আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন যে, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপটি সামান্য কিছুটা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সেই একই এলাকায় সামান্য কিছুটা তিব্রতর হয়ে সুস্পষ্ট লঘূচাপরূপে অবস্থান করছে। এর কেন্দ্রের ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ গড়ে ৩৫কিমি/ঘন্টা যা দমকা হাওয়া সহ ৪৫ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এটি বর্তমান অবস্থান হতে আশে পাশেই ঘোরাঘুরি করতে পারে আগামী ২৪ ঘন্টা এবং পরবর্তীতে উত্তর পশ্চিম/উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
অনুকূল পরিবেশ থাকায় এটি আগামী ২৪ঘন্টায় নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় এ পরিনত হতে পারে। তারপর ২৫-২৬ মে এর মধ্যেই প্রবল শক্তিশালী ঘূর্নিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
প্রাথমিকভাবে, উত্তর ঊরিষ্যা থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূল(খুলনা উপকূল) পর্যন্ত সকল উপকূল এই সিস্টেম এর প্রধান ঝুঁকিতে আছে। এবং ২৬-২৭ মে তারিখের মধ্যে উক্ত অঞ্চলের যেকোনো উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমের জেলা গুলোতে এর সম্ভাব্য ঝুঁকি থাকায় এসকল এলাকার বাসিন্দাদের এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে,এর প্রভাব ২৫ মে পূর্ব পর্যন্ত না পড়লেও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের অনেক জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এই লঘুচাপ সৃষ্টির ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের জেলে সহ সকলকে আগামী ৫ দিনের সকল সফর বাতিল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থেকে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে কৃষি সম্পদ যত তারাতাড়ি সম্ভব সংরক্ষণ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।।উপকূলবর্তী মাছ চাষিদের ২৫ তারিখ এর মধ্যে মাছ সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে।এটি পরবর্তীতে শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তাই বাংলাদেশের সকল বন্দরসমূহকে এক(০১) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছধরার নৌকা-ট্রলারকে ২৩ মে/২০২১-এর মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে এই লঘুচাপের ফলে ২৪ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ এলাকা মেঘাচ্ছন্ন ও অনেক এলাকায় টানা বা থেমে থেমে হালকা/মাঝারী বৃষ্টি ও সাময়িক ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
এই নিম্নচাপটি ঘূর্নিঝড়ে রূপ নিতে এর নাম হবে “ইয়াস”(Yaas) যার অর্থ “হতাশা”।।জানা গেছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রেখেছে ওমান। ফার্সি ভাষা থেকে এই শব্দটি এসেছে। ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা-সহ ১৩টি দেশ নিয়ে গঠিত কমিটি এই নাম ঠিক করেছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, যে মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকায় থাকা দেশগুলি নামকরণ করে। পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা ঝড়ের নাম ঠিক করে। ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিত অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। যশের পর আরও যে ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়েছে, সেগুলি হল গুলাব, সাহিন, জাওয়াদ, অশনি, সীতরাং, মানদৌস, মোচা।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস