সরকার করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিন্তিত-স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক
বাংলাদেশ ডেস্কঃ গতকাল সোমবার ১৭ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিষেধক হিসাবে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৯৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯৩৫ জন টিকা বা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। আর প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ অর্থাৎ উভয় ডোজ নিয়ে টিকার কোর্স সম্পন্ন করেছেন ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে,দেশে উভয় ডোজ টিকা নেওয়া ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৩ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ লাখ ১৪ হাজার ১৯২ জন, আর নারী ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৮৩১ জন। প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৬ লাখ আট হাজার ৯৭৯ জন, আর নারী ২২ লাখ ১০ হাজার ৯৩৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানিয়েছেন যে, সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দেশে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন। উল্লেখ্য,দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলে। দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয় গত ৮ এপ্রিল থেকে।
ভারত টিকা রপ্তানি স্থগিত করায় বাংলাদেশ সরকার এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনার প্রথম প্রতিষেধক টিকা প্রদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলাদেশ সরকার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড গ্রহণের জন্য চুক্তি করে। পরবর্তীতে ভারতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে ভারত সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকা রপ্তানি সাময়িক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। ফলে বাংলাদেশ এখন চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন দেশে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসকে বাংলাদেশে চীনের সিনোফার্মের করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি এই মাসেই চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন তৈরী করতে যাচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে সরকার চিন্তিত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেতে প্রধানমন্ত্রী নিজেও ভারতের সঙ্গে কথা বলছেন।
সোমবার ১৭ মে দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।। এসময় মন্ত্রী জানান, দেশে করোনার ভারতীয় মিউট্যান্ট ভাইরাস B.1.617 খুব একটা বেশী ছড়ায়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক আরও জানান, দেশে আগামী ২৫ মে থেকে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি সিনোফার্মের কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ শুরু করার আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, চীনের যে ভ্যাকসিন এসেছে সেটির প্রথম ডোজ আগামী ২৫ মে থেকে দেয়া শুরু হবে। এছাড়া আমরা ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলেছি, ফাইনাল কিছু হলে আপনারা অবশ্যই জানতে পারবেন। দ্বিতীয় ডোজের জন্য ভারত, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চেষ্টা করেছেন। ভারতের কাছে অর্ডার আছে ৩ কোটি, পেয়েছি ৭০ লাখ। দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে আমরা চিন্তিত।
এছাড়া করোনা সংক্রমণ রোধে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহন আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। এই প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর প্রমুখ।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস