ইউরোপ ডেস্কঃ ঈদ মোবারক। আজ অস্ট্রিয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। অস্ট্রিয়ায় প্রথম ও প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল ৬ টায় ভিয়েনার আন্তর্জাতিক ইসলামিক কেন্দ্রের মসজিদে। সেখানে দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি জামাতেই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার মুসূল্লী অংশগ্রহণ করেছেন।
অস্ট্রিয়া বাংলাদেশ মুসলিম কমিউনিটির সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে বায়তুল মোকারম মসজিদ ভিয়েনায়। যথাযথ সামাজিক দূরত্ব সহ করোনার সকল বিধিনিষেধ মেনে নামাজ আদায় করা হয়েছে। করোনার জন্য এই বৎসর বায়তুল মোকারম মসজিদে সকাল ৮ থেকে ১১ টা পর্যন্ত প্রতি এক ঘন্টা পর পর চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বায়তুল মোকারম মসজিদ ভিয়েনায় সকাল ৮ টার প্রথম জামাতে ইমামতি করেন সিনিয়র ইমাম ও খতিব ড.ফারুক আল মাদানী।
ঈদের নামাজের খুতবায় ইমাম সাহেব বলেন,একমাস যাবৎ একটি বিশেষ কোর্স সম্পন্ন করার পর আজ আমরা এই ঈদের নামাজে একত্রিত হয়েছি মহান আল্লাহতায়ালার থেকে সনদ বা সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য। রোজা একটি গোপন ইবাদত,কেননা আমরা আল্লাহর হুকুম পালনার্থে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গোপনে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পানাহার এবং যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত ছিলাম। রোজার আসল উদ্দেশ্য হল,এই এক মাসের অনুশীলন দিয়ে বাকী এগার মাস মহান আল্লাহর হুকুম আহকাম যথাযথভাবে মেনে চলা।
তিনি আরও বলেন,আজ পৃথিবীর সর্বত্র জুলুম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই জূলূমের নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ার ফলেই আল্লাহ আমাদের ওপর শাস্তি স্বরূপ করোনা মহামারী চাপিয়ে দিয়েছেন। ড. ফারুক আল মাদানী আল্লাহর নিকট বিশেষ দোয়া করেন তিনি যেন আমাদের জুলুমের মত জগন্য পাপ কাজ করা থেকে হেফাজত করেন।
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। কিন্তু এই আনন্দ আর খুশিকে অনেকাংশেই ম্লান করে দিয়েছে করোনা মহামারী। করোনার নানান বিধিনিষেধ তার ওপর আজ বৈরী আবহাওয়ার কারনে অস্ট্রিয়ার আনন্দের ঈদ নিরানন্দে ভরা। ঈদের নামাজের পর নেই সেই মুসলিম ভাতৃত্বের ঐতিহ্য কোলাকুলি ও মোছাবা। মসজিদেও বেশিক্ষণ থাকার সুযোগ নেই কেননা সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধের কারনে অনেকেই পরবর্তী নামাজের জন্য মসজিদের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা টাইমস
তাছাড়াও এই করোনা মহামারীতে আমাদের অনেকেরই আত্মীয়,স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। হারানোর বেদনা আর জীবনের অনিশ্চয়তার মধ্যেই আমরা এক কঠিন সঙ্কটময় সময় অতিক্রম করছি। কর্ম সংকট,খাদ্য সংকট ও চিকিৎসা সংকট দেশে দেশে অনেক মানুষের জীবনকে প্রতিমূহুর্তে অশনি সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। তাই এমনতর মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে ঈদের আনন্দ আর খুশি এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় মন ও মননকে স্পর্শ করছে না।
তারপরও জীবন থেমে থাকবে না,জীবন আর সময় চলবে তার গতানুগতিক নিয়মে। আমরা এই একমাস রোজা থেকে যে তাওয়াক্কুল বা আল্লাহ ভীতি অর্জন করেছি তা দিয়ে যেন পরবর্তী রমজান মাস পর্যন্ত চলতে পারি,সে চেষ্টাই আমাদের করা উচিৎ।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস