অস্ট্রিয়ায় ২৫ বছরের মধ্যে এই বৎসর সবচেয়ে শীতল বসন্ত

আগামীকাল থেকে অস্ট্রিয়ায় একটানা ৯ দিনের বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস

ইউরোপ ডেস্কঃ গত সপ্তাহান্তের একটানা বৃষ্টিপাতের পর আজ বুধবার ২৬ মে অনেকটাই রৌদ্রোজ্জ্বল দিন দেখে অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। তবে এরই মধ্যে অস্ট্রিয়ার সিভিয়ার ওয়েদার সেন্টার খবর দিলেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে অস্ট্রিয়ায় একটানা ৯ দিন বৃষ্টিপাত হবে। এ যেন বাংলাদেশের আষাড় মাসের ঘাদলার দিন কিন্ত আজ বাংলা জৈষ্ঠ মাসের ১১ তারিখ।

অস্ট্রিয়ার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন এই বৎসরের শুরু থেকেই তুষারপাত,ঠান্ডা এবং বৃষ্টিপাত চলছে তো চলছেই। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন গত ২৫ বৎসরের মধ্যে অস্ট্রিয়া এই বৎসর সবচেয়ে শীতল বসন্ত পাচ্ছে। বিগত কয়েক দশকে অস্ট্রিয়ার আবহাওয়া বসন্তে ( মার্চ, এপ্রিল, মে ) প্রায় সর্বদা অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ বা গরম ছিল।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন আজ বুধবার পশ্চিমের রাজ্য ভোরারলবার্গ থেকে উচ্চ অস্ট্রিয়া পর্যন্ত সকালে ঘন মেঘের মাঝে মাঝে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন দেখা যাবে। বিকালে, উত্তর-পশ্চিম থেকে মেঘগুলি ঘন হতে থাকবে এবং শেষ বেলা থেকে পুনরায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এই সময় অস্ট্রিয়ার বাকী অংশে প্রায়শই সূর্যের আলো ঝলমলে অবস্থায় থাকবে, কেবল বিকালে মাঝে মাঝে মেঘ দেখা যাবে তবে তা শুকনো থাকবে,বর্ষণ হবে না। তবে মাঝারি আকৃতির বাতাস দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে পশ্চিমে দিকে প্রবাহিত হবে। এই সময় আজ সমগ্র দেশের তাপমাত্রা ১৬ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২৭ মে অস্ট্রিয়ার উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে একটি শীতল বায়ু দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে যাবে। এই সময় অস্ট্রিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রিয়ায় দিনের প্রথম ভাগে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন এবং এই সূর্য  সময়ে সূর্য জ্বলমল করলেও বিকালের দিকে বজ্রপাত সহ বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টিপাত হবে।

অস্ট্রিয়ার বাকী অংশে সকাল থেকেই ঘন মেঘ এবং মাঝেমধ্যেই হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।একদম দিনের শুরুতেই তাপমাত্রা থাকবে ৫ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তারপর দুপুরে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী শুক্রবার সমগ্র অস্ট্রিয়া জুড়ে রোদ এবং মেঘের মিশ্রণ রয়েছে।  বিশেষত সকালে এবং দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে, রৌদ্রের অংশগুলি প্রায়শই প্রাধান্য পাবে। তারপর শুক্রবার বিকালের দিকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে একটি শীতল বায়ু প্রবাহ দেশের বাকী অংশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাবে। শুক্রবার সমগ্র অস্ট্রিয়ায় দিনের প্রথমভাগে তাপমাত্রা ৪ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বিকালের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

অস্ট্রিয়ার সিভিয়ার ওয়েদার সেন্টারের পূর্বাভাস অনুযায়ী শনিবার সারাদিন বৃষ্টিপাত এবং শীতল আবহাওয়া বিরাজমান থাকবে। সারাদিন বৃষ্টিপাতের কারনে শনিবারের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী রবিবার দেশের অধিকাংশ অঞ্চলই রৌদ্রোজ্জ্বল থাকলেও আল্পস পর্বতে ১,৪০০ থেকে ২,০০০ মিটারের উপরে তুষারপাতেরও সম্ভাবনা আছে। তবে এর মধ্যে Tirol রাজ্যের কুফস্টাইন জেলা থেকে লোয়ার অস্ট্রিয়ার (NÖ) সেন্ট পল্টন (St.Pölten)পর্যন্ত মাঝারি আকৃতির বৃষ্টিপাত সম্ভাবনা আছে। আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছেন যে,সপ্তাহের শেষের এই বৃষ্টিপাত পরবর্তী নতুন সপ্তাহের কয়েকদিন পর্যন্ত গড়াতে পারে।

এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৪৪৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ১৪ জন। ভিয়েনায় গত বৎসর অক্টোবর মাসের পর এই  প্রথম নতুন সংক্রমণ দুই সংখ্যার ঘরে।

অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে NÖ রাজ্যে ৯৯ জন,OÖ রাজ্যে ৯৪ জন,Vorarlberg রাজ্যে ৬৯ জন,Tirol রাজ্যে ৬০ জন ও Steiermark রাজ্যেও ৬০ জন,Kärnten রাজ্যে ৩০ জন,Burgenland রাজ্যে ১২ জন এবং Salzburg রাজ্যে ৭ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ দেশে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৫৫ হাজার ৯১ ডোজ। অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন প্রদান সম্পন্ন করা হয়েছে মোট ৪৬ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৭৬ ডোজ।

অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৪২,৫৮৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ১০,৫৬৬ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ৬,২৫,৪৫৩ জন। বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬,৫৬৪ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২০৩ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৮৩ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »