আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন ধাতু-পাথরের এই খণ্ডটি থেকে পৃথিবীর কোনও বিপদের আশঙ্কা নাই।পুনরায় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এক গ্রহাণু,নাম তার ২০২১কেটি-১। মাপে আইফেল টাওয়ারের মতো বড়। নাসার হিসেবে, এর ব্যাস ৪৯২ ফুট থেকে ১০৮২ ফুটের মধ্যে। প্রায় ২৬ হাজার গ্রহাণুর উপরে নজরদারি চালায় নাসা। সেই তালিকায় এটি ‘সম্ভাব্য বিপজ্জনক’ গ্রহাণুগুলির একটি। মঙ্গলবার, ১ জুন এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে চলে যাবে। এই গ্রহাণুর গতি হবে ঘণ্টায় ৬৪,৩৭৪ কিলোমিটার। নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে,ধাতু-পাথরের এই খণ্ডটি থেকে পৃথিবীর কোনও বিপদের আশঙ্কা নাই
সূর্যকে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরতে ঘুরতে গ্রহাণুটি যখন আমাদের সবচেয়ে কাছে আসবে, পৃথিবী থেকে তখন তার দূরত্ব হবে ৪৫ লক্ষ কিলোমিটার। ৪৬ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে আসা যে কোনও মহাজগতিক বস্তুকেই পৃথিবীর পক্ষে ‘সম্ভাব্য বিপজ্জনক’ বলে ধরা হয়ে থাকে।
ইতিপূর্বে গত ২১ মার্চ ২০০১এফও৩২ নামে একটি গ্রহাণু অনেক কাছ দিয়ে অতিক্রম করে চলে গিয়েছিল।
গ্রহাণুটি পৃথিবীর থেকে মাত্র ২০ লক্ষ কিলোমিটার দূর দিয়ে চলে গিয়েছিল। এই দূরত্ব পৃথিবী ও চাঁদের দূরত্বের চেয়ে সোয়া পাঁচ গুণ বেশী। পৃথিবীর কাছাকাছি আসা গ্রহাণুগুলির মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে বড়। এই মাপের বা তার চেয়ে বড় যে গ্রহাণুগুলি পৃথিবীর কাছ দিয়ে যায়, তার সবগুলির গতিবিধিই নাসার জানা। তাদের মতে, আগামী শতকেও গ্রহাণু থেকে আমাদের এই গ্রহের বিপদের কোনও আশঙ্কা নেই।
গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড হল প্রধানত পাথর দ্বারা গঠিত বস্তু যা তার তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে। আমাদের সৌরজগতে গ্রহাণুগুলো ক্ষুদ্র গ্রহ (Minor planet অথবা Planetoid) নামক শ্রেণীর সবচেয়ে পরিচিত বস্তু। এরা ছোট আকারের গ্রহ যেমন বুধের চেয়েও ছোট। বেশিরভাগ গ্রহাণুই মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহাণু বেল্টে থেকে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে।
ধারণা করা হয় গ্রহাণুগুলো ভ্রূণগ্রহীয় চাকতির (Protoplanetary disc) অবশিষ্টাংশ। বলা হয় গ্রহাণু বেল্টের অঞ্চলে সৌরজগতের গঠনের প্রাথমিক সময় যে সকল ভ্রূণগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিলো তাদের অবশিষ্টাংশ বৃহস্পতির আবেশ দ্বারা সৃষ্ট মহাকর্ষীয় অক্ষ বিচলনের কারণে গ্রহের সাথ মিলিত হবার সুযোগ পায়নি। আর এই অবশিষ্টাংশই গ্রহাণু বেল্টের উৎপত্তির কারণ। কিছু গ্রহাণুর চাঁদও রয়েছে।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস