কেনিয়ার বংশোদ্ভূত বিচারক মাহমুদ জামাল দেশের সুপ্রিম কোর্টে মনোনীত হওয়ার পরে কানাডায় ইতিহাস তৈরি করেছেন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইট করে গতকাল এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান কানাডার বিচার বিভাগ এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কানাডার সুপ্রিম কোর্টের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম অশ্বেতাঙ্গ কোনো ব্যক্তি বিচারপতি হিসেবে নিয়োজিত হলেন। তিনি হলেন বিচারপতির নাম মাহমুদ জামাল।
কানাডার অন্টারিও কোর্ট অব আপিলের বিচারক জামালকে রোজালি আবেলাকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসাবে নিয়োগের জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নিকট আবেদন করেছিলেন। তিনিই হবেন কানাডার সর্বোচ্চ আদালতে নিযুক্ত প্রথম কোন অশ্বেতাঙ্গ ও মুসলিম বিচারক।
বিচারপতি জামাল জামাল ১৯৬৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে একটি ইসমাইলি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার মূলত ভারত থেকে পূর্ব আফ্রিকার এই কেনিয়ায় এসে বসতী করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তার পরিবারের সাথে প্রথমে ইংল্যান্ডে এসে কয়েক বৎসর বসবাস করেন।
তারপর আবার তিনি তার পরিবারের সাথে কানাডার আলবার্তার এডমন্টনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। আর এখান থেকেই তিনি তার উচ্চতর শিক্ষা শেষ করেন।
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জনের আগে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে এক বছর পড়াশোনা করেছেন তিনি। তিনি মন্ট্রিলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েল আইন বিদ্যালয়েও আইন বিষয়ে অধ্যায়ন করেছেন।
তারপর তিনি কানাডায় একজন আইনজীবী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ৩৫টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় অংশ নিয়েছেন জামাল। তার এই নিয়োগকে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন ট্রুডো। জানিয়েছেন, এ ভাবেই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তার সরকার।
এখনো নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি ধাপ এখনও বাকি আছে। কানাডার হাউস অফ কমনস ট্রুডোর নিয়োগকে বৈধতা দেবে। তবে হাউস অফ কমনসের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, এটা নিছকই এক রীতি। নিয়োগ কোনোভাবেই আটকাবে না।
কানাডায় প্রতি চার জনে একজন অশ্বেতাঙ্গ। কৃষ্ণাঙ্গ অথবা এশিয়ান বংশোদ্ভূত। অথচ এতদিন ধরে কানাডার সুপ্রিম কোর্টে একজনও সংখ্যালঘু বর্ণের বিচারপতি ছিলেন না। বিষয়টি অনেক সময়ই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কানাডার নাগরিকরা। কিন্তু সমাধান হয়নি। এতদিনে পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এক বছর আগে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ট্রুডো বলেছিলেন, বেড়ে চলা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সামাজিক সাম্য তৈরির চেষ্টা হবে। বিচারপতি জামালের নিয়োগ তারই অন্যতম পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস