ইউরোপ ডেস্কঃ বৃটেনে করোনা ভাইরাসের নতুন ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাবের কারণে অস্ট্রিয়ায় বৃটেন থেকে আগত বিমানের অবতরণের নিষেধাজ্ঞা ২১ জুন সোমবার শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রিয়ান কর্তৃপক্ষ। অস্ট্রিয়ার সংবাদ মাধ্যম সরকারী সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন বিমান অবতরণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এখনও নিষেধ রয়েছে।
অস্ট্রিয়ান কর্তৃপক্ষ কেবলমাত্র অস্ট্রিয়ান নাগরিক এবং ইইউ / ইইএ এবং সুইজারল্যান্ডের বাসিন্দাদের বৃটেন থেকে অস্ট্রিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শেঞ্জেনভিসাআইএনফো ডটকম।
লন্ডনে অবস্থিত অস্ট্রিয়ান দূতাবাসের মতে আন্ডোরা, সান মেরিনো এবং ভ্যাটিকানের বাসিন্দাদেরও যুক্তরাজ্য থেকে ভ্রমণকারী দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইউকে থেকে অস্ট্রিয়ায় প্রবেশের সময়, টিকা দেওয়ার বা করোনা মুক্তির সনদপত্র বা নেগেটিভ পরীক্ষার সনদ উপস্থাপন করতে পারলে বাধ্যতামূলক প্রবেশের রেজিস্ট্রেশন, পিটিসি ফর্ম আর প্রযোজ্য হবে না। এমনকি যদি যাত্রী প্রবেশের ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি পিসিআর বা অ্যান্টিজেন পরীক্ষা নিয়ে থাকে তবে পিটিসি ফর্মটি এখনও পূরণ করা বাধ্যতামূলক।
তাছাড়াও, ব্রাজিল, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাজ্য থেকে ‘ডি’ ভিসা হোল্ডারদের অস্ট্রিয়ায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে।
অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যাকসিন অনুমোদনের পরে সিনোভাক কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিনটি এখন অস্ট্রিয়ান কর্তৃপক্ষের দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছে। সুতরাং, সিনোভাক ভ্যাকসিন দেওয়া ভ্রমণকারীদের অস্ট্রিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রিয়ায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যারা এখন প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত তারা হলেন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মচারী এবং তাদের সাথে একই বাড়ীতে বসবাসকারী লোক, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারী কর্পোরেশন দ্বারা নিযুক্ত, যারা অস্ট্রিয়াতে পড়াশুনা করছেন বা বিভিন্ন গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন।
তাছাড়াও যারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করেন এমন সব লোকজন। তবে অবশ্যই তাদের অবশ্যই ৭২ ঘন্টার মধ্যে নেওয়া নেতিবাচক পিসিআর পরীক্ষার প্রমাণ ইংরেজী বা জার্মান ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে। যারা এটি উপস্থাপন করতে পারবেন না তাদের অস্ট্রিয়ায় আগমনের পর দশদিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। পাঁচ দিনের কোয়ারান্টাইনের পর কেহ করোনার পরীক্ষায় নেগেটিভ প্রমাণ করতে পারলে কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হতে পারবে।
অস্ট্রিয়ার সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন অস্ট্রিয়া পৌঁছানোর পূর্বে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ভ্রমণকারীদের প্রাক-ভ্রমণ ক্লিয়ারেন্স ফর্মটি পূরণ করতে হবে। ডিজিটাল নিবন্ধকরণ সম্ভব না হলে, ভ্রমণকারীরা নথির কাগজের ফরমেটটি সরবরাহ করতে এবং এটি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে উপস্থাপন করতে পারবেন।
এদিকে অস্ট্রিয়া ঘোষণা করেছে যে তারা ইইউ কোভিট-১৯ ভ্যাকসিনেশন পাসপোর্ট ইস্যু করা শুরু করেছে। তবে ইইউ আগামী ১ জুলাই থেকে সদস্য ২৭ দেশের মধ্যে করোনার গ্রীন পাস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবর্তন করতে যাচ্ছে।
অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় করোনার সংক্রমণের বিস্তার দ্রুত কমে এসেছে। তাছাড়াও বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় করোনার প্রতিষেধক টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত দ্রুততার সাথে চলছে। অস্ট্রিয়াতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ পুরোপুরি করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এবং অস্ট্রিয়ায় বসবাসকারী জনসংখ্যার শতকরা ৫০.৫ শতাংশ মানুষ কমপক্ষে করোনার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন।
কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস