ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকেই এগিয়ে আসছে এই মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

প্রচন্ড শক্তি বাড়িয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন যে, সোমবারই পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর আন্দামান সাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি আরও শক্তি বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ইয়াস। আর তারপরই উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার সকালে উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে পৌঁছবে এই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। ওই দিন দুপুরে পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মাঝে আছড়ে পড়তে পারে সাইক্লোন ইয়াস।

ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা থেকে বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। গত বছর মে মাসেরই এক বুধবার পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে এসেছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। ভারতের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রাজ্যের উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যম। ইতিমধ্যেই উপকূলীয় এলাকার লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ প্রবল শক্তিশালী হয়ে সমুদ্রে একই এলাকায় অবস্থান করছে।এমন অবস্থায় বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গত ছয় ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়টি নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছে এবং এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করবে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস।

“এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের পুরো গতিপথ ভারতের উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গের দিকে। উপকূলে আসার পর ভারতের দিকে যাওয়ার পথে বাংলাদেশের খুলনা এবং সাতক্ষীরা উপকূলে কিছু বৃষ্টিপাত হবে,” বলেন আবহাওয়াবিদ মি. রুহুল কুদ্দুস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৫২০ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। ঝড়ো হাওয়ার আকারে এর গতি ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গভীর নিম্নচাপ থেকে সোমবার ভোরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর পূর্বে ঠিক করা তালিকা অনুযায়ী এটির নাম হয় ইয়াস।বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এই নামটি প্রস্তাব করেছিল ওমান। এর অর্থ ‘হতাশা’।

কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »