আগে কখনোই অনুভব করেননি কানাডার বাসিন্দারা। ব্রিটিশ কলম্বিয়া কমিউনিটি ক্যাসেলগারের বাসিন্দা জেনিস হোল্ডসওয়ার্থ বলেন, ‘আমি চার দিন ধরে বাইরে বের হইনি। আমার ৭০ বছরের জীবনে এর আগে কখনও এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সমস্ত জানালা কালো করে দিয়েছি। ঠান্ডা পানিতে পা ভিজিয়ে রাখছি। গোসল করছি। প্রচুর পরিমাণে তরল পান করছি।’
গত কয়েকদিন ধরে কানাডার পশ্চিমাঞ্চল ও যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহের জন্য ‘হিট ডোম’কে (উষ্ণ বাতাসে আবদ্ধ আবহাওয়া) দায়ী করা হচ্ছে। এটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আর্টিক অঞ্চল পর্যন্ত প্রসারিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
কর্মকর্তারা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে শুরু করলেও অন্যান্য অঞ্চলে খুব একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
কানাডার প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রেও গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সোমবার ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে ৪৬ দশমিক ৬ সেলসিয়াস ও ওয়াশিংটনের সিয়াটলে ৪২ দশমিক ২ সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৯৪০-এর দশকের পর এটাই দেশটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওরেগনে গত কয়েকদিন ধরে দাবদাহ সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কমপক্ষে ৬৩ জন মারা গেছেন। ওয়াশিংটন রাজ্যের কিং ও স্নোহোমিশ কাউন্টিতেও অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার এক বক্তব্যে অস্বাভাবিক তাপমাত্রার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
ডেস্ক/ইবিটাইমস/এমএন