ঢাকা প্রতিনিধিঃ গতকাল ১৩ জুন রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় এবি পার্টির উদ্যোগে ঢাকার বিজয়নগরস্থ এবি মিলনায়তনে, বাজেট ২০২১-২২: নারী ও শিশু প্রসঙ্গে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
উক্ত সভায় এবি পার্টির নেত্রী ব্যারিষ্টার নাসরিন সুলতানা মিলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী। অতিথি হিসেবে বাজেটের উপর বিশ্লেষণাত্মক বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি, এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক ও বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, শিল্পী ও অভিনেত্রী আরজুমান্দ আরা বকুল, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, অর্থনীতিবিদ আমিনুল ইসলাম এফসিএ, বিশিষ্ট শ্রমিক নেত্রী বেবি পাঠান, ইন্সুরেন্স নারী ব্যক্তিত্ব রোকেয়া বেগম, এবি পার্টির নেত্রী রাজিয়া সুলতানা প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, নারী কিংবা পুরুষ কেউ একক ভাবে ভালো সমাজ গঠন করতে পারেনা। ভালো সমাজ গঠন করতে হলে নারী পুরুষ উভয়কেই একসাথে ভুমিকা নিতে হবে। একটা ভালো সরকার ব্যাতীত ভালো বাজেট, জন বান্ধব বাজেট হতে পারেনা। নারী ও শিশু বান্ধব বাজেটতো কল্পনাই করা যায় না। এই ফ্যাসিস্ট সরকার যে বাজেট দিয়েছে তা দুর্নীতি বান্ধব বাজেট। লুটেরা ব্যবসায়ী বান্ধব বাজেট। আমরা যদি গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে কোন কিছুই করা সম্ভব হবে না। আজ স্কুল কলেজ বন্ধ, কোমলমতি শিশুরা আজ বিভিন্ন গেমসে নিমজ্জিত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সব কিছু চললে স্কুলও চলতে পারে। অথচ বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের শিক্ষার কি হবে সেটার কোন নির্দেশনা বাজেটে নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করেছিলাম নারী ও শিশু নিরাপত্তা, নারী স্বাস্থ্য, নারী শ্রমিকদের টিকা ইত্যাদি নিয়ে বাজেটে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা থাকবে কিন্তু তা নেই। অনেক মেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে যারা করোনা মহামারীতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তাদের জন্যেও বাজেটে কিছু নেই।
বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেন কিন্তু কয়েকদিন আগে প্রথম আলোর পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, সবার আগে উচিত ছিলো গার্মেন্টসের নারী কর্মীদেরকে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা, কারন আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার প্রধান অবদান আমাদের নারী কর্মীদের। বর্তমান বাজেটে নারী ও শিশু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দেশে দশটি মহিলা মেডিকেল কলেজ স্থাপন এবং প্রত্যেকটি জেলায় স্পেশাল নারী ও শিশু হাসপাতাল করার দাবী জানান তিনি। সরকারকে আহবান জানাই যেহেতু বাজেট সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে পারছেন না অতএব পদত্যাগ করুন।
শিল্পী ও অভিনেত্রী আরজুমান্দ আরা বকুল বলেন, নিজে ব্যাথা না পেলে মানুষ অন্যের ব্যাথা সহজে অনুভব করতে পারেনা। আমাদের নারী ও শিশুরা কী ধরনের নিগ্রহের শিকার তা অন্যেরা বুঝবেনা। তিনি বলেন, একজন সাধারণ মানুষের বাজেটে কি অংশগ্রহন আর এর বিনিময়ে রাষ্ট্র তাকে কি সেবা দিবে এ বিষয়ে এখনো আমাদের জনগণ সচেতন নয়। আশা করি এবি পার্টি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে যথেষ্ট ভুমিকা রাখবে।
ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, নারী ও শিশুদের জন্য বাজেটে যে বরাদ্দ সেটা এই রাষ্ট্র খরচ করতে ব্যার্থ হচ্ছে। রাষ্ট্র ঋণ করে টাকা নিয়ে এসে যা খরচ করতে পারছেনা সেটা তারা দুর্নীতি করছে। এটা দুর্নীতিতে দক্ষ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষ ব্যার্থ একটা সরকার। আজ নাগরিক হিসেবে আমাদের এই ঋণের বোঝা নিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ আমিনুল ইসলাম এফসিএ বলেন, বাজেটের পরিমাণ কোন বিবেচ্য বিষয় না, আলোচনার বিষয় হচ্ছে ঘোষিত বাজেটের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণ কতটুকু সুবিধা পাচ্ছি। যে রাষ্ট্রের সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই তা দিয়ে জনগণ কোন উপকার পাবেনা। বাংলাদেশের নারী ও শিশুর পরিমান মোট জনসংখ্যার প্রায় সত্তর শতাংশ অথচ আমরা তাদেরকে ভালো রাখার কোন ব্যবস্থা করতে পারছিনা। নারী ও শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যত গড়তেই আমাদের এবি পার্টির সাথে পথ চলতে হবে একসাথে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, ঢাকা মহানগর উত্তরের সমন্বয়ক নাজমুল হুদা অপু, দক্ষিণের আহবায়ক এএফ এম উবাইদুল্লাহ মামুন, আনোয়ার সাদাত টুটুল, আামজাদ খান, শাহ আব্দুর রহমান, ইব্রাহিম খান সাদাত, ইয়ামিনুর রহমান, শেখ ইদ্রিস আলী, মোঃ কবির হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, রেখা আকতার, মাহবুবুর রহমান, শাহজাহান বেপারী, ডাঃ হারুনুর রশিদ, ফারহানা ইসলাম, শফিউল বাশার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিনহাজুল আবেদীন শরীফ, সাইফুল মির্জা, নাসরিন আক্তার, ইভানা শাহীন, মীনা খাতুন পাখি, সুলতানা রাজিয়া, আামেনা বেগম সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
হাফিজা লাকী /ইবি টাইমস