ভোলায় ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভীড়, অবৈধ নৌযানে যাত্রী পারাপারে বাড়ছে ঝুঁকি

ভোলা প্রতিনিধিঃ ঈদকে সামনে রেখে ভীড় বাড়ছে ভোলার ইলিশা ফেরী ঘাটে। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা লক্ষীপুর হয়ে ভোলায় আসছেন নৌ পথে। তাদের বেশীর ভাগ যাত্রীই অবৈধ ছোট ছোট ট্রলারে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে আসছেন। কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দুরত্ব। অন্যদিকে ডেঞ্জার জোনের এসব মাছ ধরার ট্রলারে যাত্রী পারাপারের কারনে দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে। যাত্রীদের জিম্ম করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সুত্র জানায়, লক ডাউনের কারনে আন্তজেলা যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে। এছাড়াও ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঞ্জার জোন থাকায় ভোলা-লক্ষীপুর রুটে সি সার্ভে সনদ ছাড়া ছোট ছোট নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ ভাবে যাত্রী পারাপার করছে ট্রলার মালিকরা। ইলিশা ফেরীঘাট এলাকা গিয়ে গেছে গেছে, মেঘনা নদীতে চলছে ছোট ছোট ট্রলারে যাত্রী পারাপার। ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলারে লক্ষীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে ভীড়ছে। অথচ মাছ ধরার কাজেই ব্যবহার করা হয় এই ট্রলারগুলো। সেই ট্রলারে বহন করা হচ্ছে যাত্রী। একেকটি ট্রলারে শতাধিক যাত্রী উঠিয়ে ঝুঁকিপূর্নভাবে পারাপার করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে অন্যদিকে সামাজিক দুরত্ব না মানায় রয়েছে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকিও বাড়ছে।

প্রতিদিন এমন চিত্র দেখা যায়, ভোলা-লক্ষীপুর রুটে। এভাবেই প্রতিদিন ২০/৩০টি ট্রলার উত্তাল মেঘনায় পাড়ি দিয়ে ভোলায় চলে আসছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা লকডাউন নিষেধ না মেনে পারাপার হচ্ছেন। আতংকিত তারাও।

যাত্রী আল আমিন, রোকসানা আক্তার ও গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রয়োজনের তাগিদে আমরা অনেক ঝুকি নিয়ে মেঘনা নদী পার হয়ে ভোলায় এসেছি। নদী এখন উত্তাল। ছোট ট্রলারে আসা-যাওয়া অনেক ঝুকিপূর্ন জেনেও বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে। কিন্তু ট্রলার মালিকরা আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।

পূর্ব ইলিশা যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, উত্তাল মেঘনায় ছোট ছোট ট্রলার চলার কারনে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। ডেঞ্জার জোনে ট্রলার চলার কারনে যে কোন সময় ঘটনতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা। তাই অতি দ্রুত এসব অবৈধ ট্রলার চলাচল বন্ধ করা উচিত। আমরা বিষয়টি প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছি।

জানা গেছে, ভোলার সাথে দেশের অন্য জেলার যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম নৌপথ হওয়ায় দক্ষিনাঞ্চলের মানুষকে নৌ পথে আসতে হয়। এবার ঈদেও বাড়ি ফিরছেন মানুষ। কিন্তু বাড়ি ফেরা মানুষকে জিম্ম করে অতিরিক্ত এবং কয়েক গুন বেশী ভাড়া নিয়ে যাত্রী বোঝাই করে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা  ট্রলার চালাচ্ছেন মালিকরা। প্রশাসনের অভিযান চললেও তাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলছে ট্রলার গুলো। ঘাট থেকে দুরে গিয়ে বাধের উপর যাত্রীদের নামানো হচ্ছে। এতে দুর্ভোগেও পড়ছেন যাত্রীরা।

এসব ট্রলারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ভোলা বিআইডব্লিটিএ সহকারি পরিচালক মো: কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ঈদে যাত্রীদের চাপ অনেক বেশী। এ সময় যাত্রীদের চাপ বেশী থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহন করছে, এসব নৌযান বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে। কোস্টগার্ড এবং পুরিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। আশা করছি, খুব দ্রুত অবৈধ এসব নৌযান চলাচল বন্ধ করতে পারবো।

এদিকে লকডাউনের মধ্যে যাত্রীরা প্রয়োজনের তাগিদে চলাচল করলেও অবৈধ ট্রলার বন্ধের দাবী ভোলাবাসীর ।

সাব্বির আলম বাবু /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »