বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহার সময় যেকোনো মূল্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শীঘ্রই কঠোর বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন আসছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আজ শুক্রবার (২৫ জুন) সকালে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় কঠোর হবে সরকার। যেকোনও মূল্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুতই কঠোর বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন আসছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন হয়ে এলেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।’এর আগে গতকাল ২৪ জুন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে শাটডাউনের প্রস্তুতি রয়েছে। সরকার করোনা পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পারে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সারাদেশে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউনের সুপারিশ সক্রিয় বিবেচনায় নেওয়া হবে বলেও জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হয়েছে, ‘কোভিড রোগের বিশেষ ডেল্টা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই রোগের প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ডভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোতাগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্য দেশ, বিশেষত পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের অতি কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত যেসব স্থানে পূর্ণ (Shutdown) প্রয়োগ করা হয়েছে। সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।’
‘বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ শাডডাউন (Shutdown) দেওয়ার সুপারিশ করছে। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের অঙ্গ প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে’, উল্লেখ করা হয়েছে এতে।
প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এজন্য সভায় তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রােগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়ােজন। বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে টিকা উৎপাদন করা এবং নিজস্ব টিকা তৈরির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস