ইউরো কাপে স্পেন ও সুইডেনের গোলশূন্য ড্র

শুরুটা ভালো হলো না তিনবারের ইউরো কাপের শিরোপা বিজয়ী স্পেনের

স্পোর্টস ডেস্কঃ ইউরো ২০২০ এর শুরুটা ভালো হলো না তিনবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের। নিজের মাটিতে গতকাল সোমবার রাতে ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে তাদের রুখে দিয়ে একটি পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল সুইডেন। স্পেনের “স্তাদিও অলিম্পিকো দি সেভিয়ায় সুইডেন ও স্পেনের খেলাটি গোলশূন্য ড্র অবস্থায় শেষ হয়।

এইবারের এই আসরে এটাই প্রথম ম্যাচ যেখানে কোনো গোল হয়নি। এর আগে ১৯৮০ সালে শেষবার গ্রুপ পর্বে ইতালির বিপক্ষে প্রথম খেলায় গোলশূন্য ড্র করেছিল স্পেন। আর গত জানুয়ারিতেও এক আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডশীপ খেলায়ও স্পেন সুইডেনের সাথে গোলশূন্য ড্র করেছিল।

অবশ্য গতকাল প্রতিপক্ষ সুইডেনের ওপর খেলার শুরু থেকেই প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে খেলে স্পেন। খেলায় ৮৫% বল নিজেদের দখলে রেখেও গোল করতে ব্যর্থ হয় স্পেন। ছোট ছোট পাসে খেলে অনেক গোলের সুযোগ তৈরীও করেও ব্যর্থ হন স্পেনের ফরওয়ার্ড লাইনের খেলোয়াররা। তাই হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লুইস এনরিকের দলকে। আর দর্শকদের স্টেডিয়াম ছাড়তে হয়েছে জয়ের আনন্দ ছাড়াই, যা তারা মোটামুটি নিশ্চিত স্থির করে রেখেছিলেন।

স্পেনের একচ্ছত্র দাপটের এ ম্যাচে তাদের গোলবঞ্চিত রাখার অন্যতম প্রধান কারিগর সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। অবিশ্বাস্য অনেক নিশ্চিত গোল তিনি বাঁচিয়েছেন। খেলার ৭ মিনিটের মাথায় স্পেনের দানি ওলমোর দূরপাল্লার লক্ষ্যভ্রষ্ট শট গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। খেলার ১৬ মিনিটের মাথায় কোকের ক্রস থেকে দারুণ এক হেড নিয়েছিলে ওলমো কিন্ত তার চেয়েও দারুণ দক্ষতায় বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে সে বল কে জালে ঢুকতে দেয় নি সুইডেনের গোলরক্ষক ওলসেন। তারপর ২৩ মিনিটে বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিল সুইডিশ ডিফেন্ডার ভিক্টর লিনদোলেফ। ডি-বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ফাঁকায় থাকা কোকের পায়ে বল তুলে দেন তিনি। তবে তার কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সে যাত্রা বেঁচে যায় দলটি। এর ৬ মিনিট পর আবারও একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন কোকে। এবারও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি। ওলমোর বাড়ানো বল ছোট ডি-বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মারেন এ অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।

খেলার ৩৬ মিনিটের মাথায় সুইডেনও স্পেনের বিরুদ্ধে গোল করার সুযোগ পেয়েছিল। ডান প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া সাবিস্তিয়ান লারসনের দূরপাল্লার শট। তবে কর্নারের বিনিময়ে সে শট ফিরিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।

দুই মিনিট পর দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন মোরাতা। জর্দি আলবার বাড়ানো বল সুইডিশ ডিফেন্ডার মার্কাস ডেনিলসন বিপদমুক্ত করতে না পারলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান ইতালির এ জুভেন্টাস তুরিনের এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু তার শট গোলবিরের পাশ কেটে চলে যায়। প্রথমার্ধের ৪১ মিনিটের মাথায় প্রায় গোল খেয়ে বসেছিল স্পেন। সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে আইমেরিক লাপোর্তেকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন আলেকজান্ডার ইসাক। তার শট মার্কাস লোরেন্তের পায়ে লেগে প্রায় জালের দিকেই যাচ্ছিল। বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে গেলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় রেকর্ড ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও দুর্দান্ত ওলসেন। ওলমোর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান এ এভারটন গোলরক্ষক।

খেলার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ৫০ মিনিটের সময় সুইডিশ ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন মোরাতা। এবারও বাইরে শট নেন তিনি। ১১ মিনিট পর পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল প্রায় পেয়ে যাচ্ছিল সুইডেন। খালি পোস্টে ইসাকের ক্রসে মার্কাস বার্গ ঠিকভাবে পা লাগাতে পারলেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। কিন্তু বারপোস্টের ওপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা। তাছাড়াও খেলার ৭৩ মিনিটে স্পেনের ওলমোর শট ডেনিলসন ব্লক না করলে গোল পেতে পারতো স্বাগতিকরা। খেলার শেষ বাশিঁ বাজার আগ পর্যন্ত অনবরত আক্রমণাত্মক বল খেলে স্পেন গোলের আশায় কিন্ত সুইডেনের সুপার গোলরক্ষক রবিন ওলসেন।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »