ভারতে এক মাস পর করোনা শনাক্ত তিন লাখের নীচে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের ইংরেজি পত্রিকা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছেন যে,দীর্ঘদিন পর ভারতের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখের নীচে নামল। ২১ এপ্রিল শেষ বার ভারতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষের কম। তার পর থেকে বাড়তে বাড়তে ৪ লক্ষ পেরিয়েছিল দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহ ধরে কমে তা নামল ৩ লাখের নীচে। আক্রান্ত কমলেও  দৈনিক মৃত্যু কিন্তু কমেনি। সোমবারও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ রেকর্ড করা হয়েছে ৪ হাজারের উপরেই।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে অনুসারে,গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৬ জন। এ নিয়ে ভারতে মোট আক্রান্ত হলেন ২ কোটি ৪৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ১০৬ জনের। এ নিয়ে করোনা মোট প্রাণ কেড়েছে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯০ জনের।

করোনা সংক্রমণের ছড়িয়ে পরা চরম পর্যায়ে যেতেই লকডাউন এবং বিধিনিষেধ আরোপের পথে হাঁটতে থাকে দেশের অধিকাংশ রাজ্য। তার পর থেকেই কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে দৈনিক সংক্রমণ।বর্তমানে ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই কঠোর লকডাউন ও বিধিনিষেধ চলছে।

সংক্রমণ কমে আসতে শুরু করায় করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী কমেছে ১ লাখেরও বেশী। মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কমে ৩৫ লাখে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতেই ভারতে চলছে করোনার টিকাদান কর্মসূচি। ভারতের

কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যমতেই দেখা যাচ্ছে,করোনার টিকাদান কার্যক্রম চললেও তা অত্যন্ত মন্থর গতিতে চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা পেয়েছেন মাত্র ৭ লাখ ৬ হাজার ২৯৬ জন। ভারতে এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ১৮ কোটি ডোজেরও বেশী।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছেন যে,প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) দ্বারা নির্মিত অ্যান্টি কোভিড ড্রাগ ২ ডিজি-র প্রথম ব্যাচটি সোমবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন প্রকাশ করেছেন। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিজিসিআই) এই মাসের শুরুর দিকে মাঝারি থেকে গুরুতর করোনভাইরাস রোগীদের মধ্যস্থতাকারী থেরাপি হিসাবে জরুরীভাবে ব্যবহারের জন্য ২-ডক্সি-ডি-গ্লুকোজ (২-ডিজি) ওষুধকে অনুমোদন দিয়েছে।

পত্রিকাটি আরও জানায়,উত্তর প্রদেশের মহামারী পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয় বলে রবিবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ বলেন,উত্তর প্রদেশে বর্তমানে কোভিড -১৯ এর তৃতীয় তরঙ্গের জন্যও প্রস্তুত রয়েছে,যদি আসে তবে।  “আমরা কিছুই গোপন করছি না।  সবকিছুই স্বচ্ছ… টেস্টিং, পুনরুদ্ধার ও মৃত্যুর প্রতিটি বিবরণ (সরকারের কোভিড) পোর্টালে আপলোড করা হয়।”

এদিকে, রবিবার ভারত বায়োটেক জানিয়েছে যে, এর কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন ‘কোভাক্সিন’ ভারত ও যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনভাইরাস স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। পিয়ার-পর্যালোচিত মেডিকেল জার্নাল ক্লিনিকাল সংক্রামক রোগগুলিতে প্রকাশিত একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে হায়দরাবাদ- ভিত্তিক ভ্যাকসিনে উল্লেখ করা হয়েছে যে কোভাক্সিন টিকা দেওয়ার ফলে ভারতে প্রথম সনাক্ত হওয়া মিউট্যান্ট ভাইরাস B.1.617 এবং বৃটেনের মিউটেশন ভাইরাস B.1.1.7 এ প্রতিরোধ প্রমাণিত হয়েছে।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »