ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট;পিরাজপুর: পিরোজপুরের নাজিরপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার মৈত্র উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান। তাকে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে ওই কারন দর্শানোর নোটিশের জবার দিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের উপসচিব মো. আবু জাফর রিপন স্বাক্ষরিত এ কারন দর্শানোর নোটিশে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ও তা তদন্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান বৃহস্পতিবার (২০মে) দুপুরে ওই কারন দর্শনোর নোটিশ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, জেলা প্রশাসকের কাছে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে ওই ইউনিয়নের ১২ ইউপি সদস্যের (মেম্বার) মধ্যে ১১ জন ইউপি সদস্য ওই চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ন, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ প্রদান করেন। গত ০২ মে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) চৌধুরী রওশন ইসলাম ওই সব অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করেন।
এসব অভিযোগের বিষয় নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার মৈত্রের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, একটি কুচক্রী মহল আমাকে বিপদে ফেলতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের ৬ বারের চেয়ারম্যান ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমএ মালেক বেপারী। গত ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। এতে আওয়ামলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে পরের বছর ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিলের অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উত্তম কুমার মৈত্র।
তার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দকৃত নৈলতলা জ্যোতি প্রকাশ রায়ের বাড়ির নিকট একটি লোহার পুল মেরামত বাবদ ২ লাখ, খেজুরতলা সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন লোহার পুল মেরামত বাবদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা , গত অর্থ বছরে ৭৮ হাজার টাকায় মধুরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকট থাকা লোহার পুলের কাজ না করে পুরো টাকা আত্মসত সহ এলজিএসপি-৩ এর আওতায় প্রতি বছর বরাদ্দকৃত ১৮- ২০ লাখ টাকার কাজ নিজের খেয়াল-খুশি মতো প্রকল্প দেখিয়ে তা আত্মসাত করেন।
ইউপি সদস্যদের দেয়া কাজ বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দের ও ইউনিয়নের উন্নয়ন মূলক টিআর-কাবিখা কাজেরও তাকে শতকরা ৩০ ভাগ উৎকোচ দিতে হয়। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, হরিজন ভাতা, মৎস্য ভিজিএস কার্যক্রম, দুস্থ সাহায্যের তালিকা সহ গভীর নলকুপ প্রদানে স্বজন প্রীতি ও বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া ওই ইউনিয়নের কাঠালতলা সুনীল সন্যাসীর বাড়ির সামনে ত্রান ও পুর্ণবাসন প্রকল্পের আওতায় কালভার্ট নির্মান করা হলে সেখানে থাকা লোহার ব্রীজটির মালামাল আত্মসৎ করেছেন।
এ ছাড়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নির্বাচিত হয়ে স্থানীয় বিভিন্ন শালিশ-বৈঠক সহ বিভিন্ন ভাবে আর্থিক বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যেই শ্রীরামকাঠীর বন্দর সংলগ্ন ভীমকাঠীতে তিন তলা বিশিষ্ট সুদৃশ্য পাকা ভবন নির্মান করেছেন।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ /ইবি টাইমস