বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট-আইইডিসিআর

১৩ জুন খুলছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাংলাদেশে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে রোববার ৬ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এমন তথ্য জানান তিনি।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘সরকারের আইইডিসিআরের রিপোর্টের কল্যাণে দেশে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেটি বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তবর্তী এলাকা ছাড়াও অন্যান্য স্থানে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র আরও বলেন, এর সংক্রমণ ক্ষমতা অন্যান্য যে কোনো ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে অনেক বেশী। যেখানে সংক্রমণ বেশী, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে অনেকের মৃত্যুর শঙ্কা রয়েছে। যদিও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কারণে সরাসরি মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে সংক্রমণের মাত্রা বেশী হলে মৃত্যু হারও বাড়বে। তাই এ ব্যাপারে সবার সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ এর যে ঢেউ চলছে, তার বিস্তার ঠেকাতে জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলা, বাইরে সার্বক্ষণিকভাবে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা—এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমাদের মতো প্রান্তিক জায়গায় ভ্যাকসিন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভেবে থাকলে—সেটি হচ্ছে মাস্ক। এটাকে ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।’

বুলেটিনে এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষায় আরও উন্নত ও ভালো সেবা প্রদানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আর্টিপিসিআর’র কার্যক্রম আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, কিছু অসাধু ব্যক্তি মানুষকে বিভ্রান্ত করে টাকা আদায় করছে এবং ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান করছে। অথবা দ্রুত সার্টিফিকেট সরবরাহের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার সার্টিফিকেট পেতে কোনো আর্থিক লেনদেন সম্পাদন করলে এর দায়ভার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গ্রহণ করবে না। এ সময় কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় এখন ডিএনসিসি হাসপাতালে ভিড় না করে আর্মি স্টেডিয়ামে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।পাশাপাশি ভুয়া সার্টিফিকের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশ গমনের লক্ষ্যে এ ধরনের সার্টিফিকেট আপনাদেরকে বিমানবন্দরে সমস্যায় ফেলবে।

এদিকে বাংলাদেশে পরিকল্পিত ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় চলমান বিধিনিষেধ ১৬ জুন বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে আগামী ১৩ জুন খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। রোববার ৬ জুন বিকালে গণমাধ্যমকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিধিনিষেধ বেড়েছে, তাই ঘোষিত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সময় জানানো হবে।’

গত ২৭ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপসচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, করোনায় বন্ধ থাকা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে আগামী ১৩ জুন থেকে স্কুল-কলেজ খোলা এবং শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া য়েছে।

তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মানুষের চলাচল ও সার্বিক কার্যক্রমে চলমান বিধিনিষেধ ১৬ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

বিষয়টি স্পষ্ট করতে আজ বিকেলে গণমাধ্যমে মুখ খোলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, যেহেতু বিধিনিষেধ বেড়েছে, তাই ঘোষিত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সময় জানানো হবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরপর দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »