ঢাকা: বাজেট আসলেই সাধারণ মানুষ হিসাব কষতে শুরু করেন কি কি পণ্যের দাম কমছে বা বাড়ছে? তবে, এবারের বাজেট কে বলা যায় অনেকটা ব্যবসায়ী বান্ধব বাজেট। দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুযোগ দিতেই করের বোঝা চাপানো হয়েছে আমদানি পণ্যে। যদিও এর ফলে কোনো কোনো নিত্যপণ্যের দামও বাড়তে পারে।
বাজেট মানেই করের বোঝা আর নতুন খরচের হিসাব-নিকাষ, এমনটাই ধারণা বেশিরভাগ মানুষের। তবে, এবার হয়তো সে ধারনা পাল্টে দিতে চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সুযোগ দেয়া হয়েছে দেশিয় উদ্যোক্তা ও শিল্পখাতকে। পরে দেশে উৎপাদিত পণ্যের খরচ বাড়ছে না। তবে, বিলাসীতার খরচ বাড়বে কয়েকগুন।
প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষনে দেখা যায়- বরাবরের মতোই তামাকজাত পন্যে নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যদিও সিগারেটের চারটি স্তরের মধ্যে তিনটি স্তরের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশীয় ফিল্টার বিড়ির দাম অপরিবর্তিত থাকছে। আমদানি করা বিলাসী পণ্য যেমন- বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্যের দাম বাড়বে। কৃষিকে উৎসাহ দিতে শুল্ক আরোপ আমদানি করা প্যাকেটজাত খাবার, সবজি, ভেড়া ও ছাগলের মাংস, শিল্প লবন এবং ক্যান জাতীয় ফ্রোজেন ফুড।
ভ্যাট আরোপের কারণে খুচরা পর্যায়ে স্যানেটারি টেবিল ওয়্যার, কিচেন ওয়্যারের দাম বাড়তে পারে। তবে নতুন করে শুল্ক আরোপ হয়নি টাইলস উৎপাদনে। দেশীয় পণ্য সুরক্ষায় শুল্ক আরোপে আমদানি করা স্মার্টফোনের দাম আরেক দফা বাড়বে। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাবে দেশীয় কোম্পানিগুলো। একইভাবে দেশীয় খেলনার উৎপাদন উৎসাহিত করতে আমদানি করা সমজাতীয় পণ্যে শুল্ক আরোপ করায় বিদেশি খেলনার দাম বাড়বে। বৃদ্ধির তালিকায় আছে, জ্যোতিষী ও ঘটকালির খরচ, টিভি পত্রিকার বিজ্ঞাপন, গাড়ির নিবন্ধন, রুট পারমিট, ফিটনেস ও মালিকানা সনদ নবায়নের খরচ।
দেশে কম্পিউটারসহ কিছু পণ্যের উৎপাদন উৎসাহিত করতে সেসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেশি হারে শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তবে শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে কৃষিযন্ত্র, স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ও ওষুধের কাচামাল আমদানিতে। এছাড়া ক্যানসার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল ও হার্টের রিং উৎপাদনে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
আমদানি করা পূর্ণাঙ্গ মোটরসাইকেলের চেয়ে দেশে সংযোজিত মোটরসাইকেল পাওয়া যাবে কম দামে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত উপকরণের শুল্ক কমানো হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এছাড়া পাউরুটি, বনরুটি, হাতে তৈরি কেক প্রতি কেজি ১৫০ টাকা পর্যন্ত মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, লিস্ট পাম্পের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি শিল্পে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। একারণে স্টেইনলেস স্টিল, মাছ,মুরগি ও গবাদি পশুর খাবার, লুব্রিকেন্ট, পেট্রোলিয়াম, বিটুমিন, পেপার ও পেপার বোর্ড, নীট ফেব্রিক্স, ইলেকট্রিক প্যানেল, দেশে উৎপাদিত ওয়াশিং মেশিন, ক্যাপাসিটরস, স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কম্পিউটার যন্ত্রাংশএর দাম কমে যাবে।
ঢাকা/ইবিটাইমস/আরএন